আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে অপেক্ষায় ৪৯ নেতা, চলছে লবিং

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-১৮ ০০:১৮:৫৭

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: দিন যতো ঘনিয়ে আসছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ ততোই বাড়ছে। গ্রাম-গঞ্জ, হাটবাজার থেকে শুরু করে সর্বত্র নির্বাচনী আলোচনা। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী, আর কেইবা করবেন জয়লাভ। কোন প্রার্থী কতটুকু যোগ্য তার সমালোচনাও চলছে। তবে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কে কোন দল থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন।

হবিগঞ্জের ৪টি আসন নিয়ে ধু¤্রজালের বিষয় উঠে আসছে আলোচনায়। পুরনো প্রার্থীরাই থেকে যাবেন, না-কি নতুন মুখও আসতে পারে। আর মহাজোটকেইবা কোন আসন দেয়া হবে? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ভোটারদের মনে। তবে মনোনয়ন ফরম কেনার আগে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও এখন সবাই ঘরমুখী হয়ে পড়েছেন। মাঠে প্রচারণায় তাদেরকে খুব একটা দেখা না গেলেও অপেক্ষায় দিন-রাত কাটছে তাদের। নিরব নিভৃতে চলছে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিং। মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে হবিগঞ্জ জেলায় ৪৯ জন নেতা রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৪ জন, বিএনপির ১৭ জন ও জাতীয় পার্টির ৭ জন।

দলীয় মনোনয়ন লাভের জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জোর লবিং ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। তফসিল ঘোষণার পর তারা স্ব স্ব দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন লাভের জন্য। তাঁরা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী ইতোমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি নেতাদের আস্থা অর্জনের সব রকম চেষ্টা করে চলেছেন। পিছিয়ে নেই বিএনপিও। আবার জাতীয় পার্টির মনোনয় প্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পাশা পাশি পছন্দের আসন পেতেও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন।

হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে তিন দল থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ১২ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ৬ জন, বিএনপির ৪ জন ও জাতীয় পার্টির ২ জন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন হবিগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত নারী আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আব্দুল মুকিত চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আলমগীর চৌধুরী, প্রয়াত মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর ছেলে দেওয়ান শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজী, জেলা তাঁতীলীগ সভাপতি মুদ্দত আলী।

এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন কিনেছেন- জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী নেতা শাহ মোজাম্মেল নান্টু, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ্ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন।

এছাড়া এই আসন থেকে জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন- জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহাজোটের এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু এবং জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক।

হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে তিন দল থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ১২ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ৫ জন, বিএনপির ৫ জন ও জাতীয় পার্টির ২ জন।

এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন কিনেছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান এমপি এডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহফুজা বেগম সাঈদা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুম বিল্লাহ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক নওশাদ উদ্দিন সুজন।

এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন কিনেছেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান চৌধুরী জীবন, সৌদি আরব বিএনপির সভাপতি ও প্রবাসী নেতা আহম্মদ আলী মুকিব আব্দুলল্লাহ, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদ নেতা ও সাবেক এমপি জনাব আলীর ছেলে তকদির মোহাম্মদ বেনজির, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেন।

এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন কিনেছেন- জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শংকর পাল এবং জাতীয় পার্টিতে সদ্য যোগদানকারী অ্যাডভোকেট খায়রুল আলম।

হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে তিন দল থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ৯ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪ জন, বিএনপির ৩ জন ও জাতীয় পার্টির ২ জন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী সুশান্ত দাস গুপ্ত, লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মাহফুজ ও মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী।

এ আসন থেকে বিএনপির মনেনিয়ন কিনেছেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র জিকে গউছ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ড্যাবের সভাপতি ডা. আহমদুর রহমান আবদাল ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক সেলিম।

আর জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন- জাতীয় পার্টির সহসভাপতি প্রকৌশলী এমএ মুনিম চৌধুরী বুলবুল ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক।

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে তিন দল থেকে মনোনয়ন কিনেছেন ১৬ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ৯ জন, বিএনপির ৫ জন ও জাতীয় পার্টির ২ জন।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব অর্থনীতিবিদ ড. ফরাসউদ্দিন, বর্তমান সাংসদ অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মো. মুসলিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট দেওয়ান মারুফ সিদ্দিকী, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম আকবর হোসাইন জিতু, শাহজালাল বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুনির, প্রয়াত মন্ত্রী এনামূল হক মোস্তফা শহীদের ছেলে নিজামুল হক রানা, চুনারুঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের ও প্রকৌশলী আরিফুল হাই রাজিব।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন- জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি সৈয়দ মো. ফয়সাল, তাঁর ছোট ভাই জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও মাধবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় বিএনপির নেত্রী ও সাবেক মহিলা এমপি শাম্মী আক্তার শিপা, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী।

এছাড়া, এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন কিনেছেন- জাতীয় যুবসংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন ও উপজেলা যুবসংহতির সহ-সভাপতি ফকির কাউছার।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ নভেম্বর ২০১৮/কেএস/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন