সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-২০ ০০:০২:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :: আর মাত্র দুই দিন পর কোরবানির ঈদ। ঈদে কোরবানীর হাট কিংবা মার্কেটে মার্কেটে প্রচুর জনাসমাগম থাকে। তবে এবারের ঈদে সিলেটে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী তাপমাত্রা থাকায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। তবে শুধু মানুষই নয়, অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য আনা গরুগুলোও গরমে হাঁসফাঁস করছে। ঈদের দিন বৃষ্টির ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকলেও তাপমাত্রা আরো খানিকটা বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদেরা।
সিলেট আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, শনিবার সারাদেশের মধ্যে সিলেটের তাপমাত্রা ছিলো সবচেয়ে বেশী ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৫-৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশী। একইভাবে রবিবার সিলেটে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিও স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশী।
সিলেট বিভাগের আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে, দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, সিলেট নগরীর বিভিন্ন পশুর হাটে শনিবার এবং রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অসহ্য গরমে অনেক গরু হাঁফরের মতো হাঁফাচ্ছে। অনেক খামারি তাদের গরুর গায়ে পানি ঢেলে মুছে দিচ্ছে। কেউবা বরফ দিয়েও গরু গুলোকে গরম নিবারণ করার চেষ্টা করছেন। অল্প যে কজন ক্রেতা ঘুরে দেখছেন, তারাও ঘেমে একাকার হয়ে দ্রুত হাট ছেড়ে যান।
খামারিরা এ অবস্থায় গরু বিক্রি নিয়ে টেনশনে আছেন। তাছাড়া এহেন পরিস্থিতিতে অনকে গরু দু-তিন দিন সুস্থ থাকবে কি না সন্দেহ।
নগরীর পশুর হাটই শুধু নয়, বিভিন্ন কাপড়ের মার্কেটেও একই অবস্থা। মার্কেটে মার্কেটে ক্রেতা সাধারণ নেই বললেই চলে। রবিবার দুপুরে গরমে হাঁসফাঁস করতে দেখা গেছে পথচারী আর বাসযাত্রী কিংবা মার্কেট করতে আসা ক্রেতাদের। ঘামে ভেজা শরীরে শ্রমিক আর পথচারীদের পথের পাশে গাঁছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে-বসে একটু জিরিয়ে নিতে দেখা গেছে অনেক স্থানে।
এ প্রতিকূল আবহাওয়ায় সতর্কতার সঙ্গে নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গরমে রোগবালাই থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে খোলা খাবার এবং অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। ভয়াবহ এই গরমে মানুষের শরীর থেকে ঝরে পড়ছে প্রচুর ঘাম, যা কিনা স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই এ সময়ে সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে হবে। না হলে যেকোনো সময় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা জানান, অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। লবণ বা ইলেকট্রোলাইটসের অভাবও এ শূন্যতার প্রধান কারণ। এ সময়ে শরীরের কোষ সজীব রাখতে প্রচুর পানি খেতে হবে। লবণের অভাব পূরণ করতে খাবার স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি ফলের রসও খাওয়া যেতে পারে। অনেক সময় অতিরিক্ত গরমে অনেকের হিট স্ট্রোক হতে পারে। যদি কেউ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব তাকে ঠাণ্ডা জায়গায় নিতে হবে। পরনের কাপড়-চোপড় ঢিলা করে দিতে হবে, যাতে শরীরে পর্যাপ্ত বাতাস লাগতে পারে। রোগীর মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে এবং গ্লুকোজ ও খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ আগস্ট ২০১৮/পিডি/এমকে-এম