আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

বন্যার ঝুঁকিতে মৌলভীবাজার শহর

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৬-১৫ ১২:০২:৫৭

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের মনু নদের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ফলে জেলার মূল শহর ও তার আশপাশের অন্তত ২০টি স্থানে বাঁধ চুঁইয়ে পানি বের হচ্ছে। এমতাবস্থায় পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কায় শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে রাতে আরও পানি বাড়লে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করতে পারে। পানি আরও বাড়লে শহর রক্ষায় বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার সকালে দেখা যায়, শহরের সাইফুর রহমান রোডের মনু প্রতিরক্ষা বাঁধের ১০-১৫টি স্থান দিয়ে চুঁইয়ে শহরে পানি প্রবেশ করছে। শহরের ব্যস্ততম এ সড়কের ৩ ফুট উপর স্তরে প্রতিরক্ষা বাঁধের ভেতরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নদের নিকটবর্তী কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে দোকানের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এমন অবস্থার মধ্যে হালকা বৃষ্টিপাত তাদের মধ্যে আরও ভয় তৈরি করেছে।

সাইফুর রহমান রোডের একাধিক ব্যবসায়ীর জানান, প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর এই রোডে প্রায় শতাধিক দোকান রয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগ অনেক পুরাতন স্থাপনা। নদীর পানি আর বাড়তে থাকলে যেকোন সময় বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, উজানের পানি নিচ দিয়ে দ্রুত বেগে নামার ফলে শহর ও শহরতলীর আরো ৮টির বেশি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে সব থেকে ঝুঁকিতে রয়েছে সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট, দুর্লভপুর, কসবা ও শেরপুর এলাকা। এছাড়া উপজেলার কামালপুর থেকে মোমরুজপুর পর্যন্ত কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।

পাউবো জানায়, মনুর পানি আরো ১ মিটার বৃদ্ধি পেলে শহরে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করার শঙ্কা রয়েছে। চাঁদনীঘাট ব্রিজে বিপদ সীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মনুর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। ইতিমিধ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌর মেয়র ও পাউবোর প্রকৌশলী জরুরি মিটিংয়ে বসেছেন।

এর আগে মনু নদে সর্বোচ্চ বিপদসীমা ১৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার রেকর্ড হয়েছে। যা বিগত ১১ বছরের সর্বোচ্চ পানি প্রবাহ ছিল। তবে শহরের অংশে পানি কম ছিল। মনুর কয়েকটি ভাঙন দিয়ে পানি গ্রামাঞ্চল প্রবাহিত হওয়ার পর সে পানি পুনরায় নদে পড়ছে। ফলে নদীর পানি উজান থেকে নেমে নিম্নাঞ্চলে প্রভাব ফেলছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, রাত ৯টা পর্যন্ত পানি বিপদসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সাইফুর রহমান রোডের গার্ড ওয়াল পুরাতন হওয়াতে বিভিন্ন ফাঁক দিয়ে পানি ঢুকছে। ইতোমধ্যে ডিসি, এসপি, মেয়র ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। পানি আরও বাড়লে শহর রক্ষায় বিকল্প কিছু ভাবা হবে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ জুন ২০১৮/ওএফএন/আআ

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন