আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-২৭ ০০:১১:৫৪

যে বাড়িতে শৌচাগার নেই, সে বাড়িতে বিয়েও নয়। আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন কনে সামসাল বেগম। মেয়ের কথামতো বাড়ির লোকজনও ঘটককে অনুরোধ করেছিলেন পাত্র দেখার সঙ্গে সঙ্গে সে বাড়িতে শৌচাগার আছে কিনা খোঁজ নেওয়ার। ঘটক কথা রেখেছেন। বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার পর ছাপানো হবে কার্ড। সেই সময় সামসাল বেগম আবদার করে বসেন, বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি থাকতে হবে।

বাড়ির লোকজন আপত্তি জানালেও সামসাল তাদের বোঝান, শৌচাগার না থাকাটা মেয়েদের কাছে খুবই অসম্মানের ব্যাপার। এই কার্ডটা যাদের বাড়ি যাবে তারাও এ ব্যাপারে সচেতন হবেন। শেষ পর্যন্ত বিয়ের কার্ডে ছাপা হলো শৌচাগারের ছবি। তার ওপরে লেখা হলো ‘ইজ্জত ঘর’। পশ্চিমবঙ্গের বড়ঞার একঘড়িয়া গ্রামের এ ঘটনায় তোলপাড় পুরো রাজ্যজুড়ে।

সামসাল বলেন, ‘বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবির ওপরে ইজ্জত ঘর কথাটা লিখতে বলেছি। যাতে বোঝা যায়, শৌচাগার না থাকাটা কতটা অসম্মানের।’ ২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন পিতৃহীন সামসাল। গরু পুষে কোনোমতে সংসার চালান মা। অভাবের সংসারে সামসালের আর কলেজে যাওয়া হয়নি। তবে শৌচাগারের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি জেনেছেন খবরের কাগজে। নিজে সচেতন হয়েছেন, গ্রামের লোকদেরও শৌচাগার স্থাপনের পরামর্শ দিতেন।

পাশের গ্রাম পাঠানপাড়ার পাত্র তাউসেফ রেজা আহমেদ হবু স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ৩০ আগস্ট তাদের বিয়ে। মুচকি হেসে তিনি বলেন, ‘ভাগ্যিস, আমার বাড়িতে শৌচাগার আছে!’

মুর্শিদাবাদের জেলা প্রশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, ‘ওই তরুণী দীর্ঘদিন থেকেই এলাকার লোকজনকে শৌচাগারের বিষয়ে সচেতন করেন। তবে নিজের বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রেও শৌচাগারের ছবি ছাপিয়ে যেভাবে লোকজনকে সচেতন করছেন তা এই জেলায় একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।’

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন