Sylhet View 24 PRINT

আজ ৫ ডিসেম্বর জুড়ী মুক্ত দিবস

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১২-০৫ ০০:৪৫:১৮

মঞ্জুরে আলম লাল, জুড়ী :: ৫ই ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের জুড়ীর ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে জুড়ী এলাকা (বর্তমান জুড়ী উপজেলা) মুক্ত হয়। ’৭১ সালের ১ ও ২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে মুক্তিযুদ্ধের ৪ নং সেক্টরের রানীবাড়ী সাব-সেক্টরের অধীনস্থ সকল ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।

৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ঘটিকায় ভারতের বাগপাশা থেকে অগ্রসর হয়ে রাঘনা নামক স্থানে ভারত-বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণকারী নদীর উপর অস্থায়ী সেতু নির্মান করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী সীমান্তবর্তী ফুলতলা ইউনিয়নের ফুলতলা বাজার বিনা বাধায় দখল করে নেয়। রাতের মধ্যেই পার্শ্ববর্তী সাগরনাল ইউনিয়নের ডিফেন্সও মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। এখানে মুক্তিবাহিনীর ক্যাপ্টেন সুখ লালসহ কিছু সংখ্যক সৈন্য রয়ে যান, বাকিরা জুড়ীর দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। রত্না চা বাগানের কাছে এসে পাকিস্তানী বাহিনী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা গুলি বিনিময়ের পর পাকিস্তানী বাহিনী পিছু হটে কাপনাপাহাড় চা বাগানের নিকট চলে যায়। যৌথ বাহিনীও এখানে ডিফেন্স নেয়।

পরদিন দিনভর পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে প্রচন্ড যুদ্ধ চলে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কিছু সৈন্য হতাহতের পর ঐ রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী জুড়ীর দিকে পালিয়ে যায়। কাপনাপাহাড় থেকে যৌথবাহিনীর সৈন্যরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে একদল কুলাউড়া শত্রুমুক্ত করার উদ্দেশ্যে গাজীপুর চা বাগানের রাস্তা ধরে কুলাউড়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। অপর দল জুড়ীর দিকে এগিয়ে যায়।

পরদিন ৪ ডিসেম্বর ভারতের কুম্ভিগ্রাম বিমানবন্দর থেকে কয়েকটি যুদ্ধ বিমান যৌথবাহিনীর সমর্থনে এসে জুড়ী ও কুলাউড়াতে সেলিং করতে থাকে। বিমান বাহিনীর সেলিংয়ের মুখে জুড়ীতে অবস্থানরত পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী টিকতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিয়ে ঐ রাতে (৫ ডিসেম্বর) পালিয়ে যায়। শত্রুমুক্ত হয় জুড়ী। মুক্তিযোদ্ধারা লাল-সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে শহরে প্রবেশ করে জয়বাংলা শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন গোটা অঞ্চল।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার কুলেশ চন্দ্র চন্দ মন্টু বলেন, ‘জুড়ীবাসীর জন্য এদিনটি অবিস্মরণীয়। মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে প্রথম জুড়ী অঞ্চল শত্রুমুক্ত হয়। জুড়ীতে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ তৈমুছ আলী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মাসুক, এম এ মুমীত আসুক, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর ও আব্দুর রহিমসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, সকল মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। আমাদের নতুন প্রজন্ম জুড়ী শত্রু মুক্ত হওয়া সম্পর্কে কিছুই জানেনা। কেননা, এদিনটি কেহ পালন করেনা’।

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিবসটি পালনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে জুড়ীর মুক্তিযুদ্ধ ও জুড়ী শত্রু মুক্তির বিষয়টি জানাতে হবে, বুঝাতে হবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৫ ডিসেম্বর ২০১৯/এমএএল/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.