আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

শাবিতে ডাইনিং পরিচালককে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১৭ ০০:১৯:১৫

শাবি প্রতিনিধি :: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের ডাইনিং পরিচালক অনিল চন্দ্র দাসকে জোরপূর্বক সরিয়ে পূর্বের পরিচালক বাসিত মিয়াকে পুর্নবহালের অভিযোগ উঠেছে হল প্রভোস্ট মো. শাহেদুল হোসেনের বিরুদ্ধে।

অনিল চন্দ্র দাসের অভিযোগ, ‘কয়েক মাস আগে হল প্রভোস্ট কর্তৃক ডাইনিং থেকে খাবারের মূল্য প্রতি ২ টাকা নেয়ার অভিযোগ করি আমি। প্রভোস্টের এই দুর্নীতি প্রকাশ করাতে আমি তার চক্ষুশূলে পরিণত হয়। গত কিছুদিন আগে ডাইনিং এর ৩টি বড় ডেকচি ও রান্না সামগ্রী হল থেকে চুরি হয়। তবে ডাইনিং এর ডেকচি ও আমার নিজের টাকায় কেনা রান্নাসামগ্রী চুরির সন্দেহভাজন হিসেবে অনেকের সাথে আমাকে ও আমার ভাতিজাকে দায়ী করে মামলা করা হয়। আমার নিজের জিনিস চুরি হয়েছে আবার আমাকেই কেন সন্দেহভাজন হিসেবে মামলায় নাম দিয়েছ তা আমি বুঝতে পারছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘হল প্রভোস্ট আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন যে আমি আর ডাইনিং চালাতে চাই না। কিন্তু আমি কাল রাত ও আজকে সকালেও ডাইনিং চালিয়েছি। দুপুরে ভাতিজাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় যাই। তাই দুপুরে ডাইনিং চালাতে পারি নি। কিন্তু আমি ডাইনিং চালানোর জন্য বিকালের দিকে হলে আসি। হল প্রভোস্ট তখন আমাকে বললেন তোমাকে আর ডাইনিং চালাতে হবে না। তিনি আমাকে সরিয়ে বাসিতকে আবার ডাইনিং এর দায়িত্বে দেন। এই বাসিত বিভিন্ন সময় আমাকে এবং আমার বাবুর্চিকে হুমকি দিয়ে বলেছিল ডাইনিং নাকি বোম মেরে উড়িয়ে দেবে।’

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে হল প্রভোস্ট মো. শাহেদুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

হলের সহকারী প্রভোস্ট জাভেদ কায়সার ইবনে রহমান জানান, আজ বিকালে হল মিটিং এ প্রভোস্ট জানান যে অনিল আর ডাইনিং চালাতে চাচ্ছে না। কিন্তু অনিলের সাথে আমরা এ বিষয়ে কথা না বলায় জানতাম না যে সে ডাইনিং চালাতে ইচ্ছুক ছিল। তবে বাসিতকে ডাইনিং এ পুর্নবহালের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

কয়েক মাস আগে ডাইনিং পরিচালক হিসেবে বাসিত মিয়া ডায়নিং চালাতে অক্ষম হওয়ায় তাকে ছাঁটাই করেছিল যে হল প্রশাসন, সেই তাকেই আবার কেন দায়িত্ব দেয়া হল সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা এই বিষয়টি সরাসরি হল প্রভোস্টকেই জিজ্ঞাসা করেন।

এ বিষয়ে শাহপরান হলের আরেকজন সহকারী প্রভোস্ট আশীষ কুমার বণিক বলেন, ‘অনিলকে ডাইনিং থেকে বের করে দেয়ার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

এদিকে হলের ডাইনিং থেকে অনিলকে ছাঁটাই করায় হতবাক হয়েছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আবাসিক ছাত্র মো. সালসাবিল বলেন, ‘কাউকে হুট করেই এভাবে ডায়নিং থেকে বিতাড়িত করাটা সুযোগ নাই বলে মনে করি। কারো সমস্যা থাকতেই পারে। এছাড়া সে ভালোই ডায়নিং চালাচ্ছিল তাকে বাদ দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নাই। আমি মনে করি এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ছাত্রদের মতামত নেয়া প্রয়োজন।’

পরিসংখ্যান বিভাগের আবসিক ছাত্র ওসমান গণি টিউশনি শেষ করে এসে ডায়নিংয়ে রাতের খাবার না পেয়ে বলেন, ‘যেভাবে শুনছি অনিল দাকে এভাবে বের করে দেয়ার কোন মানেই হয়না। আর আগের ওনাকের যদি আবার দায়িত্ব দিতে হবে তাইলে কেন তাকে তখন বাদ দেয়া হল।’

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের আবাসিক শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া বলেন, উনি ডায়নিং ভালোই চালাচ্ছিলেন এবং আগের যে কোন সময়ের তুলনায় ভালো ছিল। যতদূর শুনেছি তাকে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে হুট করেই বাদ দেয়াটা আশ্চর্যজনক! আমরা চাইবো উনি চালাতে চাইলে সুযোগ দেয়া উচিত। তাছাড়া ছাত্র সংশ্লিষ্ট এসব বিষয়ে ছাত্রদের মতামত নেয়া দরকার।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৭ জানুয়ারি ২০১৯/জেএ/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন