আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

শ্রীমঙ্গলে 'ইছামতীর বাঁকে' মঞ্চায়ন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১৯ ১৬:২৩:০৯

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: নদীর নাম ইছামতী। দুই পাড়ে বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের বসবাস। নদীর বাঁকে বাঁকে কৃষান কৃষানী জেলে-জেলেনী বেদে-বেদিনী সাপুড়িয়ারা ঘুরে বেড়ায় তাদের জীবিকা নির্বাহের তাগিদে। নদীর তীরেই বক্সনগর ও দীঘির পাড় গ্রাম।

বক্সে নগরের এক তরুন যুবক দুলু নদীর পাড়ে বসে বাঁশির সুর তুলে সেই বাঁশির সুর শুনে দুলুর ভালোবাসায় পরে পার্শবর্তী দীঘির পাড়ে কলি নামের একটি মেয়ে। নদীর ঘাট থেকে পানি আনার ছলে সখিদের নিয়ে নদীর ঘাটে এসে দুলুকে বার বার দেখে যায় কলি। এক সময় তাদের মধ্যে গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের এই ভালোবাসার দৃশ্য দেখে ফেলে গ্রামের এক জন। ঘটনাটি কলির দাদীর কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কলিকে ঘরে আটকে রাখেন।

অনেকদিন দেখা সাক্ষাত হয় না তাদের রাতের পর রাত দুলুর বাঁশিতে বেজে উঠে করুন সুর। কলি বাড়িতে আটক থেকে আহত পাখির মতো ছটফট করতে থাকে। দুলুর বিরহে ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ে সে। তাদের ভালাবাসা মেনে নিতে না পেরে কলির দাদী তার ছোট বেলার বান্ধবীর নাতীর সাথে কলির বিয়ে ঠিক করে ফেলে।

কলির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের দিন সকলের চোখ ফাকি দিয়ে দুলুর হাত ধরে অজানা গন্তব্যের পথে পালিয়ে যায় কলি। চলতি পথে ক্লান্ত দেহে গাছের তলায় ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে কলি উদাও হয়ে যাওয়ায় কলির দাদী লাঠিয়ালদের পাঠায় কলিকে ফেরত আনতে। অনেক দুরে এক গাছের তলায় তাদের দেখতে পেয়ে দুলুকে আক্রমন করে। তাদের লাঠিওয়ালাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে আহত হয় এসময় বেদে বহরের লোকেরা লাঠিওয়ালাদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করে বেদে সর্দারে কাছে নিয়ে যায়। সকল কথা শুনে সর্দার তাদেরকে বাড়ি ফিরে যেতে বলে। দুল ও কলি সর্দারের কাছে মিনতী করলে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। সব কিছু ভুলে কলি ও দুলু বেদেদের সাথে জীবনকে উৎসর্গ করে। এক সময় দুলু কলি বেদে সম্প্রদায়ের সকল আচার অনুষ্ঠানে অবস্থ হয়ে উঠে। সাপ ধরা সাপের নাচ দেখানো সাপের বিষ নামানো সব শিখে ফেলে। কেটে যায় অনেক দিন।

একদিন একটি বিষাক্ত সাপ ধরতে গিয়ে সাপের ছোবলে মারা যায় কলি। বেদেরা অনেক চেষ্টা করেও কলিকে বাচাতে পারে না। কলিকে কলা গাছের ভেলায় নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কলির সব দেহ নদীর জলে ভেসে চলে যাওয়া দৃশ্য কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না দুলু বিদায় ক্ষনে দুলুর করুন বাঁশির সুরে আকাশ ভাড়ি হয়ে উঠে।

সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মহসিন অডিটোরিয়ামে কবি ও লেখক এম এ করিম এর রচনায় ও শ্রীমঙ্গল নৃত্যালয় এর পরিবেশনায় ‘ইছামতীর বাঁকে’ নৃত্যনাট্যে এমন গল্পই ফুটে উঠে। নৃত্যনাট্যটি পরিচালনা করেন দ্বীপ দত্ত আকাশ।

এর আগে নৃত্যনাট্য অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- কবি ও লেখক এম এ করিম, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিকুল চক্রবর্তী, লতিকা নৃত্যালয়ের পরিচালক শুভ দাশ, মৌলভীবাজার শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালক নাজিয়া আক্তার, নাট্য ব্যক্তিত্ব সভাপতি দেলোয়ার মামুন প্রমুখ।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ জুন ২০১৮/এসটি/এসডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন