Sylhet View 24 PRINT

হবিগঞ্জে ফোন করার ৫ মিনিটেই বিদ্যুৎ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১৭ ১৬:২৪:০৭

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: দেশে বিদ্যুৎ প্রাপ্ত জনগোষ্ঠি ৯১ শতাংশ। আর হবিগঞ্জে বিদ্যুৎপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠির সংখ্যা ৮৯ শতাংশ। কিন্তু এখনও পল্লী বিদ্যুতের লাইন নিতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহকের নানাভাবে হয়রাণির শিকার হয়। একটি লাইন নিতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহকের ভোগান্তি দেখার যেমন কেউ ছিলো না, তেমনি আলোর পৃথিবীতে অন্ধকারের বসবাস করার কষ্টটাও কেউ বুঝেনি। তার উপর মোটা অংকের টাকাতো ঢালতেই হতো গ্রাহকদের। এমনকি ‘প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ প্রকল্পও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে কিছু সুবিধাভোগির জন্য।

অবশেষে এই প্রকল্পটির বাস্তবায় ও গ্রাহক হয়রানী কমানোর জন্য সাধারণ জনগণেল আর্শিবাদ হয়ে এসেছে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’।

ভ্যান অথবা টমটম (অটোরিক্স) দিয়ে বিদ্যুৎ ফেরি করে হবিগঞ্জের রাজপথে ঘুরছেন সবুজ পোষাক পড়া কয়েকজন লোক। তাদের কাছে বৈদ্যুতিক নানান সরঞ্জাম। কাগজপত্র রেডি করে ফোন করার ৫ মিনিটেই বিদ্যুৎ নিয়ে হাজির হন সবুজ কোকিলরা। মিটারের জামানত বাবদ সরকার নির্ধারিত ৪৫০ টাকা দিলেই সাথে সাথে দেয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে স্বপ্নের বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয় গ্রাহকের বাড়ি।

নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই বিদ্যুৎ ফেরি করে আসছে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এই পর্যন্ত কয়েক শতাধিক বাড়িতে দেয়া হয়েছে সংযোগ। হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী দিনব্যাপী ভ্যানে করে মিটার প্রত্যাশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এভাবেই দিচ্ছেন সংযোগ। তাঁদের (বিদ্যুৎ কর্মকর্তা) আন্তরিকতায় ও সেবায় মুগ্ধ সাধারণ মানুষ।

বছরের প্রথম দিন থেকে কার্যক্রম চললেও বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (অর্থ) মো. জয়নাল আবেদিন। এ সময় তিনি হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শফিউল আলম, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. মোতাহার হোসেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী মো. আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম (কারিগরী) মো. রেজাউল করিম, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (সদস্য সেবা) মোহাম্মদ শামিউল আশরাফ ও হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালনা কমিটির সচিব মো. জালাল উদ্দিন রুমি প্রমূখ।

বিদ্যুৎ পেয়ে গৃহবধূ আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সারা জীবন অন্ধকারে ছিলাম। ছেলে মেয়েরা ঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারত না। এখন বিদ্যুৎ পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি।’
তিনি বলেন- ‘বিদ্যুৎ পেতে আমাদের কোন কষ্ট করতে হয়নি। ফোন করার সাথে সাথেই অফিস থেকে লোকজন এসে বিদ্যুৎ দিয়ে গেছে।’

অন্য এক সুবিধাভোগী আবিদুল মিয়া বলেন- ‘বিদ্যুৎ পেতে একদিকে যেমন কোন কষ্ট করতে হয়নি। অন্যদিকে টাকাও খরচ হয়নি। সরকার নির্ধারিত ৪৫০ টাকা দিয়ে ঘরে বসে বিদ্যুৎ পেয়েছি।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালনা কমিটির সচিব মো. জালাল উদ্দিন রুমি বলেন- ‘একটা সময় ছিলো বিদ্যুৎ পেতে মানুষের হয়রাণির শেষ ছিলো না। কিন্তু এই ‘আলোর ফেরিওয়াল’ নিস্বঃসন্দে একটি ভালো উদ্যোগ। ফোন করার ৫ মিনিটেই বিদ্যুৎ পাওয়া অকল্পনিয় একটি বিষয়।

এ ব্যপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম (সদস্য সেবা) মোহাম্মদ শামিউল আশরাফ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এ শ্লোগানে ৫ মিনিটে ‘আলোর ফেরিওয়ালার’ মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হচ্ছে। যাদের বাড়িতে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি তাদের যদি খুঁটি লাগে তাহলে আগামী সাত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। খুঁটি দিয়েই তাদের বাড়িতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হবে।’
তিনি বলেন- ‘অনেক গ্রামে বিদ্যুৎ আছে, কিন্তু কিছু সংখ্যক বাড়িতে নেই। তারা ফোন করলেই আমরা গিয়ে বিদ্যুৎ দিয়ে আসি। গ্রাহক হয়রানি বন্ধ ও দুর্নীতিমুক্ত করতেই এ ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (অর্থ) মো. জয়নাল আবেদিন বলেন- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রæত প্রত্যেকটি এলাকায় বিদ্যুতায়ন করা হচ্ছে। আমরা আশা করি ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের কোথাও বিদ্যুবিহীন থাকবে না।’ একেবাওে প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে।’


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৭ জানুয়ারি ২০১৯/কেএস/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.