আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হবিগঞ্জে চুরি-ডাকাতি আতঙ্ক!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-০৯ ১০:২৩:১০

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ :: চুরি-ডাকাতি যেন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে হবিগঞ্জে। প্রতিদিনই শহরের কোনো না কোনো বাসা-বাড়ি কিংবা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে এ চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। শুধু শহরেই নয়, শহরের বাহিরেও প্রতিদিনই ঘটছে এমন ঘটনা। তবে চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ি করছেন সচেতন মহল।

সোমবার ভোররাতে হবিগঞ্জ শহরতলীর জালালাবাদ নোয়াগাঁও এলাকায় দুটি বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা দুটি বাসা থেকে কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোররাতে ওই এলাকার ব্যবসায়ি টেনু মিয়ার বাসায় গ্রীল কেটে ১৫/২০ জনের একদল মুখোশধারী ডাকাত ভেতরে প্রবেশ করে। পরে বাসার সবাইকে অস্ত্রের মুখো জিম্মি করে লুটপাট চালায়। ডাকাতরা বাসায় থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনসহ প্রয়োজনিয় মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

পরে তারা টেনু মিয়ার প্রতিবেশি প্রবাসী মোফাজ্জল হক রনির বাসায় হানা দেয়। সেখানেও তারা বাসার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেধে চালায় লুটপাট।

খবর পেয়ে সকালে ব্যবসায়ি নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসনকে আরও সোচ্ছার হওয়ার আহব্বান জানান। অন্যতায় ব্যবসায়ি নেতারা দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলার হুশিয়ারি প্রদান করেন।

এর আগেও গত ২৭ সেপ্টেম্বর শহরের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকার দুই ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানগুলো থেকে নগদ টাকা ও বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক তার নিয়ে যায় চোর। চুরি যাওয়া দোকানগুলো হচ্ছে পাওয়ার পয়েন্ট ইলেক্ট্রনিক ও পদ্মা ইলেক্ট্রনিক।

সম্প্রতি চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক ব্যবসায়িরা বাসায় না গিয়ে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই রাত্রী যাপন করছেন। তবে চুরি ডাকাতি বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনকেই দায়ি করলেন ব্যবসায়ি ও ব্যবসায়ি নেতারা। তাদের দাবি পুলিশি টহল জোরধারসহ চুর-ডাকাতদের বিরুদ্ধে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণেই চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ ব্যাপারে শহরের চৌধুরী বাজারের ব্যবসায়ি মো. আব্দুল মজিদ বলেন- ‘চুরি-ডাকাতি এখন নিত্যদিনের ব্যপার হয়ে দাড়িয়েছে। প্রত্যেকটি রাত আমাদের আতঙ্গের মধ্যে কাটছে। সেই সাথে ডাকাতদের হামলায় আহত হওয়ার খবর আমাদের দুশ্চিন্তাকে আরও গভির করে তুলেছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ি বলেন- ‘শহরে কিছু চিহ্নিত চোর-ডাকাত আছে। তাদেরকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই মূলত বিষয়টি সমাধান করা হবে। এছাড়া এলাকার জুয়ারিরাও এর সাথে জড়িত রয়েছে। তাই তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। কিন্তু পুলিশ বিষয়টি নিয়ে জোরালোভাবে কোন কাজ করছে না।’

ঘাটিয়া এলাকার বাসিন্দা রঞ্জন দাস বলেন- ‘চুরি ডাকাতির ঘটনা শুনলেই কেমন যেন ভয় লাগে। এই চুরি ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশকে আরও জোরালোভাবে কাজ করতে হবে।’

হবিগঞ্জ ব্যাবসায়ি কল্যাণ সমিতির (ব্যাকস) সভাপতি শামছুল হুদা জানান, ‘চুরি ডাকাতি নিয়ে আমরা আতঙ্খিত। নোয়াগাঁও পয়েন্টে আজ বিকালে তিন গ্রামের লোকজনকে নিয়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু এসপি সাহেব মাধবপুর থাকার কারণে তা বাতিল করা হয়েছে। তিনি হবিগঞ্জ আসলে উনার সাথে কথা বলে আমরা আমাদের কর্মসুচি গ্রহণ করব।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এছাড়া বিষয়টি তদন্ত করে দেখা চচ্ছে।

সম্প্রতি হবিগঞ্জ শহরের চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন- ‘কেন চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৯ অক্টোবর ২০১৮/কেএস/ডিজেএস

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন