আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সিলেটের চার সীমান্ত দিয়ে ফের কয়লা আমদানি বন্ধ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১৮ ০০:৪৩:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক :: পঁচিশ দিন চালু থাকার পর ফের বন্ধ হয়ে গেছে সিলেটের চারটি সীমান্ত দিয়ে কয়লা আমদানি। ভারতের উচ্চ আদালতের নির্দেশে হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মারাত্মক ব্যবসায়ীক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। প্রায় একশত কোটি টাকার লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। এছাড়া কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

কয়লা আমদানিকারকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন খনি থেকে প্রতিদিন সিলেট বিভাগের তামাবিল, বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী সীমান্ত দিয়ে প্রায় ১০ হাজার টন কয়লা আমদানি হয়ে থাকে। মেঘালয়ের একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের মামলার প্রেক্ষিতে ভারতের উচ্চ আদালত কয়েক দফা কয়লা উত্তোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মাঝে মধ্যে সীমিত সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলে কয়লা আমদানির সুযোগ পেতেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১ জুন থেকে বন্ধ হয়ে যায় কয়লা আমদানি। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর আদালত মেঘালয়ের বিভিন্ন খনিতে উত্তোলকৃত কয়লা চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমদানির অনুমতি প্রদান করে। আদালতের অনুমতির পর বাংলাদেশের আমদানিকারকরা এলসি করে ২২ ডিসেম্বর থেকে আমদানি শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন ভারতের উচ্চ আদালত। নির্ধারিত সময়ের ১৬ দিন আগে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

সূত্র জানায়, সিলেটের চার সীমান্তে কয়লা পরিবহন এবং লোড-আনলোডের সাথে জড়িত রয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। আমদানি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় পরিবার নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের নেতারা জানান, আমদানি বন্ধ হওয়ায় শুধু দু’দেশের ব্যবসায়ীরা নয়, বাংলাদেশ সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা জানান, প্রতিদিন সিলেটর চারটি স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টন কয়লা আমদানি হতো। প্রতি টন কয়লা আমদানিতে সরকার রাজস্ব পেত প্রায় ১৬০০ টাকা। সে হিসেবে সরকার প্রতিদিন প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা জানান, মেঘালয়ের বিভিন্ন খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিবহনের (আমদানির) অনুমতি ছিল। কিন্তু গত ১৫ জানুয়ারি ভারতের উচ্চ আদালতের নির্দেশে আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় প্রায় ৮০০ আমদানিকারকের শত কোটি টাকার এলসি আটকা পড়েছে। কয়লা আমদানি করতে না পারলেও এলসি’র সুদ ব্যাংককে পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ইটভাটার মালিকের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে এখন কয়লা দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। সবমিলিয়ে মারাত্মক ব্যবসায়ীক ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

চন্দন সাহা জানান, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের আদালতে এই নিষেধাজ্ঞার উপর শুনানী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। শুনানী শেষে কয়লা আমদানির অনুমতি পাওয়া গেলে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ জানুয়ারি ২০১৯/শাদিআচৌ/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন