আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ধরণীকে বাঁচানোর জন্য নদীকে বাঁচাতে হবে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-০৫ ২১:৪৭:১৭

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: ‌'নদী বাঁচলে জীবন বাঁচবে। জীবন বাঁচলে এ ধরণী বাঁচবে। তাই আমাদের ধরণীকে বাঁচানোর জন্য নদীকে বাঁচাতে হবে।'

শুক্রবার হবিগঞ্জ শহরের শ্যামলী এলাকায় ‘আমার নদী আমার জীবন’ শীর্ষক এক সভায় বক্তারা এসব কথা জানান।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখা এবং খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার-এর যৌথ উদ্যোগে নদী বিষয়ক আলোচনা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

হবিগঞ্জ বাপার সহ-সভাপতি কবি তাহমিনা বেগম গিনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ধারনা বক্তব্য রাখেন বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন- সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র আজীবন সদস্য ড. জহিরুল হক শাকিল।

সভায় বক্তব্য রাখেন ডা. এস এস আল-আমিন সুমন, শবনম আফরোজ ডেইজি, আমিনুল ইসলাম, আফসানা জাহান, ওসমান গণি রুমি, আবিদুর রহমান রাকিব , সাইফুল ইসলাম, তাসকিয়া তাবাসসুম বৃষ্টি প্রমুখ।

সভায় বাপা হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, কয়েক বছর ধরে হবিগঞ্জের বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প কারখানা। বিগত বছরগুলোতে এই শিল্পায়ন পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটিয়ে আসছে। যত্রতত্র কৃষিজমি, খাল, ছড়া এবং নদীসহ সকল প্রকার জীবন ও জীবিকা শিল্পদূষণের শিকার হয়েছে।

খোয়াই নদী ড্রেজিং না হওয়াতে নদীর তলায় পলি ও বালি জমে জমে স্থানে স্থানে চড়া পড়েছে। নদীর তলদেশ প্রায় ১২-১৬ ফুট উঁচু হয়ে উঠেছে। এতে নদীতে ঘিরে থাকা শহর হয়েছে হুমকির সস্মুখীন আর নদীর অপর পারের গ্রাম ও ফসলি জমিকে সহ্য করতে হচ্ছে ভাঙ্গনের আঘাত। দেখা যায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অথবা অন্য সময়েও পাহাড়ি ঢলে খোয়াই ফুলে ফেঁপে উঠলে হবিগঞ্জের উজানে  অথবা ভাটিতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। আর ভাঙ্গন মানেই হাজার হাজার একর জমির ফসল হানি আর হাজারও মানুষের দুর্ভোগ।

এছাড়াও খোয়াই নদী থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। নদীর বিভিন্ন স্থানে অর্থলোলুপরা প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম বহির্ভুতভাবে বালু উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলনকারীরা তলদেশের পরিবর্তে দুপাশের বাঁধের গোড়া থেকে বালু-মাটি তোলার ফলে বিভিন্ন স্থানে এর গতিপথ সরু হয়ে নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে।

প্রধান আলোচক সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র আজীবন সদস্য ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, যুগ যুগ ধরে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনাহীনতা ও জনসাধারণের অসচেতনতার কারণে নদীগুলোর নাব্যতা কমে গেছে। নদীগুলো দূষণের শিকার হয়ে হবিগঞ্জের পরিবেশ ও নদীনির্ভর জীবনযাত্রাকে বিপন্ন করে তুলেছে। এতে নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা জীবন জীবিকা হুমকির সম্মুখীন। তাই আমাদের এ পৃথিবীকে বাচাতে হলে নদীগুলো বাচাতে হবে।

সিলেটভিউ/৫ অক্টোবর ২০১৮/কেএস/পিডি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন