আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ওসমানীনগরে ডাকাত আতঙ্কে এলাকাবাসীর নির্ঘুম রাত!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-১৮ ০৯:২০:৩০

রনিক পাল, ওসমানীনগর প্রতিনিধি :: ওসমানীনগর উপজেলায় সম্প্রতি ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকাবাসী নির্ঘুম রাত কাটচ্ছেন। গত এক মাস যাবৎ প্রতিদিন রাতে উপজেলার কোনো না কোনো এলাকায় ডাকাত দল হানা দিচ্ছে। গ্রাম এলাকায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকাত প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। ডাকাতদের উৎপাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশী টহল জোরদার করা হলেও থামছে না ডাকাতির ঘটনা।

জানা গেছে, ডাকাতরা অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে ঘরের সামনের গেটের তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রেমুখে জিম্মি করে হাত-পা বেধে লুটপাট চালায়। ভুক্তভোগী গৃহককর্তারা জানিয়েছেন, ডাকাতিকালে ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র সাথে নিয়ে আসে।

গত ১৫ ডিসেম্বর থানা পুলিশের নির্দেশে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার প্রতিটি গ্রামের মসজিদে ঘোষণা দিয়ে রাতের বেলায় পাহারা জোরদার করার জন্য এলাকাবাসীকে আহবান জানানো হয়েছে। এতে এলাকায় সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সাথে-সাথে থানা পুলিশকে অবহিত করার কথাও  বলা হয়েছে। সংগঠিত ডাকাতির ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। পুলিশ ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান চালালেও ডাকাতদের গ্রেফতার করতে পারছে না বলে পুলিশের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ তুলেছেন।

গত ১১ ডিসেম্বর উপজেলার দশহাল গ্রামের এক বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। এসময় গ্রামবাসীর ধাওয়ায় ডাকাতরা পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এসময় এলাকার কয়েকটি মসজিদের মাইকে ডাকাত প্রবেশের বিষয়টি জানানো হয়। এতে এলাকার লোকজন সমবেত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন এবং রাত জেগে পাহারা আরও জোরদার করেন।

১০ ডিসেম্বর সোমবার দিনগত রাত প্রায় তিনটার দিকে উপজেলার তাজপুর বাজার সংলগ্ন দুলিয়ারবন্দ এলাকার সুমা ভিলা নামের একটি বাসায় মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতদের হামলায় গৃহকর্তা সুহেল মিয়া আহত হয়েছেন। তবে থানা পুলিশের দাবি- এটি ডাকাতি নয়, ভিন্ন ঘটনা হতে পারে।

৯ ডিসেম্বর রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলার ঝলক ম্যানশনের ফ্রেন্ডস মিডিয়া নামের একটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানের মালিক মুজিবুর রহমান জানান, চোরেরা সাটার ভেঙে দোকানে থাকা নগদ ২৫ হাজার টাকা ১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

৭ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে তিনটার দিকে ৮-১০ জনের মুখোশধারী একদল ডাকাত গোয়ালাবাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল মুমিনের বাসার কলাপসেবল গেইটের তালা ও দরজা ভেঙ্গে বাসায় হানা দেয়।

গত ৫ ডিসেম্বর বুধবার দিনগত গভীর রাতে উপজেলা তাজপুর ইউপির ভাড়েরা গ্রামের প্রবাসী ভুলু মিয়া ও আমিনপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আল মামুন বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে চার জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ডাকাতদের ধরতে আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া থানার প্রতিটি গ্রামে পাহারা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এখন থেকে কোনো এলাকায় ডাকাত ঢুকলে অবশ্যই পুলিশের হাতে তাদের আটক হতে হবে। তিনি ডাকাতি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি জনসাধারণকে আরও অধিক সর্তক থেকে থানা পুলিশকে সহযোগিতাসহ জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকলকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান।

সিলেটভিউ/১৮ ডিসেম্বর ২০১৮/আরপি/পিডি

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন