Sylhet View 24 PRINT

হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ, সরকারিভাবে দিবসটি পালন ও মুক্তিযোদ্ধাদের পূণর্বাসন দাবি

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-০৬ ০১:৩৪:৩০

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: আজ ৬ ডিসেম্বর; হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনেই হবিগঞ্জবাসী হানাদারমুক্ত হয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাসের অবরুদ্ধ পরিবেশের অবসান হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর। শীতের সকালের সূর্যের রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়েছিল পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত আলো বাতাসে। হানাদারমুক্ত দিবসে হবিগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের অবহেলিত স্থাপনাগুলো সংরক্ষণের দাবী মুক্তিযোদ্ধাদের।

১৯৭১ সালে ৫ ডিসেম্বর সূর্যাস্তের পর শহরে নেমে আসে ভূতুরে নিস্তব্ধতা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের খবর শোনার জন্য শহরবাসী রেডিওতে কান পেতেছিলেন। এর কদিন আগেই শহরের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা, শায়েস্তানগর ও উমেদনগরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি অপারেশন জয়ের পর প্রচন্ড গুলি বর্ষণের মাধ্যমে তাদের আগমন বার্তা ঘোষণা করেছিল। শায়েস্তানগর এলাকায় বর্তমানের টেলিফোন এক্সচেঞ্জের স্থানে পাকিস্তানী মিলিশিয়াদের একটি ক্যাম্প ছিল। তবে তারা আগের দিনই শহর ছেড়ে চলে যায়। পরে পাকিস্তানীদের দালাল এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুলা’র শায়েস্তানগরস্থ বাসভবনে একা হামলা চালাতে গিয়ে রাজাকারের গুলিতে নিহত হন মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সেনা সদস্য নূরুল ইসলাম মাসুদ। তিনি শহীদ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা শহরে হামলা চালিয়ে ১১জন রাজাকারকে আটক করেন। এর পর আর কোন প্রতিরোধের সম্মুখিন হননি তারা। রাজাকার, আলবদর বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র হামলার মুখে রাতেই শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৬ ডিসেম্বরে শীতের সকালে রক্তিম সূর্য তার তীক্ষèতা দিয়ে বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধাদের আরো সতেজ করে তুলে। কমান্ডার আব্দু শহীদের নেতৃত্বে ৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধা ৬ ডিসেম্বর সকালে প্রথম হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে অস্ত্র উচিয়ে হবিগঞ্জকে মুক্ত ঘোষণা করেন। পরে থানায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ শাহজাহান। শহরবাসী বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধাদের অভিবাদন জানায়। তারা জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে মুক্ত হবিগঞ্জ শহরের রাস্তায় নেমে এসে বিজয়ের উল্লাস প্রকাশ করে।

সর্বশেষ বড় যুদ্ধ সংগঠিত হয় মাধবপুরের পাশ^বর্তী রামপুরে। সেক্টর কমান্ডার শফীউল্লার নেতৃত্বে এ যুদ্ধে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ৪৭ জন আহত হন। ভয়াবহ এ যুদ্ধে ৪৭ জন হানাদার সৈন্যকে নিহত ও ৬ জনকে আটক করে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় অর্জন করেন। এর মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলা হানাদারমুক্ত হয়। পরে রাজাকার ও আলবদর বাহিনীকে হটিয়ে হবিগঞ্জ মুক্ত ঘোষণা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের। এরপরও হবিগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ও স্থাপনা সংরক্ষণ হয়নি। স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও স্থাপনার যথাযথ সংরক্ষণ করা হয়নি। প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের কবর পাকারণসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের দাবী ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের।

হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের কমান্ডার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী পাঠান জানান, ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যেগে পালিত হয়। কিন্তু সরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয় না। তাছাড়া এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের পূণর্বাসন করা হয়নি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৬ ডিসেম্বর ২০১৮/কেএস/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.