Sylhet View 24 PRINT

কোম্পানীগঞ্জে নববধূর উপর এ কেমন বর্বরতা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৮-০৭ ২০:০৪:২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিয়ের নয় মাস না পেরিয়ে যেতেই গত ৩০ জুলাই সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জামাই, শ্বাশুড়ি ও দেবরদের হামলায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন জাহানারা বেগম (১৯) নামের এ গৃহবধূ। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের মৃত শফিক মিয়ার মেয়ে। বিয়ের পর থেকে নানা অপবাদ দিয়ে জামাই, শ্বাশুড়ি ও দেবর মিলে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করে জাহানারা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানাযায়, গত নয় মাস পূর্বে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রনীখাই ইউনিয়নের গৌরিনগর গ্রামের মৃত মনাই মিয়ার প্রবাসী ছেলে সোহেল আহমদ (২৬)এর সাথে পার্শ্ববর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের হত-দরিদ্র পরিবারের মৃত শফিক মিয়ার মেয়ে জাহানারা বেগম (১৯) সাথে সামাজিক ভাবে বিবাহ হয়।

বিয়ের সময় জাহানারার গ্রামবাসী এবং আত্মীয় স্বজনেরা মিলে চাঁদা তুলে যৌতুক হিসেবে জাহানারার জন্য দুই ভরি স্বর্ণালংকার এবং সোহেলের ঘরের ফার্ণিচারের জন্য ৮০ হাজার টাকা নগদ দেন। এছাড়াও জাহানারার শ্বশুর বাড়ীর লোকদের জন্য গত ঈদুল ফিতরে ২০ হাজার টাকার কাপড় ধারদেনা করে মেয়ের সুখের আশায় কিনে দেন জাহানারার মা। কিন্তু তার পরেও জাহানারা বেগমের কপালে সুখ দেখা দেয়নি। সামান্য একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে জাহানারার উপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।

জাহানারার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাহানারার স্বামী সোহেল স্ত্রীর কাছে এক কাপ চা দিতে বলেন। এসময় জাহানারা তার স্বামীকে বলেন, ঘরে চিনি নেই। ঘরে চিনি নেই বলতেই তর্কে জড়িয়ে পড়েন জাহানারার/শাশুড়ি ও দেবরেরা। এতেই ঘটে বিপত্তি হঠাৎ করে তার স্বামী সোহেল লম্বা একটি দা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন। এসময় তার শ্বশুর/শাশুড়ি ও দেবরেরা সকলেই জাহানারার হাত-পা বেঁধে খেন। পরিবারের অন্যদের উস্কানিতে সোহেল জাহানারারকে উপর্যুপরি কোপাতে কোপাতে গুরুতর রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় গ্রামবাসী জাহানারাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। গুরুতর আহত জাহানারার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের অভিযোগ বিয়ের কয়েক দিন না যেতেই জামাই, শ্বাশুড়ি ও দেবর মিলে জাহানারা বেগমের উপর মানসিক নির্যাতন করতে থাকে এবং জাহানারা গরীব ঘরের মেয়ে বলে জামাই এবং তার শ্বাশুড়ি বিভিন্ন উছিলা দিয়ে তাকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে।

গুরুতর আহত জাহানারা বেগমের মা  জানান, ৩০ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ঘটনার দিন সকাল অনুমান এগারটার দিকে জাহানারা বেগমের জামাইর বাড়ি এলাকার ৩/৪জন লোক মোবাইল ফোনে জানায় তাদের মেয়ে জাহানারাকে জামাই, শাশুড়ী ও দেবর মিলে দা দিয়ে ১৫/২০ টি কুপ দিয়েছে। তা শুনে আমরা কয়েকজন জরুরি ভাবে জাহানারার স্বামীর বাড়িতে যাই। তাদের বাড়িতে যাওয়ার পর জাহানারা কোথায় আছে কেউ বলেনি। অবশেষে আমাদের চিৎকারে জাহানারা বেগমের শ্বাশুড়ী জানায় সে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

জাহানারা বেগমের মায়ের অভিযোগ, আমার মেয়েকে তারা হত্যা করার জন্য হামলা করে। আমি গরীব মানুষ বলে জাহানারাকে তারা তাড়িয়ে দিতে না পেরে হত্যার পরিকল্পনা করে।

জাহানারা বেগমের ভাসুর শফিক মিয়া বলেন, আসলে ঘটনা দেখে আমরাই হতবাক। সোহেল আমার ছোটভাই জানিয়ে তিনি বলেন, হঠাৎ সে এরকম ঘটনা করবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। জাহানারাকে আমরা সবাই ছোট বোনের মত স্নেহ করি। ঘটনার সাথে সাথে জাহানারাকে আমরা ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসা শেষে জাহানারাকে তার পিতার বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্ট চলছে।

এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জানান এ বিষয়ে থানায় লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/ ৭ আগস্ট ২০২০/ এমএএম/পিটি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.