Sylhet View 24 PRINT

বালাগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১৯ ০০:৫৪:৩১

মো. জিল্লুর রহমান জিলু, বালাগঞ্জ :: প্রবল বৃষ্টিপাত আর কুশিয়ারা নদীর উপচে পড়া পানিতে বালাগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ৪/৫দিন যাবত বালাগঞ্জ-খসরুপুর জিসি রোড (কুশিয়ারা ডাইক)’র কমপক্ষে ৬/৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকার সড়কের ওপর দিয়ে বালাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। পাশাপাশি অবিরাম বৃষ্টিপাতের প্রভাবে বালাগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানিতে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ তলিয়ে গেছে।

এছাড়াও উপজেলার বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, পূর্ব পৈলনপুর, বোয়ালজুড়, দেওয়ান বাজার, পশ্চিম গৌরীপুর এবং পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বন্যা দুর্গতদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল মিয়ার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ৪/৫দিন যাবত বালাগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর এবং বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য ইউনিয়নেও পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি স্থানে ‘কুশিয়ারা ডাইক’ সড়ক অতিক্রম করে নদীর পানি ঢুকছে। বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রাধাকোনাসহ আরও ২/৩টি এলাকায় উজানের কুশিয়ার নদীর পানি ঢুকছে। এসব স্থানের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে রাধাকোনা গ্রামে। সেখানে গত শনিবার সন্ধায় সড়কের একটি কালভার্টর পাশ দিয়ে সড়ক ঙেঙ্গে পানি ঢুকতে শুরু করে। প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসীর সক্রিয় চেষ্টা সত্ত্বেও সর্বশেষ সোমবার ভোরে কালভার্টসহ প্রায় ১০/১৫ফুট অংশ ভেঙ্গে পড়েছে। এ ভাঙ্গন দিয়ে প্রবল বেগে বালাগঞ্জে পানি ঢুকছে।

বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল মিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মুনিম, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন প্রমুখ আলাপকালে বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বালাগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হামছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালসহ বিভিন্ন বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। উপজেলা সদরের বালাগঞ্জবাজারসহ বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের বিভিন্নস্থান পানিতে ডুবে গেছে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বালাগঞ্জ-খসরুপুর জিসি রোড (কুশিয়ারা ডাইক)’র কমপক্ষে ৬/৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকার সড়কের ওপর দিয়ে বালাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এ ছাড়াও বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রাধাকোনায় কালভার্টসহ সড়ক ভেঙ্গে পানি ঢুকছে।

এদিকে বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল মিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক গতকাল সোমবার উপজেলার বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি বরাদ্ধের চাল বিতরণ করেন। এর আগে গত রোববার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবদাল মিয়া পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল হক জানিয়েছেন, বন্যার্তদের জন্য ১২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। আর বরাদ্ধ প্রদান করা হবে। উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আবদাল মিয়া আলাপকালে জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বালাগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা দিয়েছে। তিনি জানান, সরকারি বরাদ্ধের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও বন্যা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ জুন ২০১৮/জেআরজে/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.