আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

মৌলভীবাজারে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, কমছে পানি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-২০ ২১:২৯:১৮

শাকির আহমদ, কুলাউড়া প্রতিনিধি :: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু ও ধলাই নদীর বাঁধ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মৌলভীবাজার পৌরসভাসহ ৪টি উপজেলার বৃহৎ অংশ প্লাবিত হয়। মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের ২৫টি স্থান ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হয়। এতে প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।

পানিবন্দী ছিলেন ৪ উপজেলার প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ। ডুবে গেছে আউশ ধান, সবজি ক্ষেতসহ গ্রামীণ সড়ক। আকস্মিক বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন এলাকাবাসী। তলিয়ে গিয়েছিলো বাসা-বাড়ি, দোকানপাট, বিধ্বস্ত হয়েছিল সহ¯্রাধিক কাঁচা ঘর।

এদিকে শমশেরনগর-চাতলাপুর চেকপোষ্ট সড়কে মনু নদের ভাঙনে একটি ব্রিজ দেবে যাওয়ায় ভারতের সাথে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যেগে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও অনেকস্থানে ত্রাণের সংকটে রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। 

বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। নেমেছে বসত ভিটা থেকে পানি। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ী ঘরের পানি কমে যাওয়ায় তারা বাড়ীঘর মেরামত করার চেষ্টা করছেন। তবে বিধ্বস্থ বাড়ি ঘর মেরামত না করে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরতে পারছেন না অনেকেই। এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হতদরিদ্র, দিনমজুর ও প্রান্তিক কৃষকেরা যাদের রয়েছে বাঁশের বেড়ার, মাটির দেওয়াল ও টিন সেডের ঘর।

সরেজমিনে গিয়ে রাজনগর উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদী ভাঙ্গনের প্রবল স্রোতে অনেকের ঘরের কাঁচা ও টিন সেটের বেড়া ভেঙ্গে গেছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি উপজেলার কয়েকটি নিচু এলাকার বসতভিটায় এখনো পানি রয়েছে।

রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকার টিন সেটের ঘরের মালিক ফারুক মিয়া, সইফা বেগমসহ অনেকেই জানান, ভাঙ্গনের প্রবল স্রোতে আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে সবকিছু নিয়ে গেছে। এখন আমরা পথে বসেছি আমাদের ঘর মেরামত করার মত সামর্থ্য নেই। আমরা এখনও কোন সরকারি ত্রাণ পাইনি।

কাঁচা ঘরের মালিক মতিন মিয়া জানান, আমার বসতভিটা থেকে পানি নেমেছে কিন্তু কাঁচা ঘর থাকার কারণে  ঘরের বেড়া ভেঙ্গে গেছে তাই এখন নিজ ঘরে ঊঠতে পারছি না। এখন নিজেদের খাবারের চিন্তাা করব নাকি ঘর মেরামত করব সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

এদিকে মনু নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া পানি এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি ও রাজনগরের কাউয়াদিঘিতে গিয়ে পড়ায় হাওরাঞ্চলে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাওরাঞ্চলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

মৌলভীবাজার জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আশরাফ আলী বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এপর্যন্ত ১৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নগদ, ১,১৬৭ মেট্রিক টন চাল ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরো যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুদ রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের বসতভিটা মেরামতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর তাদের বসতভিটা মেরামত করা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ জুন ২০১৮/এসএ/পিডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন