আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কুলাউড়ায় গারোদের নিজস্ব ঐতিহ্যের ওয়ানগালা উৎসব উৎযাপিত

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-২০ ১১:২৬:০৬

কুলাউড়া প্রতিনিধি :: কুলাউড়ায় গারোদের একান্ত নিজস্ব ঐতিহ্যের ওয়ানগালা উৎসব উৎযাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ গারো আদিবাসী লীগের আয়োজনে কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী নার্সারী পানপুঞ্জিতে হাজারো লোকের উপস্থিতিতে ১৮ নভেম্বর দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।

তিনটি পর্বে অনুষ্ঠান চলে। প্রথম পর্বে খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ। ওয়ানগালার খামলকে খুটুপ পড়িয়ে খ্রীষ্টযাগ পর্ব শুরু করেন লক্ষ্মীপুর মিশনের পাল পুরোহিত ফাদার রবি রবার্ট রোজারিও (ওএমআই)। সহযোগিতায় ছিলেন ফাদার কাজল লিনুস গমেজ (ওএমআই)। ওয়ানগালার ঐতিহ্য ও ইতিহাস তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী লীগের কুলাউড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. পিটার রুরাম।

২য় পর্বের আলোচনা সভায় গারো আদিবাসী লীগের কুলাউড়া উপজেলা শাখার সভাপতি আদিবাসী নেতা অবিনাশ বাজি এর সভাপতিত্বে ও লক্ষ্মীপুর মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক খেজলা রেমা এর উপস্থাপনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গারো আদিবাসী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আদিবাসী নেতা মি. তুরষ দাংগ। তিনি বলেন গারোদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য খুবই সুন্দর। যা আমাদের লালন-পালন করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে সমাজের প্রতিটি ভালো কাজে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ফাদার রবি রবার্ট রোজারিও (ওএমআই), ফাদার কাজল লিনুস গমেজ (ওএমআই), সাপ্তাহিক সীমান্তের ডাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সঞ্জয় দেবনাথ, কর্মধা ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং, কর্মধা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক অজয় চন্দ্র দেব, আদিবাসী নেতা শিশির দিও। অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডা. বিজয় চন্দ্র মল্লিক, সাংবাদিক আলাউদ্দিন কবির। শেষ পর্বে গারোদের নিজস্ব রীতিনীতি ও ঢংয়ে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে গারো সম্প্রদায়ের শিশু, তরুণ-তরুণী ও যুবকরা।

প্রসঙ্গত, আদিবাসী গারো জাতিগোষ্ঠীর ওয়ানগালা উৎসবটি একাধারে ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসব। পৌরাণিক মতে, শস্য দেবতা তাঁর প্রিয় শিষ্য চিনি গালাপ্পাকে শস্যের বীজ দিয়ে তা রোপন করে উৎপাদিত ফসলের মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করতে বলেছিলেন। গারোরা তাই নিজেদের উৎপাদিত ফসল খাওয়ার আগে শস্যদেবতার নামে উৎসর্গ করে। অন্না মানে দেয়া এবং গালা মানে উৎসর্গ। অন্নাগালা বিবর্তিত হয়ে ওয়ানগালা এসেছে। অর্থাৎ সব উজার করে দিয়ে শস্য দেবতাকে নিবেদন। গারোরা পরবর্তীতে খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করার পর তারা খ্রীষ্টকেই ওয়ানগালার মধ্য দিয়ে নৈবেদ্য উৎসর্গ করে আজীবন পেতে চায়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ নভেম্বর ২০১৮/এসএ/ডিজেএস

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন