আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ক্যাচ মিসের মহড়া, রানপাহাড়ে চড়েও সিলেট সিক্সার্সের হার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-১৯ ১৭:৪৭:১৩

রফিকুল ইসলাম কামাল, স্টেডিয়াম থেকে :: ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। ক্রিকেটে এমন কথা উচ্চারিত হয়েছে বহুবার। বহু ম্যাচে এই আপ্তবাক্যের প্রমাণও মিলেছে। মিললো আরো একবার। বিপিএলে সিলেট পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ক্যাচ মিসের মহড়ায় হারের বৃত্তেই ঘুরপাক খেতে হচ্ছে সিলেট সিক্সার্সকে।

শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেটকে ৪ উইকেটে হারিয়ে রংপুর রাইডার্স ফিরেছে জয়ের ধারায়। সপ্তম ম্যাচে তৃতীয় জয়ে রংপুর আছে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে। সমান ম্যাচে পঞ্চম হারে সিলেট সিক্সার্সের অবস্থান ছয়ে। শুধুমাত্র খুলনা টাইটানস আছে সিলেট সিক্সার্সের পেছনে।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেট সিক্সার্স রান তুলে ১৯৪। এবারের আসরে এটাই দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। কিন্তু রানপাহাড় নিয়েও নিজেদের ভুলে হারতে হয়েছে সিলেটকে। তিনটি ক্যাচ পড়ার সাথে দুবার রানআউটের সুযোগও হারায় সিক্সার্স।

বড় লক্ষ্যের পথে ছুটতে গিয়ে শুরুতেই ফিরে যান ক্রিস গেইল। বিপিএলটা এবার চরম বাজে যাচ্ছে ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানবের। আগের চার ম্যাচে ১, ৮, ২৩ ও ৭ রান করার পর আজ কাটা পড়েছেন শূন্যতে।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রাইলি রুশোকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল সিলেট। তাসকিনের করা ওই ওভারের প্রথম বলেই রুশোর ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া বল গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি জাকির আলী। রুশোর রান তখন ছিল ১। ওই ওভারের শেষ বলে তাসকিনকে মিড উইকেট দিয়ে উড়ান রুশো।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ক্যাচ পড়লো দুবার। লামিচানের করা ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লিপে অ্যালেক্স হেলসের ক্যাচ ছাড়েন ওয়ার্নার, শেষ বলে ফের রুশোর ক্যাচ ছাড়েন কিপার। হেলস আর রুশো দুজনই তখন ১২ রানে ছিলেন। পরের ওভারেই মেহেদি হাসান রানাকে দুবার সীমানা ছাড়া, একবার গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন হেলস। এর পরের ওভারে রুশো ঝড় বইয়ে দেন তাসকিনের ওপর। চার বাউন্ডারিতে লাফিয়ে বাড়ে রংপুরের রান। ওই ওভারে রুশোকে রানআউটের সুযোগ হারায় সিক্সার্স।

সপ্তম ওভারে অলক কাপালিকে উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে লিটনের তালুবন্দি হন হেলস। ফেরার আগে ২৪ বলে দুটি করে চার-ছয়ে ৩৩ রান করেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান।

ভিলিয়ার্সকে ত্রয়োদশ ওভারে রানআউটের সুযোগ মিস করে সিক্সার্স। পরের ওভারে প্রথম ও শেষ বলে রুশো আর ভিলিয়ার্সকে ফিরিয়ে তাসকিন। তবে যাওয়ার আগে সিক্সার্সের সর্বনাশ করে যান রুশো ও ভিলিয়ার্স। রানের মধ্যে থাকা রুশো ৩৫ বলে ৯টি চার, ২টি ছয়ে করেন ৬১ রান। বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে আসা ভিলিয়ার্সের দিকে চোখ ছিল সবার। মন্দ করেননি এই দক্ষিণ আফ্রিকান, ২১ বলে ২টি করে চার-ছয়ে করে যান ৩৪ রান।

এ দুজনের বিদায়ে সিলেট সিক্সার্স শিবিরে জয়ের আশা জেগেছিল। কিন্তু নাহিদুল ইসলাম (১৯), মোহাম্মদ মিঠুন (১৪) ইনিংসকে কক্ষপথে রেখে বিদায় নেয়ার পর শেষদিকে ৬ বলে ১৮ রান তুলে রংপুরকে জয়ের সীমানা পার করান ফরহাদ রেজা। ৩ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় পায় মাশরাফির দল।

রুশো ও ভিলিয়ার্সের পর নাহিদুল ও মিঠুনকেও তুলে নিয়েছিলেন তাসকিন। ৪২ রান খরচায় তার ঝুলিতে গেছে ৪ উইকেট। মোহাম্মদ ইরফান ও অলক কাপালি পেয়েছেন একটি করে উইকে।

শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে সাব্বির ও পুরানের ব্যাটে রানপাহাড়ে চড়েছিল সিলেট সিক্সার্স।

রানের জন্য হাপিত্যেশ করছিলেন। আগের ছয় ম্যাচে করেছিলেন ৫৬ রান। এই রানখরা কাটানো সাব্বিরের জন্য বড্ড জরুরি হয়ে পড়েছিল। সাব্বির রানখরা কাটিয়ে আজ ঝড় তুলেন ব্যাটে। সাথে সঙ্গ দেন নিকোলাস পুরান। তাতেই ১৯৪ রানের পাহাড় গড়ে সিলেট সিক্সার্স।

একটি করে চার-ছয়ে ঝড় তোলার ইঙ্গিতত দিয়েও মশরাফির বলে ফিরে যান লিটন দাস (১১)। সাব্বিরের সাথে যোগ দিয়ে রানের চাকায় গতি আনেন আফিফ হোসেন। ১১ বলে ৩টি চার, একটি ছয়ে ১৯ রান করে রানআউটে কাটা পড়েন তিনিও। ডেভিড ওয়ার্নার এসে ঝড় তোলা সাব্বিরকে সঙ্গ দিতে থাকেন। এ দুজনের ৪০ বলে ৫১ রানের পার্টনারশিপ ভাঙে ওয়ার্নারের বিদায়ে। ২১ বলে ১৯ রান করে মাশরাফির বলে লং অনে হেলসের ক্যাচ হন সিলেট সিক্সার্সের অধিনায়ক।

সাব্বিরের ব্যাটে তখন ঝড় চলছেই, ৩৪ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। এই ঝড়কে আরো বাড়িয়ে দেন পুরান। ২৭ বলে অর্ধশতকের পার্টনারশিপ গড়েন এ দুজন। শেষমেশ তাদের ৩৯ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী পার্টনারশিপ শেষ হয় সাব্বিরের বিদায়ে। ৫১ বলে ৮৫ রান করা সাব্বির শফিউলের বলে ক্যাচ দেন রুশোর হাতে। তার দারুণ ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর ৬টি ছয়।

এবার বিপিএলে আগের ছয় ম্যাচে সাব্বিরের ইনিংস ছিল এরকম ৭, ০, ১২, ৬, ২০ ও ১১ রান। রানখরা কাটিয়ে অবশেষে যেন নিজেকে ফিরে পেতে শুরু করলেন সাব্বির।

নিকোলাস পুরান ছিলেন শেষপর্যন্ত। ২৭ বলে ৪টি চার আর ৩টি ছয়ে ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শেষ পাঁচ ওভারে সিলেট সিক্সার্স রান করে ৭৫। ইনিংস শেষে ৪ উইকেটে ১৯৪ রানের পাহাড়ে চড়ে তারা।

৩১ রানে ২ উইকেট নিয়ে মাশরাফিই রংপুরের সেরা বোলার। একটি উইকেট পেলেও শফিউল দেনন ৪৩ রান।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ জানুয়ারি ২০১৯/আরআই-কে

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন