আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

নারী নির্যাতন মামলায় ওসমানীনগরের ব্যবসায়ীর জেল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-২০ ২১:২১:৩৯

রনিক পাল, ওসমানীনগর প্রতিনিধি :: নারী নির্যাতন মামলায় ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের ব্যবসায়ী আমিনুজ্জামান সাকিরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সাকির ওসমানীনগর উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের হামতনপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

সোমবার সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে সাকিরকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ জজ কোর্টের বাদি পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে আমিনুজ্জামান সাকিরের সাথে জগন্নাথপুর উপজেলার দাওরাই মাঝপাড়া গ্রামের হানিফ উল্যার মেয়ে নূরজাহান আক্তার রুনার বিয়ে হয়। সাকির ও রুনা দম্পত্তির ঘরে ১১ ও ১৩ বছরের দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে রুনাকে তাড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে তার কাছে বড় অংকের যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী সাকির।

এক পর্যায়ে সাকির ২য় বিয়ে করার জন্য রুনাকে চাপ দেন। রুনা তাতে সম্মত না হওয়ায় তাকে মারপিট করে গর্ভপাত ঘটান সাকির। এসব ঘটনায় রুনা বাদি হয়ে ২০১১ সালের ১১ মে সিলেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পাবিবারিক আপোষ মিমাংসায় মামলাটি উঠিয়ে নেওয়া হয়। মামলা তুলে নেওয়ার পর শাকির গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। চলতি বছরের ১৫ আগস্ট রুনার কাছে ফের যৌতুক দাবি করা হয়। রুনা তাতে অপারগতা জানালে সাকির ও তার পরিবারের সদস্যরা রুনাকে অমানসিক নির্যাতন করেন। ওই দিন রুনার পিতার বাড়ির লোকজন ওসমানীনগর থানা পুলিশের সহায়তায় রুনাকে উদ্ধার করে পিত্রালয়ে নিয়ে যান। উল্লেখিত ঘটনায় চলতি বছরের ১৬ আগস্ট রুনা বাদি হয়ে জগন্নাথপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন কিন্তু থানা পুলিশ অভিযোগটির অগ্রগতি করেনি। এতে তিনি নিরুপায় হয়ে ২৮ আগস্ট সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং- ৩২৩/২০১৮। মামলায় রুনার স্বামী আমিনুজ্জামান সাকির, সাকিরের দ্বিতীয় ২য় স্ত্রী রিপা বেগম, সাকিরের মা লতিফা বিবি, বড় ভাই শামীম আহমদ ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী নেভি বেগমকে অভিযুক্ত করা হয়।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ১৭ অক্টোবর থানার এসআই লুৎফুর রহমান আদালতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত সাকিরসহ অভিযুক্তদের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। সোমবার তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আদালত সাকিরের জামিন না মঞ্জুর করায় তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

মামলার বাদি নূরজাহান আক্তার রুনা বলেন, যৌতুক দেয়ার জন্য আমার স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেন। দুই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করেছি। মারধর করে তিনি আমার গর্ভপাত ঘটান। তার ভাবির সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হন এবং গোপনে বিয়ে করেন তাই নিরুপায় হয়ে আমি মামলা করতে বাধ্য হই।

সিলেটভিউ/২০ নভেম্বর ২০১৮/আরপি/পিডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন