আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সিলেটে ঈদ আনন্দ ও ফুটবল উন্মাদনা ছাপিয়ে ঘরে ঘরে হাহাকার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১৮ ০০:১৪:১৪

মারুফ খান মুন্না :: আনন্দের ধারা বইছে মুসলিম উম্মাহর মাঝে। পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম সাধনার পর দেশের মুসলিম সম্প্রদায় তাদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। ঈদের তৃতীয় দিনেও সিলেটসহ সারাদেশের মানুষ ঈদ উদযাপন করছে বিভিন্ন উপায়ে। ঈদের আমেজের সাথে বিশ্বকাপ ফুটবল যোগ করেছে বাড়তি উন্মাদনা। তবে সিলেটের ঘরে ঘরে ঈদ আনন্দ কিংবা বিশ্বকাপের উন্মাদনার চেয়ে বিষাদের করুণ সুর বাজছে বন্যার পানিতে। বানবাসী মানুষের হাহাকারে ভেসে গেছে ঈদ আনন্দ।

ঈদে অনেকেই বন্ধু-বান্ধবের সাথে ঘোরাঘুরি, পার্ক কিংবা বিনোদনমূলক স্থান ভ্রমন, আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে বেড়ানো, টিভিতে ঈদ উপলক্ষে নানা আয়োজন দেখে সময় কাটাচ্ছেন। তবে এবারের ঈদে আনন্দটা যেনো একটু বেশীই। কেননা ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত সিলেটী ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দে ভাসাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ। ঈদের দিনই আর্জেন্টিনার খেলা এবং পরের দিন ব্রাজিলের খেলা থাকায় ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় বইছে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে।

তবে, সেই উন্মাদনা বিষাদে রূপ নিয়েছে সিলেট বিভাগের ৪ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ঘর-বাড়ি ও ফসল। ফসল নষ্ট হওয়ায় খাদ্য সংকটে ভূগছেন অনেকেই।বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি ডুবে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন। গবাদিপশুর খাদ্য সংকটসহ ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা বানভাসি মানুষ। ঈদের আনন্দ যেনো তাদের হতাশায় পরিণত হয়েছে। অনেক উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়ায় ঈদের নামাজ আদায় করার জায়গাও ছিলো না। অনেকটা আটকে পড়েছেন তারা।

বন্যায় ধান, বিভিন্ন ফসলাদি, পুকুরের মাছ, থাকার ঘর-বাড়ীর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বন্যার কারণে তাঁদের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বন্যার্তরা। ঈদের এই সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় অন্যত্র যেতে দেখা যায় এইসব এলাকার মানুষদের। ঈদের আনন্দের চেয়ে তাদের জীবন রক্ষা এবং দৈনন্দিন জীবন চালানোই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। বানভাসি এসব মানুষের দুঃখ-দুর্দশা আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সিলেটের আকাশ। পানিবন্দি মানুষদের আহাজারিতে সিলেটে ঈদ আনন্দ মলিন হয়ে গেছে।

একদিকে ঈদ আনন্দ আর ফুটবল উন্মাদনা অন্যদিকে বানবাসী বন্যার্তদের হাহাকারেই সিলেটে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা যদি বন্যার্তদের পাশে এগিয়ে আসে তবেই প্রকৃত ঈদের আনন্দ পাওয়া যাবে বলে মনে করেন সিলেটের সকল শ্রেণীর নাগরিকবৃন্দ। তারা মনে করেন, শুধু বিত্তবানরাই নয় যে যার স্থান থেকে যতোটুকু সম্ভব, যেভাবে সম্ভব হয় বন্যার্তদের পাশে দাড়াতে হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ জুন ২০১৮/এমকে-এম

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন