আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

সিসিক নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে রাজনৈতিক মুখের ছড়াছড়ি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-১৮ ০০:০৯:৫২

মিসবাহ উদ্দীন আহমদ :: সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচন ঘিরে সিলেটে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। ব্যস্তসময় পার করছেন কাউন্সিলরপ্রার্থীরা। সাধারণ কাউন্সিলর পদে দেশের বড় দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও অংশগ্রহণ করছেন। সাধারণ কাউন্সিলরপদে সর্বশেষ লড়াই করছেন ১২৭ জন প্রার্থী। বিভিন্নসূত্রে জানাগেছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয়।

১ নম্বর ওয়ার্ডে অংশ নিচ্ছেন ৯ জন কাউন্সিলর। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাত্র ১ জন। তিনি হচ্ছেন সৈয়দ আনোয়ারুস সাদাত। এই ওয়ার্ডে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত প্রার্থী বেশি। এরা হচ্ছেন সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, এজহারুল হক চৌধুরী মন্টু, ইকবাল আহমদ রনি, মুফতি কমর উদ্দীন কামু, আনোয়ার হোসেন মানিক ও সলমান আহমদ চৌধুরী। অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী রয়েছেন দুই জন। তবে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও প্রচারণা রয়েছেন। এরা হচ্ছেন নিয়াজ মো. আজিজুল করিম ও মো. মুবিন আহমদ।
 
২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত রাসেল মামুন ইবনে রাজ্জাক, বিক্রম কর সম্রাট আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। আর মো. রাজিক মিয়া জামায়াত পন্থি। তবে তিনি নিজেকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী বলে দাবি করে থাকেন।

৩ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন ৬ জন। তারা হলেন- এদের মধ্যে ৩ জন আওয়ামী লীগ ও ৩ জন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। বিএনপি সমর্থক কাউন্সিলরপ্রার্থীরা হচ্ছেন ছালেহ আহমদ, রাজীব কুমার দে ও মো. শামীম আহমদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগ সমর্থক কাউন্সিলরপ্রার্থীরা হচ্ছেন এস.এম আবজাদ হোসেন, আব্দুল খালিক ও আবুল কালাম আজাদ লায়েক।

৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৬ জন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত প্রার্থীরা হচ্ছেন জাবের আহমদ চৌধুরী, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বাবু ও শেখ তোফায়েল আহমদ সেপুল। অন্যদিকে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িতরা হচ্ছেন সোহাদ রব চৌধুরী, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। সাকিল আহম্মদ স্বতন্ত্রপ্রার্থী।
 
৫ নম্বর ওয়ার্ডেও লড়ছেন ৬ প্রার্থী। স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন টানা দুইবারের কাউন্সিলর সাংবাদিক রেজওয়ান আহমদ ও সাধারণ আসনে একমাত্র নারী নিলুফা সুলতানা চৌধুরী লিপি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত দুই প্রার্থী হচ্ছেন রিমাদ আহমদ রুবেল ও আমিনুর রহমান পাপ্পু। মো. কামাল মিয়া বিএনপি ও কাজী নজমুল আহমদ জামায়াত সমর্থিতপ্রার্থী।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে শাহীন মিয়া শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সমর্থক। বাকিদের সবাই বিএনপি সমর্থিত। এরা হচ্ছেন ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও ইয়ার মোহাম্মদ এনামুল হক। ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও ইমদাদ হোসেন চৌধুরী দু’জনই নগর বিএনপির শীর্ষ নেতা।

৭ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন মাত্র দু’জন। এদের মধ্যে আফতাব হোসেন খান সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও সায়ীদ মো. আব্দুল্লাহ জামায়াত সমর্থক বলে জানাগেছে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। এরা হচ্ছেন বিদ্যুৎ দাস, জগদীশ চন্দ্র দাশ, ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াস, শাহাদত খান ও শাহেদ আহমদ। আর ফয়জুল হক জামায়াতের প্রার্থী।

৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে বিধান কাপালী ও মো. মোখলেছুর রহমান কামরান আওয়ামী লীগ নেতা। নজরুল ইসলাম বাবুল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের নেতা। মো. হাফিজুর রহমান হানুও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

১০ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জনের মধ্যে সালেহ আহমদ চৌধুরী বিএনপি নেতা। মোস্তফা কামাল ও মুজিবুর রহমানও বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তারেক উদ্দিন তাজ ও শফিকুল ইসলাম শফি দু’জনেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের আত্মীয়। তারা আওয়ামী সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তবে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্রভাবে। এরমধ্যে শফিকুল ইসলাম শফি সাংবাদিকতা পেশার সাথেও জড়িত। অন্যদিকে মো. আব্দুল হাকীম জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত।

১১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন রকিবুল ইসলাম ঝলক ও আব্দুর রকিব বাবলু আওয়ামী লীগের নেতা। শেখ মো. কবির আহমদ বিএনপি সমর্থক। মীর্জা মো. সাদ্দাম হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

১২নং ওয়ার্ডে ৬ প্রার্থীর মধ্যে সিকন্দর আলী ও সালাউদ্দিন মিয়া বিএনপি সমর্থক। পিষুষ কান্তি দে ও মো. আজহার উদ্দিন জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ সমর্থক। মো. আব্দুল কাদির জামায়াত সমর্থক। মো. রুবেল আহমদ স্বতন্ত্রপ্রার্থী।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনই আওয়ামী লীগ সমর্থক। এরা হচ্ছেন বিশ্বজিৎ দাস, শান্তুনু দত্ত সনতু, মো. এবাদ খাঁন দিনার ও সুমন আহমদ। আর বিএনপি সমর্থক একমাত্র প্রার্থী হচ্ছেন গুলজার আহমদ।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জনের মধ্যে বিএনপি সমর্থক প্রার্থী নজরুল ইসলাম মুনিম। অন্যপ্রার্থীদের সবাই স্বতন্ত্র। এরা হচ্ছেন মো. সাঈদী আহমদ, হাবিবুর রহমান মজলাই, মোস্তাফিজুর রহমান পপু ও রনজিৎ চৌধুরী।

১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন বিএনপি থেকে মুজিবুর রহমান ও আব্দুল গাফফার। আওয়ামী লীগ সমর্থক ছয়ফুল আমিন বাকের। স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ইফতেখার আহমেদ সোহেল ও শেখ মো. মফিজুর রহমান। সোহেলের পরিবারের সদস্যরা বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত।

১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ জন প্রার্থীর মধ্যে মো. তামিম আহমদ খাঁন ও শাহজাহান আহমদ স্বতন্ত্র প্রার্থী। আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থী কুমার গনেশ পাল ও সাব্বির আহমেদ চৌধুরী। বিএনপি সমর্থক প্রার্থীরা হচ্ছেন মির্জা বেলায়েত আহমদ লিটন ও তমাল রহমান। জমিয়ত-হেফাজত সমর্থিত প্রার্থী মো. একরামুল আজিজ। আব্দুল মুহিত জাবেদ জামায়াত ঘরানার প্রার্থী।

একমাত্র ব্যতিক্রম ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এখানে কোন রাজনৈতিক দল সমর্থিত প্রার্থী নেই। সাড়ে ১৩ হাজার ভোটারের ওয়ার্ডে প্রার্থী মাত্র ২ জন। দু’জনই স্বতন্ত্র। এরা হচ্ছেন মো. দিলওয়ার হোসাইন সজীব ও রাশেদ আহমদ।

১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীরা হচ্ছেন মো. নজরুল ইসলাম এহিয়া, সাজেদ আহমেদ চৌধুরী, মো. সাজুওয়ান আহমদ। বিএনপি সমর্থক প্রার্থীরা হচ্ছেন এবিএম জিল্লুর রহমান ও থেকে মো. সালমান চৌধুরী। অন্যদিকে মো. শামছুর রহমান কামাল স্বতন্ত্রপ্রার্থী।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি সমর্থক প্রার্থী একজন। তিনি হচ্ছেন দিনার খান হাসু। মো. জমসেদ সিরাজ কৃষকলীগ নেতা। আফজালুর রহমান ও এস এম শওকত আমীন তৌহিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী। আফজালুর রহমান জামায়াত ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী।

২০ নম্বর ওয়ার্ডে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. আজাদুর রহমান আজাদ।

২১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ প্রার্থীর মধ্যে গোলাম রহমান চৌধুরী ও মুহিব উস সালাম রিজভী দু’জনই স্বেচ্ছাসেবকলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। অন্যদিকে মো. আব্দুর রকিব তুহিন ও মো. সাহেদুর রহমান বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

২২ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীরা হচ্ছেন ছালেহ আহমদ সেলিম, মো. ফজলে রাব্বী চৌধুরী, মো. ইব্রাহিম খান সাদেক। সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন বিএনপি নেতা। মোহাম্মদ আবু জাফর ও মোহাম্মদ দিদার হোসেন হোসেন স্বতন্ত্র।

২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে মোস্তাক আহমদ ও ছাব্বির আহমদ। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মামুনুর রহমান মামুন ও ফারুক আহমদ।

২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি থেকে হুমায়ুন কবীর সুহিন, সোহেল আহমদ রিপন বিগত দিনে সরাসরি জামায়াতের রাজনীতি করতেন। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।

২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থী হচ্ছেন আশিক আহমদ ও তাকবির ইসলাম পিন্টু। কফিল উদ্দিন আলমগীর জামায়াত নেতা। স্বতন্ত্র মোফজ্জুল হোসেন তালুকদার।

২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক একমাত্র প্রার্থী হচ্ছেন মোহাম্মদ তৌফিক বক্স লিপন। বাকি ৪ জনই বিএনপি সমর্থক। তারা হচ্ছেন সেলিম আহমদ রনি, আব্দুল মন্নান, রেজাউল করিম, মঈন উদ্দীন।

২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীরা হচ্ছেন থেকে মো. আজম খান, চঞ্চল উদ্দিন। আব্দুল জলিল নজরুল জামায়াত নেতা। শাহ মোহাম্মদ বদরুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৮ জুলাই ২০১৮/ এমইউএ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন