Sylhet View 24 PRINT

মিলাদ গাজীকে মন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায় সমর্থকরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-০৫ ১০:৪৭:৫৩

এস এম আমীর হামজা, নবীগঞ্জ :: মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী লীগের কান্ডারি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী। হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপির দায়িত্বে ছিলেন একটানা ১৫ বছর। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রী এবং সিলেট-১ আসনের সাবেক ২ বারের এমপি ছিলেন। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও। এতকিছু ছাপিয়ে সিলেটের গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বৃহত্তর সিলেটের স্বার্থরক্ষায় বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে অকুতোভয় ও আপসহীন ভূমিকার জন্য বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিলেন সিলেট হবিগঞ্জের মানুষের মনে।

সিলেটবাসীর কাছে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বেসামরিক সাবেক সেক্টর কমান্ডার ‘মুক্তির বীর’ এবং অনেকের কাছে পরিচিত ছিলেন 'সিলেটের ফরিদ গাজী' নামে। মৃত্যুর পর তার শূন্যস্থান কে পূরণ করবে- এ নিয়ে যখন সর্বমহলে আলোচনা চলছিল, তখনই নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেন তার জ্যেষ্ঠ ছেলে গাজী মো. শাহনেয়াজ মিলাদ। বাবার অনেক গুণ থাকায় তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন গাজী মোঃ শাহনেওয়াজ মিলাদের অনুসারীরা।

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর সিলেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী থাকার পরও তাকে প্রার্থী করে চমকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া পুত্র আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ ঐক্যফ্রন্টের হেভিওয়েট প্রার্থী ড.রেজা কিবরিয়াকে ৭৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে ভোটে জয়লাভ করে সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন মিলাদ।

মানুষকে খাওয়াতে ভালোবাসতেন দেওয়ান ফরিদ গাজী। এ জন্য সিলেট নগরীর লামাবাজারস্থ বাসভবনে স্থায়ী ডাইনিং হল, বাবুর্চি ও বয়-বেয়ারা রেখেছিলেন। দলের নেতাকর্মী কিংবা সাধারণ কোনো মানুষ- যেই হোন না কেন, বাসায় গেলে না খাইয়ে ছাড়তেন না। অনেক সময় নিজ হাতে অতিথিকে আপ্যায়ন করাতেন। চা-নাস্তা এবং দুপুরে ও রাতে খাবারের ব্যবস্থা রাখতেন নিয়মিত। প্রতিদিন শত শত মানুষ খেতেন সেখানে। অনেকেই মনে করেছিলেন, দেওয়ান ফরিদ গাজী মৃত্যুর পর সে ধারাবাহিকতা আর থাকবে না। কিন্তু একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি খাওয়া-দাওয়া। এখন মিলাদের সঙ্গে মানুষ দেখা করতে গেলে অনেকটা আগের মতোই খাওয়া-দাওয়া করাচ্ছেন।

দেওয়ান গাজী মো. শাহনেওয়াজ মিলাদকে নিয়ে মূল্যায়ন করতে গিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, মিলাদের মধ্যে তার বাবার অনেক গুণই রয়েছে। বাবা না থাকলেও বাবার কাজগুলো ঠিকই চালিয়ে নিচ্ছেন। বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করতে চান তিনি। এবার এমপি নির্বাচিত হওয়ায় সে কাজগুলো শেষ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। তার মধ্যে আমরা তার বাবাকে খুঁজে পাই।

প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়ে বাজিমাত করা মিলাদকে এবার মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান তার সমর্থকরা। তাকে নিয়ে বেশ আলোচনাও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজেদের মতামত প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে হবিগঞ্জ-১ আসনের তরুণরা তাকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।

হবিগঞ্জ-১-নবীগঞ্জের দেবপাড়ার খালেদ আহমদ বলেন, যে কোনো কাজকর্মে সাবেক এমপি মরহুম দেওয়ান ফরিদ গাজীর ওপর নবীগঞ্জ-বাহুবলের মানুষ ভরসা করতেন। এখানকার মানুষের জন্য অনেক কিছুই করেছেন তিনি। তার প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা রয়েছে, এখন তার ছেলে মিলাদ গাজীকে ঘিরে মানুষ সে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। বঙ্গবন্ধু সরকারের সাবেক মন্ত্রী সিলেট -১ আসনের সাবেক এমপি ও হবিগঞ্জ-১ আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম দেওয়ান ফরিদ গাজী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা থাকাকালে দলের সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তাঁর আলাদা একটি বলয় ছিল। এখন সিলেট ও হবিগঞ্জের সবার সঙ্গে বেশ সুসম্পর্ক রেখে চলছেন তার ছেলে মিলাদ গাজী। তার সমর্থকেরা বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বেশিরভাগ মানুষ।

মিলাদগাজী তার উঠে আসার পেছনে বাবা দেওয়ান ফরিদ গাজী অবদানকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘বাবার হাত ধরেই আমার রাজনীতির হাতেখড়ি। বাবার অনেক গুণ রয়েছে। এসব গুণের কারণে দলমত নির্বিশেষে মানুষ তাকে ভালোবাসতেন। আমি তার সে গুণগুলো নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করছি। বাবার স্বপ্ন পূরণে আমি আমৃত্যু কাজ করে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলের স্বার্থে আমাকে এমপি পদ দিয়েছেন। নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। আমি জয়লাভ করে তার প্রতিদান দিতে পেরেছি। এগুলোকে আমি মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে চাই।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৫ জানুয়ারি ২০১৯/এএইচ/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.