Sylhet View 24 PRINT

গোয়াইনঘাটে বানের জলে ভেসে গেল মাছচাষীদের স্বপ্ন!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-২৭ ১৯:৩৪:৩১

এম এ মতিন, গোয়াইনঘাট :: টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা জলস্রোতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাটের কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, আকস্মিক বন্যায় মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা। ফলে মাছচাষীদের এখন মাথায় হাত।

জানা গেছে, বন্যায় মাছ বের হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন অনেক পুকুরের মালিক। গোয়াইনঘাট উপজেলায় সিংহভাগ মাছ চাষ হয় উপজেলার নন্দীরগাওঁ, তোয়াকুল, রুস্তুমপুর, পশ্চিম জাফলং, লেঙ্গুড়া,পূর্ব জাফলং, আলীরগাওঁ, ডৌবাড়ী ও ফতেহপুর ইউনিয়নের কিছু অংশে। ওই এলাকায় ছোট-বড় ৪৬১টি পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ হয়। উপজেলার চাহিদা পূরণ করে এসব মাছ জেলার বিভিন্ন জায়গায়ও বিক্রি হয়। পাহাড়ি ঢল, অতিবৃষ্টি ও বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় প্রতিটি পুকুর এখন প্রায় মাছশূন্য।

পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মিতালি ফিসারী এন্ড এগ্রোফার্মের মালিক ও তোয়াকুল কলেজের অধ্যক্ষ লোকমান শিকদার চারটি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। এবারের বন্যায় তার পুকুর থেকে মাছ ভেসে গেছে। এতে তার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ টাকা হবে বলে জানান তিনি।

পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের মাছ চাষী আরশ আলী কালা মিয়া। তিনি ২০টি পুকুরের প্রায় ৬০০ বিঘা জমিতে মাছ চাষ করেন। মাছের ওজন প্রায় ৪-৫ কেজি ছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মাছ বিক্রি করেননি। কিন্তু বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন আরশ আলী কালা মিয়া।

নন্দীরগাওঁ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মোশাহিদ আলী, নুরুল ইসলাম ও ইমাম উদ্দিন স্থানীয় একজনের কাছ থেকে বাৎসরিক দুই লাখ টাকা দিয়ে চারটি পুকুর ভাড়া নিয়ে মাছ চাষ করেছিলেন। মাছ চাষ বাবদ এ পর্যন্ত তারা প্রায় পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বন্যার পানিতে তাদের পুকুরগুলোর সব মাছ ভেসে গেছে। এখন সব পুকুর প্রায় মাছশূন্য।

এছাড়া তোয়াকুল ইউনিয়নের বৌলগামের ফয়েজ উদ্দিনসহ এলাকার জাহিদুল, কালাচান, খোরশেদ, রফিকুল, মোস্তফা, মাহি বেগম, হুনুফাসহ প্রায় দুই শতাধিক মাছচাষীদের চোখে-মুখে এখন শুধুই হতাশা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহিমুল আরেফিন বলেন, এবারের বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রায় ৪৬১টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ হবে ১১ কোটি টাকার বেশি।

তিনি জানান, বন্যায় পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ও স্রোতের তোড়ে অনেক পুকুরের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। অবকাঠামো ও পুকুর থেকে মাছের ভেসে যাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৭ মে ২০২০/এমএএম/আরআই-কে

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.