Sylhet View 24 PRINT

সিলেটে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সিকৃবি কৃষি প্রকৌশলীদের নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-১১ ২০:৪০:৫৭

সিকৃবি প্রতিনিধি :: দেশের জনসংখ্যার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রে যেমন চাপ বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে ফসলি চাষের জমি। কিন্তু ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যার খাদ্য নিশ্চিতকরণে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ভূমিকা অপরিসীম। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এদেশের কৃষিকে এগিয়ে নিতে সরকার ও তাঁর বিভিন্ন সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারী সংস্থাসমূহ  প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।

তারই অংশ হিসেবে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি)  কৃষি শক্তি ও যন্ত্র  বিভাগের গবেষকগণ প্রথমবারের মতো সিলেটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষি প্রযুক্তি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা  নিয়ে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তিনটি বিষয়ে  মোট ১৬ জন শিক্ষার্থী পুরো কাজ শেষ করতে সময় নেন টানা এক বছর।

কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক  ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নিজস্ব অর্থায়নে সিলেট সিটি কর্পোরেশনসহ  প্রায় ১৩টি উপজেলা ঘুরে মাঠে গিয়ে সে এলাকাগুলোর বাসিন্দা, কৃষক ও কৃষির বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। কৃষি যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করা গবেষকগণ ওই অঞ্চলগুলোতে কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার কতটা হচ্ছে সে বিষয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখেন। কৃষি কাজে ঐ এলাকাগুলোতে কৃষকগণ কতটা যন্ত্র নির্ভর,  কতগুলো মেশিন ব্যবহার করছেন, কৃষি যন্ত্র ব্যবহারে তাদের জীবন মানের কিরূপ পরিবর্তন হয়েছে এবং এসব যন্ত্র ব্যবহারে কৃষক কি কি অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন সে বিষয়ে আরোহিত ও গবেষণালব্ধ ধারণা উপস্থাপন  করেন। এছাড়াও কৃষকের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় স্বল্প মূল্যে কৃষি যন্ত্রাংশ দরিদ্র কৃষকদের হাতে কিভাবে  পৌঁছানো যায় এবং সৃষ্ট সমস্যা থেকে কিভাবে উত্তরণ সম্ভব তা তুলে ধরেন।

জৈব জ্বালানী ও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা  নিয়ে কাজ করা গবেষকগণ  তুলে ধরেন কিভাবে বিভিন্ন প্রকার পশুর বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করা যায়। এতে করে পরিবেশ যেমন দূষণমুক্ত থাকবে তেমনি নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে পুনর্ব্যবহারও হবে। সিলেটে সিটি কর্পোরেশন এর ৭-৮ টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে  প্রায় ২০-২৫ টি গরু জবাই করা হয়।  সেক্ষেত্রে কসাইখানা ও অন্যান্য পোলট্রি ফার্ম মিলিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ কেজি বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যা পরিবেশ দূষণ করে।  সেই বর্জ্য কাজে লাগিয়ে তা থেকে কিভাবে জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব তা তাদের গবেষণায় তুলে ধরেন। বর্তমান সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সর্বাধুনিক মডেল (যা উন্নত দেশ যেমন, জাপানের প্রায় অনুরূপ মডেল অনুসরণ করে) প্রণয়ন করেন। স্বল্প জমিতে অধিক ফসল ফলানো যায় তা নিয়েও গবেষণা করেছেন এই প্রকৌশলীরা। সে লক্ষ্যে তারা লালশাক এর ভার্টিক্যাল চাষ নিয়ে গবেষণা করেন। উপর্যুক্ত আলো,  বাতাস ও সেচের ব্যবহার  করা গেলে ভার্টিকাল চাষ পদ্ধতি থেকে স্বল্প জমিতে অধিক  ফসল উৎপাদন সম্ভব বলে জানান তারা।

জৈব জ্বালানী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী শহীদুল বাশার বলেন, আমাদের এই গবেষণা যে কেউ কাজে লাগিয়ে  ঘরোয়া পদ্ধতিতে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন এবং এ থেকে উৎপন্ন বর্জ্য পোল্ট্রি খাদ্য বা ফিড ও সার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।'

কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান ড. রাশেদ আল  মামুন বলেন, 'উপযুক্ত সহায়তা পেলে প্রযুক্তি নির্ভর কৃষির অগ্রগতিতে সিকৃবির কৃষি প্রকৌশলীরা ভূমিকা রাখতে সক্ষম । এতে করে সিলেট তথা বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন  সম্ভব।'

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ জুলাই ২০১৮/এসআর/পিডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.