Sylhet View 24 PRINT

মৌলভীবাজারে বিপাকে ফেলা সেই ‘পেইজ’ লাপাত্তা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-২৬ ১৫:১৪:২২

ওমর ফারুক নাঈম, মৌলভীবাজার :: কাউকে দেখলেন, পছন্দ হয়ে গেলো। কিন্তু বলতে সাহস পাচ্ছেন না? চিন্তা নেই আপনার সেই না বলা কথা বলার জন্য আছে ফেইসবুক পেইজ। প্রতিনিয়ত এরকম বিভিন্ন মেয়ে ও ছেলের ছবি নিয়ে কারো করা কনফেশনগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে দিচ্ছে ‘মৌলভীবাজারি ক্রাশ এন্ড কনফেশন’ নামের পেইজটি।

আর এতে করে অনিচ্ছাকৃত ছবি প্রকাশ হওয়া ওই ভোক্তভোগী পড়তেন চরম বিপাকে। অনেকেই সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্নের স্বীকার হতেন। ছবি ও ফেইসবুক আইডি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার কারণে ভার্চুয়াল দুনিয়ায়ও হয়রানী মত ঘটনা ঘটে।

বিশেষ করে এই পেজের দ্বারা ভার্চুয়াল টিজিং এর স্বীকার হতেন নারীরা।
কয়েকদিন আগে কেবি খান বিজয় নামের এক যুবক স্বোচ্ছার হন। তিনি প্রতিবাদ করে একটি আল্টিমেটাম দেন ওই পেইজের এডমিনকে। অবগত করেন সিলেটভিউর মৌলভীবাজার প্রতিবেদককে। পরে কয়েকদিনের মধ্যেই এই পেইজটি লাপাত্তা হয়ে গেছে। হয়ত অধিক অভিযোগের কারণে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ পেইকটি বন্ধ করেছে অথবা এডমিন অপ্রকাশিত করে রেখেছেন।

ওই পেইজের বিরুদ্ধে অনেক ভুক্তভোগীর অভিযোগ, যে কোন ছেলে ও মেয়ের ছবি দিয়ে এই পেজে কয়েক লাইন কনফেশন লিখে দিলে তারা সেটা ছাপিয়ে দেয়, আর এভাবে ছবি ছাপানোর ফলে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার সুযোগ থাকছেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বলেন, কিছুদিন আগে ওই পেজ থেকে আমার নাম ও ছবি সহ কনফেশন পোস্ট করা হয়। তারপর থেকেই রাস্তাঘাটে নানাভাবে উত্যক্তের স্বীকার হচ্ছি। তাছাড়া পরিবারেও আমাকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এই পেজে বিভিন্ন ছেলে-মেয়ের নামে এখন পর্যন্ত অনেক কনফেশন পোস্ট করা হয়েছে, যার সিংহভাগই স্কুল কলেজে পড়ুয়া নারী শিক্ষার্থীদের। এসব ছবি প্রকাশ করা ছাড়াও, বিভিন অরুচিকর কন্টেন্ট তৈরীরও অভিযোগ উঠেছে পেইজটির বিরুদ্ধে।

একাধিক ভুক্তভোগী ছেলে ও মেয়েরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, তাদের ছবি পোস্ট হওয়ার পর তারা নিজেদের পরিবারেও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন যা পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।

জানা যায়, এই ধরনের পেজ চালিয়ে সমাজে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা হচ্ছে, এমনিতেই আমাদের সমাজে মেয়েরা নিরাপত্তা নিয়ে সবসময় একটা চিন্তার মধ্যে থাকে। তার মধ্যে এভাবে যদি মেয়েদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় তাহলে সেটা তাদের নিরাপত্তার জন্য একটা বিরাট হুমকি। এই সকল পেইজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থারও বিধান রয়েছে।

‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০১৫’এর ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া তাহার ব্যক্তিগত ছবি তোলে, প্রকাশ করে বা প্রেরণ করে। তাহা হইলে এমন কার্য ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে অপরাধ হইবে। এ ক্ষেত্রে ১০ বছরের সাজার কথাও অইনে উল্লেখ আছে।

এ ব্যাপারে অনলাইন আ্যকটিভিস্ট কেবি খান বিজয় বলেন, তাদের এ সকল বেপরোয়া কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই পেইজের এডমিন কে একাধিকবার ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি জবাবে বারবরই উল্টো উত্তর দেন।

ফেসবুক ঘেঁটে দেখা যায়, এই পেজ’র এরুপ কর্মকান্ডে ক্ষুদ্ধ মানুষ বিরক্তি প্রকাশ করছেন এবং অনেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন। এমনকি সিটিটিস সাইবার অপরাধ দমন বিভাগকেও অবগত করেন এক সাংবাদিক। সর্বশেষ এ বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি পোস্ট দিলে পেজটি আর সামাজিক মাধ্যমে প্রদর্শিত হচ্ছে না। তবে এরকম আরোও কিছু পেইজ রয়েছে এগুলো বন্ধের দাবি জানান সচেতন নাগরিকরা।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৬ জুন ২০১৯/ওএফএন/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.