Sylhet View 24 PRINT

জগন্নাথপুরে রানীগঞ্জ কুশিয়ারা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-১৯ ১৭:১১:৫৪

সানোয়ার হাসান সুনু, জগন্নাথপুর :: সিলেটের বৃহত্তম সেতু জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ কুশিয়ারা সেতুর নির্মাণ কাজের মেয়াদ ১ বছর বাড়ানো হয়েছে। সেই সাথে বৃদ্ধি করা হয়েছে নির্মাণ ব্যয়। আরো ১৫ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। আগের ১২৬ কোটি টাকার মধ্যে ১৫ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে বর্তমানে নির্মাণ ব্যয় দাড়িয়েছে ১৪১ কোটি টাকা।

আগামীতে এ ব্যয় বাড়তে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। ব্রীজের কাজ ১ম দিকে ধীর গতিতে চললে ও বর্তমানে দ্রুত গতিতে চলছে। ব্রীজের নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও টিকাদারদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সময় বাড়নো হয়েছে ২০২০ সাল পর্যন্ত।

এই সময়ের মধ্যে ব্রীজের নির্মাণ কাজের টাইম ফ্রেম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় এমপি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রী এম.এ মান্নান এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালে উক্ত সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

গত ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর নির্মাণ কাজের শুভ উদ্ধোধন করেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান। ইতি মধ্যে সিলেট বিভাগের অত্যধুনিক বৃহত্তম এ সেতুটির ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

রবিবার সরেজমিন দেখা যায়, ৭০২ মিটার দৈর্ঘ্যর (প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার) ১০.২৫ মিটার প্রস্থ (৩৪ ফুট) সেতুটির ১৫ টি স্পেনের মধ্যে ১১টি স্পেন সম্পন্ন হয়েছে। ১৬টি ফিলারের মধ্যে ১০টি সম্পন্ন করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়াসম্পন্ন করে ১১ই আগষ্ট ২০১৬ সালে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ৩৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ১০ আগষ্ট ২০১৯ সালে। যৌথভাবে সেতুটির কাজের দ্বায়িত্ব পায় চায়নিজ কোম্পানি চায়না রয়েল ও বাংলাদেশী টিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ড্যাস ইনজিনিয়ারিং (মহি উদ্দিন বিল্ড্যার্স ইনজিনিয়ারিং লিমিডেট)।

কার্যাদেশ পাওয়ার পর সেতুটির নির্মান কাজ শুরু করেন টিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত ১৪ জানুয়ারী ২০১৭ সালে ব্রীজটি নির্মাণ কজের আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তি স্থাপন করেন সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান পরেই ব্রীজটির কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।

এ ব্যাপারে ব্রীজ সংলগ্ন গন্ধর্বপুর গ্রামের অধিবাসী জগন্নাথপুর দূর্নীতি দমন কমিশনার ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নিজাম উদ্দিন জালালী বলেন, সিলেট বিভাগের এত বড় এই স্থাপনাটি যেন প্রাক্কলন অনুযায়ী মান সম্মত সামগ্রী দিয়ে নির্মান করা হয়। এটাই আমাদের দাবী।

এ দিকে সম্পতি ব্রীজটির নির্মান কাজের সমাপ্তির মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্রীজের নির্মান কাজের সম্প্রসারিত ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। নির্মান ব্যয় বাড়ানো হয়েছে আরো ১৫ কোটি টাকা। ১২৬ কোটি টাকা থেকে ব্যয় বেড়ে বর্তমানে দাড়িয়েছে ১৪১ কোটি টাকা। আগামীতে ব্যয় বাড়বে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

এদিকে এ ব্রীজ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় এমপি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের সাথে তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন, এটি হচ্ছে সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় সেতু। অত্যধুনিক এ সেতুটি নির্মিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দীগন্তের সূচনা হবে। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার ফলেই এই অত্যধুনিক সেতু সহ আমার এলাকায় বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ব্রীজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে এলাকাবাসী কম সময়ে রাজধানী শহরে যাতায়াত করতে পারবেন। এলকায় কলখারকানা গড়ে উঠবে। বেকারত্ব দূর হবে। অর্থনৈতিক প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, আমি আশা করি টিকাদারী প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশ মেনে প্রাক্কলন অনুযায়ী উন্নতমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করে যত দ্রুত সম্ভব সেতু নির্মান করে জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে দিবেন।

সেতুটি সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে আলাপ হয় উপস্থিত সেতুটির তথ্যাবধানে থাকা সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রাক্কলন অনুযায়ী উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটির নির্মান কাজ চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বুয়েট থেকে সেতুটির ডিজাইন দিতে বিলম্ব করায় টিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে সেতুটির নির্মান কাজ ১ বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। ব্যয় বৃদ্ধি করন প্রসঙ্গে

তিনি বলেন, আগে টোলপ্লাজা ছিলনা। এখন টোলপ্লাজা নির্মান সহ সেতুর আশপাশের ভূমি অধিগ্রহনের জন্য অতিরিক্ত ১৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, জগন্নাথপুর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ তথা সুনামগঞ্জ সিলেটের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল রানীগঞ্জ কুশিয়ারা নদীতে ব্রীজ নির্মানের। অবশেষে এই দাবি বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এই ব্রীজ নির্মান করা হলে অত্র এলাকার মানুষ কম সময়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবেন। বর্তমানে যেখানে ৮-৯ ঘন্টা সময় লাগে ব্রীজটি নির্মান হলে প্রায় ১০০ কিলোমিটার রাস্তা কমে আসবে। সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘন্টায় রাজধানী শহর ঢাকায় যেতে পারবেন এ এলাকার মানুষ।

এলাকাবাসীর দাবি হচ্ছে, এ অত্যাধুনিক ব্রীজটি বৃহত্তর সিলেটের একটি বড় স্থাপনা তাই দীর্ঘস্থায়ীত্বের জন্য মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ব্রীজটির কাজ যাতে প্রাক্কলন অনুযায়ী টেকসই হয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ নভেম্বর ২০১৮/এসএইচএস/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.