Sylhet View 24 PRINT

র‌্যাবের খাঁচায় বন্দি পপি গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী জাহাঙ্গীর

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১০-১৯ ০১:০৩:১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, বিশ্বনাথ :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামে গণধর্ষনের শিকার হওয়া বিশ্বনাথের পপির হত-দরিদ্র পিতা শুকুর আলীর দায়ের করা মামলার প্রধান আসামী জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)’কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। র‌্যাপিড এ‌্যাকশন ব‌্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৯’র এএসপি সত্যজিৎ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানীনগর উপজেলার লামাপাড়া এলাকা থেকে তাকে গোপন সংবাদেরর ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামের আজিজুল হকের পুত্র। গ্রেপ্তারের পর জাহাঙ্গীরকে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব। শুক্রবার দুপুরে জাহাঙ্গীরকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পূর্বে ১৪ অক্টোবর গভীর রাতে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামের মৃত আবদুল মন্নানের পুত্র ফয়জুল ইসলাম (২৮)’কে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ও ১৫ অক্টোবর রাতে একই গ্রামের মৃত মতছির আলীর পুত্র জাহেদ হোসেন (২২)’কে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে। ৪ এজাহার নামীর আসামীর মধ্যে ৩ জন আইন-শৃংখলা বাহিনীর খাঁচায় বন্দি হয়েছে। আর পলাতক রয়েছে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামের আবদুল মনাফের পুত্র বারিক মিয়া (৩৭)।

উল্লেখ্য, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী (চেরাগী) গ্রামে বড় বোনের শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া বিশ্বনাথ উপজেলার লালটেক গ্রামের হত-দরিদ্র শুকুর আলীর মেয়ে পপি বেগম (২১) গত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে গণধর্ষণের শিকার হয়। ওই রাতে প্রকৃতিরর ডাকে সারা দিতে ঘর থেকে বাইরে বেরর হওয়ার পর সেখানে উৎপেতে থাকা দুই ব্যক্তি পপিকে জোরপূর্বক অন্যত্র উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর পপির মুখ, হাত ও পা বেঁধে মারধর করে রাতভর পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ভোররাতে পুনঃরায় তাকে পপিকে তার বোনের বাড়িতে ফেলে রেখে যায় ওই দুই ব্যক্তি। তবে ওই দুই জনকে পপি চিনতে পারে। ১০ অক্টোবর পপি নিজ বাড়িতে ফিরে এসে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার ফলে লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে ওই দুপুর বেলা আত্মহত্যা করে সে। ওই দিন বিকেলে নিজ বসতঘর থেকে পপির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু গণধর্ষণের ব্যাপারে নিজ মুখে কাউকে কিছু বরেনি। তবে কৌশলে নিজের ভ্যানেটি ব্যাগে একটি সুইসাইড নোট বা চিরকুট। আর তাতে লেখা রয়েছে আত্মহত্যার আসল কারণ ও এর সাথে জড়িত ২ জনের নাম।

ময়না তদন্ত শেষে ১১ অক্টোবর শুক্রবার দাফন করা হয় পপির মরহেদ। লাশ দাফনের ২দিন পর (১৩ অক্টোবর) মেয়ের রেখে যাওয়া স্মৃতি চিহ্ন থেকে মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে পপির ভ্যানেটি ব্যাগে তার মা জোসনা বেগম মেয়ের চিরকুট বা সুইসাইড নোটটি পান। আর এই চিরকুট থেকেই বেরিয়ে আসে পপির আত্মহত্যার আসল রহস্য। চিরকুট পাওয়ার পর পপির বড় বোনের স্বামী ফয়জুল ইসলামসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরোও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন তার হতভাগা পিতা শুকুর আলী। মামলা নং ৫ (তাং ১৪.১০.১৯ইং)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিশ্বনাথ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, গ্রেপ্তারের জাহাঙ্গীরকে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড আহদন করা হয়। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মামলার অপর আসামীকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৯ অক্টোবর ২০১৯/পিবিএ/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.