Sylhet View 24 PRINT

কীটনাশক ব্যবহার না করে ভাল ফলন তোলা সম্ভব

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১১ ১৬:১১:৫০

এনামুল হক এনাম, গোলাপগঞ্জ :: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাদেপাশা ইউনিয়নের ছয়ঘরি গ্রামের অধিকাংশ অধিবাসী কৃষিক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী গ্রামটির যতদূর দৃষ্টি দিবেন শুধুই ফসলের মাঠ। সবুজ আর সবুজ। সরষের হলুদ ফুল বাতাসে ঢেউ খেলে কৃষকের মনে এক অনাবিল আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে। কটলিপাড়া- বসন্তপুর রাস্তা ঘেষে সমতল ভূমিতে ফুলকপি, বাধাকপি, শালগম, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ভুট্টা, তরমুজ সহ হরেক রকম রবিশস্যের শোভা মন মুগ্ধকর। আর এসবের পরিচর্যায় পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তি তাপস দাস। শীতের ঘন কুয়াশা ভেদ করে একটা চাদর দিয়ে গাঁ মুড়িয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজারে বিক্রির জন্য তৈরী করছেন শীতের টাটকা সবজি।

গোলাপগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল বাদেপাশার ছয়ঘরি গ্রামে তাপস দাসের বাড়ি। পিতা মৃত জীতেশ দাস। তার নিজের জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি রবি মৌসুমে এসব জমিতে ফুলকপি, বাধাকপি, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ভুট্টা, তরমুজ সহ হরেক রকম রবিশস্যের চাষ করেছেন। প্রায় দুই একর জমিতে আশ্বিন/কার্তিক মাসে চাষ উপযোগী করে নিজে বীজ বপন করে চারা করেন। এরপর  সারিবদ্ধ ভাবে ফুলকপি, বাধাকপি, শালগম, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ভুট্টা, তরমুজ সহ হরেক রকম রবিশস্যের চাষ শুরু করেন। সম্পূর্ণ জৈব সার ব্যবহার করে চাষ শুরু করেন।

তাপস দাসের সাথে আলাপকালে জানান, শখের বশে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে চাষাবাদ করে এখন তিনি বিরাট লাভবান। তার মতে কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক ভাবে পোকামাকড় দমনে একটু সচেষ্ট থাকলে ভাল ফলন তোলা সম্ভব।

তাপস দাস বলেন, পরিবারের অন্যরা যেখানে চাকুরী এবং ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সেখানে বাড়িতে বসে বসে অকর্মণ্য হয়ে শুধু খাওয়া কার ভাল লাগে। তাই মনে হল একটু কাজ করি। বলতে পারেন একটু শখের বশেই কৃষি কাজে আত্ম নিয়োগ করি। কিন্তু এ শখ থেকেই এখন বিরাট লাভের মুখ দেখতে পারায়, তাকে আরও উৎসাহিত করে তুলেছে ।

আগামীতে তিনি অনাবাদি জমিতে আরো বেশী রবিশস্যের চাষ করবেন বলেও জানান। যাতে এলাকার বেকার যুবকরা তাকে এবং তার কর্ম দেখে উৎসাহিত হতে পারে। এ পর্যন্ত যে সবজি উৎপন্ন হয়েছে, তা বিক্রি করেই ভালই লাভ হয়েছে জানান। এবার ভালো ফলন পাওয়া গেলে আগামীতে আরো বেশি সবজি চাষ করবেন। তার বড় ভাই নৌবাহিনীতে থাকার সুবাদে ঢাকা যাওয়ার পথে নরসিংদীর শস্য ভান্ডার দেখে কৃষির ওপর আকৃষ্ট হন। এরপর বাড়িতে এসে শুরু করেন শস্য ক্ষেত। জেলা শহর সিলেট থেকে সংগ্রহ করেন ভাল বীজ।

তিনি বলেন, আজকাল ভালো বীজের অভাব। দেখে শুনে কিনতে হয়। নতুবা আশানুরুপ ফলন পাওয়া যাবে না। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ক্ষেতে কাজ করেন। এপর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকার মত। এবং তিনি আয় করেছেন লাখ টাকার উর্ধে। তাছাড়া আরও লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসের লোকজন তাদের এলাকায় তেমন দেখা যায়না এমন অভিযোগ রয়েছে তার। তবে এজন্য তিনি পিছিয়ে নেই। তাছাড়া আগামীতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসের সহায়তা নিবেন বলেও জানান।

বাদেপাশা ইউপি”র ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ললাই মিয়া বলেন, খরস্রোতা কুশিয়ারা প্রতিবছর বন্যায় প্লাবিত করে এ এলাকায় প্রচুর পলি বয়ে আনে। ফলে মাটির উর্বরা শক্তি বেড়ে যায়। যার ফলে এখানকার প্রায় গ্রামেরই কৃষকরা তাপস দাসের মত রবি শস্য চাষ করে লাভবান। কৃষি নির্ভর এ এলাকার মানুষ প্রতিবছর আবহমান কাল ধরে জীবন-জীবীকার পাশাপাশি কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।  


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ জানুয়ারি ২০১৯/এএইচএ/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.