আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ছাত্রলীগকর্মী লিটু হত্যা: নিরব পাভেল গ্রুপ, গাঁ ঢাকা দিয়েছেন অনেকেই

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৭-১৮ ১৫:৫৩:৪৭

সুফিয়ান আহমদ, বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি :: বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের পাভেল গ্রুপের কর্মী খালেদ আহমদ লিটু সোমবার দুপুরে বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়। লিটু খুন হওয়ার পর থেকেই নিরব রয়েছে গ্রুপটি। এমনকি ঘটনার একদিন অতিবাহিত হলেও  গ্রুপটি কোন প্রতিবাদই করেনি। বরং জেলা ছাত্রলীগের এক শীর্ষনেতার আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় তদবির করে নিহত লিটুকে সন্ত্রাসী ও বখাটে বানিয়ে নিজেরা বাঁচার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্থসূত্রে জানা গেছে।

তাছাড়া ঘটনার পর থেকেই গাঁ ঢাকা দিয়েছেন গ্রুপের অনেক নেতাকর্মী। গ্রুপের নেতা পাভেল মাহমুদসহ বন্ধ রয়েছে অনেকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও। লিটু খুনের বিষয়ে জানতে পাভেল মাহমুদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন প্রথমে ওয়েটিং ও পরে বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে, নিহত ছাত্রলীগ কর্মী খালেদ আহমদ লিটু নিহতের ঘটনায় তার বাবা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে পাভেল গ্রুপের নেতা পুলিশের হাতে আটক ফাহাদ (২৫), কামরান (২৬), এমদাদ (২৫), দেলোয়ার হোসেন মিষ্টু (২৭), কে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ছাড়াও এজাহার নামীয় আসামী করা  হয়েছে একই গ্রুপের কাওছার আহমদ (২৬), জুয়েল আহমদ শিপু (২৪) ও সাহেদ আহমদকে (২৭)। লিটু হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে জানিয়ে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান,  এজাহারনামীয় ৪ আসামীকে ইতোমধ্যে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
 
বাকীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এঘটনায় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ফাঁকা শ্রেণী কক্ষে নিজ গ্রুপের নেতাকর্মীদের পাশেই আকস্মিক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নির্মমভাবে নিহত হন উপজেলা ছাত্রলীগের পাভেল গ্রুপের কর্মী, পৌরশহরের খাসা পন্ডিতপাড়ার খলিলুর রহমানের একমাত্র পুত্র লিটু আহমদ(২৬)।
 
নিহত লিটু বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের ছাত্র না হলেও ছাত্রলীগের পাভেল গ্রুপের কর্মী হওয়ায় প্রায় সময় কলেজে তাদের অবস্থানে যেত। সোমবারও একইভাবে কলেজ ক্যাম্পাসের অর্থনীতি বিভাগের সম্মুখে গ্রুপের নেতাকর্মীদের কাছে গিয়ে অবস্থান করে।

এসময় অর্থনীতি বিভাগের একটি কক্ষ খালি থাকায় সেখানে তার গ্রুপের নেতাকর্মীদের সাথে সেও গল্পগুজব করছিলো। হঠাৎ বন্দুকের গুলিতে তাঁর মাথা ঝাঝড়া হয়ে যায় এবং প্রচন্ড রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। গুলির শব্দ শুনে কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা গিয়ে দেখেন মেঝেতে রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। এরপর নিহতের লাশ উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

লাশ ময়নাতদন্ত শেষে রাত ১০টায় পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একই গ্রুপের ৩ জনকে আটক করেছে। রাতে আরেকজনকে আটক করে এবং ঘটনার সময় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধার করে। আটককৃতদের নিহতের বাবার দায়েরকৃত মামলায় আসামী দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের আটকে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ ১৮ জুলাই ২০১৭/ এসএ/ এমইউএ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন