আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

অবৈধ সম্পদ: সিলেটের সাবেক ডিআইজিকে দুদকের নোটিশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-১১ ২০:৩৪:৪৪

সিলেট :: হিসাব বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পেয়ে আলোচিত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এবার নোটিশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েই সম্পদ বিবরণী জমা দিতে বুধবার এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

ডিআইজি মিজানের ঢাকা উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের বাসা, পুলিশ সদর দফতর ও গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের ঠিকানায় এই চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নাকেও সম্পত্তির হিসাব দাখিলের জন্য নোটিশ দিয়েছে দুদক।

মিজানুর রহমান সিলেট রেঞ্জ পুলিশের সাবেক ডিআইজি।
 
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নোটিশে ডিআইজি মিজানকে সাতদিনের মধ্যে তার নিজের ও নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে থাকা সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান রেখে আরেক নারীকে জোর করে বিয়ে ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই এক নারী সংবাদ পাঠককে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। পরে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজান পুলিশের উচ্চপদে থেকে তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে নানা উপায়ে শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ আসে দুদকে। এই অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে দায়িত্ব দেয় দুদক। এ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ৩ মে মিজানকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা।

ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার সাভারে পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটিতে তার নিজের নামে পাঁচ কাঠা জমি রয়েছে। এছাড়া পূর্বাচল নতুন শহর এলাকায় ৫ কাঠা, পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির অধীনে অ্যাডভান্স পুলিশ টাউনে সাড়ে ৭ কাঠার প্লট ছাড়াও বরিশালের মেহেদীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ৩২ শতাংশ জমিতে ২৪০০ বর্গফুটের দোতলা ভবন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে এসেছে।

অন্যদিকে ডিআইজি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নার নামে উত্তরা রেসিডেন্সিয়াল মডেল টাউনে ১৭৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট ৬৩ লাখ ৯০ টাকায় কিনেছেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে দুদক। এছাড়া মিজানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপনের নামে রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে ২৪০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

মেহেদীগঞ্জে ওষুধ ব্যবসা করে স্বপনের ৫৫ লাখ ৫১ হাজার ৮৪০ টাকা দিয়ে এ ফ্ল্যাট কিনলেও এতে তার বড় ভাই মিজানের বিনিয়োগ থাকতে পারে বলে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়।

মিজানের ভাগিনা রাজধানীর কোতোয়ালি থানার এসআই মাহামুদুল হাসানের নামে নগরীর পাইওনিয়ার রোডে ১৯১৯ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০১৬ সালে আগস্টে তিনি এসআই পদে যোগ দেওয়ার আগে ৬৬ লাখ ১৮ হাজার ৮০ টাকা দিয়ে এই ফ্ল্যাট কেনা হয় উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

দুদক বলছে, ওই ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিনিয়োগের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ জুলাই ২০১৮/ডেস্ক/আরআই-কে

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন