আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বড়লেখায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-২২ ১৯:০২:৪৯

বড়লেখা প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গৃহবধূর নাম পারভিন বেগম (৩৫)। নিহতের পিতৃপক্ষের লোকজনের দাবি, পারভিনকে হত্যার পর স্বামীর বাড়ির লোকজন আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। অন্যদিকে স্বামীর বাড়ির লোকজনের দাবি, পারভিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের কারণে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বড়লেখা পৌরশহরের পাখিয়ালা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। 

এদিকে খবর পেয়ে দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আবু ইউছুফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  
পুলিশ, হাসপাতাল, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার গ্রামতলা এলাকার আত্তর আলীর মেয়ে পারভিন বেগমের সঙ্গে পৌরশহরের পাখিয়ালা এলাকার মুতলিব আলীর ছেলে ময়নুল ইসলামের প্রায় ৮-১০ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ময়নুল শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। পরিবারে তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রায় তিনমাস আগে ময়নুল স্ত্রী পারভিনসহ সন্তানদের নিয়ে নিজের বাড়িতে যান। বাড়িতে ময়নুলের মা-ভাই-বোন থাকলেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি আলাদা থাকতেন। শনিবার (২১ জুলাই) রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরদিন রোববার (২২ জুলাই) সকালে পারভিনের স্বামী ময়নুল তাঁর স্ত্রীর বড়বোন আছমা আক্তারকে মুঠোফোনে বলেন পারভিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আছমা দ্রæত সেখানে গিয়ে পারভিনের লাশ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্বজনরা পারভিনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসাপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহতের বোন আছমা আক্তার বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে পারভিনের স্বামী ময়নুল তাকে নির্যাতন করতেন। তাঁর কাছে যৌতুক চাইতেন। ঘটনার দিন রাতে তাকে মারধর করা হয়। সকালে ময়নুল আমার বোন পারভিনকে হত্যা করে বলেন সে (পারভিন) না-কি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। অতচ তাঁর গলায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের দাগ রয়েছে।’ 
লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘লাশের সুরতালের সময় গলায় ও বাঁম পায়ের হাটুর নিচে দাগ দেখা গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’ 
বড়লেখা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মুহাম্মদ সহিদুর রহমান বলেন, ‘পারিবারিক কলহের কারণে পারভিন আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে জানা যাবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’ 
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ জুলাই ২০১৮/এজেএল/ইআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন