আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

তাহিরপুরে রমরমা মাদক ব্যবসা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-২৪ ১৯:৫৮:৫৪

তাহিরপুর প্রতিনিধি :: ঈদকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তবর্তী এলাকাসহ পুরো উপজেলায় এখন মাদকের সয়লাব। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডকায় মাদক ব্যবসায়ীরা পুরো উপজেলায় রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত এক সপ্তাহে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ  ইয়াবা টেবলেট, গাঁজা, মদ সহ প্রায় ১০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে।

আটককৃত মাদক ব্যবসায়ী, সিদ্দিক মিয়া, আতাউর রহমান, সাইফুল ইসলাম, শাহ আলম, মুছা, তুফাজ্জাল, ইজাজুল সহ প্রায় ১০ জন কে মাদকদ্রব্য মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, ছোট খাট মাদক বহনকারী আটক হলেও মাদক সম্ভ্রাটরা রয়েছে আড়ালে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এ উপজেলায় স্থানীয় কিছু অসত পুলিশ, বিজিবি সদস্য কে ম্যানেজ করে মাদকের এ রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের খাচাঁয় আটক হলেও মাদক সম্ভ্রাটরা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। গাঁজা, মদের পাশাপাশি ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবীদের সংখ্যা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের নীল ছোবলে বিপথগামী হচ্ছে এ উপজেলার স্কুল - কলেজ শিক্ষার্থীসহ তরুণ যুবকরা।

ফলে এ উপজেলার সচেতন মানুষ ও শিক্ষার্থীদের অভিবাকরা উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

বুধবার তাহিরপুর সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন স্পটে ভারতীয় অফিসার চয়েস মদের খালি বোতলের স্তূপ পড়ে রয়েছে। সন্ধ্যা হলেই উঠতি বয়সের মাদকাসক্ত যুবক-কিশোরা মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটোছুটি করছে। স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি এড়াতে ইয়াবা টেবলেট ব্যবসায় কৌশলে মহিলা, শিশু কিশোরদের ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা। আবার অনেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলে মাদক সেবীদের কাছে এসব মাদকদ্রব্য সহজে বিক্রি করছে। তাহিরপুর সীমান্তবর্তী এলাকা সহ এ উপজেলার প্রায় ২০টি স্পটে অবাধে গাঁজা, মদ, ইয়াবা টেবলেট অহরহ বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন স্পটে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিয়মিত বসে গাঁজা, মদ ও ইয়াবার আসর। হঠাৎ প্রশাসন খানিকটা তৎপর হলে দু-একদিন বন্ধ রেখে আবারও তারা মেতে ওঠে অবৈধ এ মাদক ব্যবসায়।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলার তাহিরপুর সদর, আনোয়ারপুর, বাদাঘাট, লাউড়েগড়, কামড়াবন্দ, ননাই, ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রাম, বারহাল, চন্দ্র পুর, চাঁনপুর, একতা বাজার, জনতা বাজার, বড়ছড়া, টেকেরঘাট , ড্রাম্পের , বালিয়াঘাট, গোলকপুর, দুধের আউটা, শ্রীপুর , লাকমা, লালঘাট , ছাড়াগাও, জঙ্গলবাড়ী, বাগলী বাজার সহ একাধিক স্পটে নিয়মিত বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, মদ ও গাঁজা। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

মাদকাসক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছোট-বড় অপরাধ প্রবণতা। ফলে এ উপজেলায় চুরি, ডাকাতি ও তুচ্চ বিষয় নিয়ে মারামারির  ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে।

তাহিরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ নন্ধন কান্তি ধর বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে একাধিক উদ্যোগ নিয়ে বেশ কয়েকজন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাদক নির্মূলে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়তন্ত্রনে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবুল এহেসান জানান, তাহিরপুর সীমান্ত এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়তন্ত্রে বিজিবি জিরো টলারেন্স রয়েছে। মাদকের ব্যাপারে কোন আপোষ নেই। ওপার থেকে যাতে এপারে মাদকদ্রব্য প্রবেশ করতে না পারে এ ব্যাপারে বিজিবি সীমান্ত এলাকায় সর্তক্য রয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৪ মে ২০১৮/এমএআর/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন