আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কুলাউড়ায় ইউপি সদস্যের নির্দেশে এলজিইডি’র পাকা রাস্তা কাটার অভিযোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-২৩ ২০:৪৪:১৩

শাকির আহমদ, কুলাউড়া :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যের (মেম্বার) নির্দেশে সড়ক ও জনপদ এর নির্মিত এলজিইডি এর অধিনস্ত আলীনগর বিওপি রাস্তা (পাকা রাস্তা) কাটার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইউপি সদস্য আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (২৩ জুন) এলাকায় সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং দ্রæত এঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবী করেন। দেখা যায়, রাস্তা কাটার কারনে এই এলাকায় গাড়ি চলাচল হচ্ছেনা। স্থানীয়রা কাটা অংশের পাশ্ববর্তী অংশ দিয়ে হাটাচলা করছেন। এতে মানুষের নানাবিধ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গত ২০ জুন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী বরাবর এমন লিখিত অভিযোগ করেছেন পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শালিখা গ্রামের স্থানীয়রা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বন্যার পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অযুহাত দিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্মিত রাস্তা পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শালিখা গ্রামের নজির উদ্দিন কুনু (৫৫), তার ছেলে টিটুল মিয়া (২১), মো. জালাল মিয়া (২৬), মো. মিজান মিয়া, একই গ্রামের মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে মখলিছ মিয়া, আব্দুল জলিল মন্টু ছেলে জুবেল আহমদ (২৬), আব্দুর রহমানের ছেলে রুমান আহমদ (২৫), ফরজান আলীর ছেলে বদরুল মিয়া (২৬) কাটতে থাকেন। গত ১৬ জুন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এমন ঘটনা দেখতে পেয়ে স্থানীয় মো. তাজুল ইসলাম, বদরুল ইসলাম চৌধুরী, মো. নুর মিয়া, মো. ফুয়াদ আলম চৌধুরী, আপ্তাব আলী সরদার, আতিকুল ইসলাম আঙ্গুর, আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, মো. মৌলা মিয়া, মো. সামাদ আলম চৌধুরী, অলিদুজ্জামান চৌধুরী, শুক্কুর মিয়া, জবুর মিয়া, কামাল মিয়া, মো. শিপাউর রহমান চৌধুরী, মো. মইনুল ইসলাম এসে বাধা দেন। এতে নজির উদ্দিন গং তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী অবস্থান নেয়। এ নিয়ে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের শরনাপন্ন হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। স্থানীয়রা অভিযোগে উল্লেখ করেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস উদ্দিনের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় এবং নির্দেশে নজির উদ্দিনরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায়। পরে এলাকাবাসী আপত্তি করলে ইউপি সদস্য আব্বাস আলী ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

অভিযুক্ত স্থানীয় টিটুল মিয়া বলেন, ধলিয়া ও শালিখা দুই গ্রামে বন্যার পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এলাকার যুব সমাজ মিলে পানি নিস্কাষনের জন্য খালের মতো করে ২ থেকে ৩ ফুট রাস্তা কেটে ফেলেছি। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের অনুরোধে আমরা সেখান থেকে চলে যাই।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. ফুয়াদ আলম চৌধুরী বলেন, রাস্তা কাটার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে জালাল, টিটুলসহ অনেকেই রাস্তা কাটছিলো। আমিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আপত্তির মুখে তারা সেখান থেকে চলে যায়। এলাকাবাসী তদন্তসাপেক্ষে এই ঘটনার সুষ্টু বিচার চায়।

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লতিফ ভাই ফোন করে জানান গজভাগের ওই রাস্তায় গন্ডগোল হচ্ছে। ওইসময় অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামও আমাকে ফোন দেন। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সবাইকে সরিয়ে দেই। সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই-ভাতিজা মিলে রাস্তা কেটেছে। এখানে আমার কোন স্বার্থ নেই।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান বলেন, স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে স্থানীয়রা এই অভিযোগ করেছেন। প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট রাস্তা কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে এই রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ আছে। মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বী বলেন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জকে ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ জুন ২০১৮/এসএ/পিডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন