আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

বিয়ানীবাজার কলেজ রোডের নামকরণ প্রসঙ্গে কিছু কথা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৭-০৩ ১৭:৫১:৪৭

নুর উদ্দিন লোদী :: সিলেটের পঞ্চখন্ড হিসেবে পরিচিত বিয়ানীবাজার উপজেলার পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে গতবছরের ৫ই নভেম্বর একই সময়ে দুটি পৃথক পৃথক হলে জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। উক্ত অনুষ্ঠান দুটিতে নিমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।

আধুনিক বিয়ানীবাজার নির্মাণে পবিত্রনাথ দাস এই অঞ্চলে অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকা মানুষকে আলোকিত করে সুশিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে শুধু নিজের সম্পদ বিলিয়ে দেননি, জীবনের অনেক মূল্যবান সময় ব্যয় করেছেন সিলেটের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য। এখানেই শেষ নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে যখন স্কুলের কক্ষগুলোর টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দানবীর পবিত্রনাথ দাস নিজের ঘরের টিন খুলে স্কুলে টিন লাগিয়ে পানি পড়া বন্ধ করে দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার পরিবেশ সুরক্ষা রেখেছেন- যা উক্ত দুটি পৃথক অনুষ্ঠানের প্রকাশিত ম্যাগাজিন বই পড়ে জানতে পারলাম। এছাড়াও এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আরোও অনেকগুলো মানবসেবামূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন।

পবিত্রনাথ দাসের মৃত্যুর পরে তার সুযোগ্য উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রমথনাথ দাস তরুণ বয়সেই পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত প্রমথনাথ দাস একজন অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও মুক্ত চিন্তার মানুষ ছিলেন।  প্রমথ নাথ দাস পিতার প্রতিষ্ঠিত স্কুল পরিচালনা দায়িত্বেই শুধু নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি, পিতার আলোকিত চিন্তাধারাকে নিজের চিন্তা-চেতনার সাথে যুক্ত করে  সমাজে নারী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পারিবারিক নিজস্ব জমিতে দাসগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালনা করেন।

স্বপ্নদ্রষ্টা দানবীর এখানেই ক্লান্ত হননি, এই অঞ্চলের মানুষকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সার্বজনীন উদ্যোগে বিয়ানীবাজারে  একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৬৮ সালে, যার নাম বর্তমানে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ।

নিঃস্বার্থ পরোপকারী ব্যক্তি এতগুলো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় কীর্তি হয়েও একটি প্রতিষ্ঠানেও  নিজের নামে নামকরণ করেননি। তবে তিনি চাইলেই প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের ওয়ালে/খুঁটিতে নিজের নাম লিখিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু লিখবেনইবা কেন? উনি তো কখনোই নিজের জন্য স্বপ্ন না দেখে স্বপ্ন দেখেছেন ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের।

বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা লগ্ন থেকে শতবছরের পুরাতন ঐতিহ্যবাহী বাবুর বাড়ী রাস্তার নাম কলেজ রোড নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। যে রাস্তার পাশে প্রমথনাথ দাস নিজের প্রতিষ্ঠিত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ, সেই রাস্তায় তার নাম ফলক বসানো তো দূরের কথা, শত শত বছরের অতিথ আর ঐতিহ্যে নিজের বাড়ীর রাস্তাটি হারিয়ে গেছে তারই দানের অবদানে, আর তা তিনি কোন অনুযোগ-অভিযোগ ছাড়াই সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন।

দানবীর প্রমথনাথ দাস নিজের কর্মের প্রতিফলন হিসেবে নামকরণ করে মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকতে চান নি। তিনি তার সৎকর্ম ও পরোপকারী কীর্তির ফলে এই অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে  যুগে যুগে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন বলেই তিনি আজও কীর্তিমান হয়ে আছেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কলেজের সার্বিক উন্নয়ন ও কর্মকান্ডে  তিনি স্বশরীরে সম্পৃক্ত ছিলেন।

কবির কবিতার একটি লাইন মনে পড়ে গেলো, ‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি, এ জীবন মন সকলই দাও/তার মতো সুখ কোথাও কি আছে? আপনার কথা ভুলিয়া যাও/আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে/সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।

কলেজ রোডের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিয়ানীবাজার পৌরসভা, আধুনিক বিয়ানীবাজারের রূপকার স্বর্গীয় প্রমথনাথ দাসের নামে নতুনভাবে এ সড়কের নামকরণ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। গত ২০শে জুন বিয়ানীবাজারের কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদটি পড়ে আমার মনে হলো, ১৯৪৭ সালে বৃটিশের শাসন থেকে মুক্তি পেলেও শোষণ মুক্ত হতে পারিনি আমরা এই দুর্ভাগা বাঙালি। যেখানে  সাড়ে সাত কোটি বাঙালি জনসংখ্যা ছিল, সেখানে সাড়ে পাঁচ কোটি পাকিস্তানি জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে, তাদের কাছে বাঙালিদের প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন নেতার আবির্ভাব হয়েছিল বলেই দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে শোষণ মুক্ত হয়েছিল আমাদের এই বাংলাদেশ।

এগারোটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত আমাদের বিয়ানীবাজার উপজেলা, যেখানে দশটি ইউনিয়নের জনগন প্রতিটি ক্ষেত্রে সদর ইউনিয়ন/পৌরসভার বৈষম্য, শাসন আর শোষণের শিকার, তাহলে কি স্বাধীনতার  ৪৮ বছর পরেও আমাদের এ অঞ্চলটি এখনো স্বাধীন হতে পারেনি, মুক্তি কি পায় নি এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ!

বিয়ানীবাজারের পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিয়ানীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ  প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন, যেখানে থেকে যুগ যুগ ধরে জ্ঞানের ফুল ফুটে আসছে এবং আগামীতেও ফুটবে। কিন্তু এ প্রজন্মের অধিকাংশ মানুষই জানে না এই সকল প্রতিষ্ঠানের ভূমিদাতা বা প্রতিষ্ঠাতা কে, কি ছিল তার উদ্দেশ্য! যুগে যুগে যারা এ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি হয়ে আসছেন, যাদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জানার সুযোগ হওয়ার কথা ছিল, সেই সকল মানুষেরা তাদের নিজেদের আঁখের গোছাতে গিয়ে ভুলে যান ঐ সকল মহৎপ্রাণ, পরোপকারী ও নিঃস্বার্থ ব্যক্তিত্বদের অবদানের কথা!

কলেজ রোড নাম পরিবর্তনের  সংবাদ যখন ছড়িয়ে পড়ে অনলাইন পত্রিকা সহ জনসাধারণের মুখে মুখে, তখন তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে বিয়ানীবাজার  উপজেলার দেশ-বিদেশে অবস্থানরত অগণিত মানুষ নাম পরিবর্তন না করার পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি ও পরামর্শ দিয়ে  তাদের মতামত জানান।

দানবীর প্রমথনাথ দাস বর্তমান বাজারমূল্যে শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি নিজ হাতে দান করে গেলেন, কোথাও নিজের নাম উল্লেখ পর্যন্ত করিয়ে যাননি, এমনকি নিজের দানের অবদানে বাবুর বাড়ী রাস্তা নাম বিলীন করে কলেজ রোড নামটি প্রতিষ্ঠিত করে গেলেন এই অঞ্চলের মানুষকে ভালোবেসে। আজ তার মৃত্যুর চল্লিশ বছর পরে ‘যখন শ্মশানের ছাই জলে আর স্মৃতির পাতায়’ জমিদার পরিবারের শত শত কোটি টাকার দানকে মাত্র ঊনচল্লিশ লক্ষ টাকায় মাত্র কয়েক মিটার রাস্তা প্রকল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে প্রমথনাথ দাস রাস্তা নামকরণ করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো গত ২৩ই জুন ২০১৮ সাল। এর ফলে  এই অঞ্চলের জমিদার পরিবারকে অসম্মানিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলো আগামী প্রজন্মের কাছে।

দানবীর এই পরিবারের প্রতি নামকরণ দিয়ে যথার্থ সম্মান দেখাতে চাইলে তাদের দানকৃত হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়,  বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বিয়ানীবাজার কলেজে যে ভবনগুলো রয়েছে, একেকটি ভবনের নাম জমিদার পরিবারের একেকজন সদস্যের নামে নামকরণ করে আগামী প্রজন্মের কাছে তাদের স্মৃতি অমর করে রাখলেও এ পরিবারের ঋণ কখনই শোধ হবার নয়। কারণ পিতা পবিত্রনাথ দাস আর পুত্র  প্রমথনাথ দাস অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল চিন্তা না করে এমনকি নিজের উত্তরাধিকারীদের জন্য শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি রেখে যেতে পারতেন। কিন্তু না,  এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকা এই জাতিকে আলোর দিশারী করে তুলতে উদার হস্তে বিলিয়ে দিয়েছিলেন নিজেদের সর্বস্ব।

আধুনিক বিয়ানীবাজার নির্মাণের রূপকার জমিদার পরিবারকে নিয়ে যে নতুন রাজনীতির চর্চা এ অঞ্চলের জনসাধারণের মধ্যে অবলোকন করা হচ্ছে- তা শুধু নোংরা রাজনীতির সূচনা নয়, দানবীর পিতা-পুত্রের অবদানকে বাজারের পণ্য করে এক অপরাজনীতির লগ্ন মাত্র। আমরা তাদের প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জন শেষে, দেশে ও বিদেশে নিজ নিজ অবস্থানে সফলতা সাথে জীবন যাপন করে, নিজেদেরকে আদি থেকে সভ্য ও শিক্ষিত  নাগরিক ভেবে গর্ববোধ করে আসছি। যদিও ডাকঢোল না পিঠিয়েও নীরবে কলেজ রোড নাম পরিবর্তনের রহস্য দৃশ্যমান নয়, তবে অদৃশ্যে কিছু অশুভ  চিন্তার গন্ধ সাধারণ মানুষের নাকের ডগায় স্পর্শ করছে। তাই জমিদার পরিবারের ভূমি দান নিয়ে রাজনীতি না করে, তাদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজটি প্রমথনাথ দাসের নামে নামকরণের মাধ্যমে তার স্মৃতিকে অমর করে রাখা হোক। যেহেতু প্রমথনাথ দাস নিজের হাতে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের জন্য পাঁচ একর ভূমি দান করে এই অঞ্চলের মানুষকে উচ্চশিক্ষার জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন, সেহেতু তার নামেই এই কলেজের নামকরণ যৌক্তিকতার পর্যায়ে পড়ে।

এই অঞ্চলের সূর্য সন্তান স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম শহীদ  মনুমিয়া, বিজয়ের উষ্ণ লগ্নে শহীদ হওয়া বুদ্ধিজীবী ড. জি সি দেব, যার সুরেলা কণ্ঠে এই অঞ্চলের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হয়েছিল সেই শহীদ কমর উদ্দিন এবং গনতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের আন্দোলনে জীবন বিলিয়ে দেয়া সেই মেধাবী  ছাত্র শহীদ হুমায়ূন কবির চৌধুরী নাহিদ সহ তাদের সকলের স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নবনির্মিত দশতলা ভবনসহ অন্যান্য ভবনগুলো তাদের নামে নামকরণ করে আগামী প্রজন্মর কাছে তাদের বীরত্বকে অমর করে রাখা হোক।

সাময়িক ক্ষমতার সুবাদে এই অঞ্চলের মানুষের মতামতকে কর্ণপাত না করে , অন্যের দানকৃত ভূমিতে সরকার কর্তৃক অনুদান, নীতিনির্ধারকরা যদি বিধি মোতাবেকভাবে না করে নিজেদের আখের গোছাতে অপরাজনীতি শুরু করেন, তা এই  অঞ্চলের জনসাধারণ কতটুকু গ্রহণ করবে তা এখন ভাববার বিষয়।  আজ যাদের মতামতের কোন মূল্যয়ন করা হচ্ছে না সময়ের পরিবর্তনে নিরব অন্ধকারে তাদের মতামত দিয়ে প্রমাণ করে দিবে নিজের ঢোল নিজে বাজানোকে কতটুকু গ্রহণ করলো বা কতটুকু বর্জন করলো!

মনে রাখতে হবে, বিগত দিনে আমাদের দেশে যারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সরকারি বিভিন্ন অনুদানে বিধিবিধান ছাড়াই বিভিন্ন নামকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন ক্ষমতার পরিবর্তনের  সাথে সাথে সেইসব নামকরণের পরিবর্তন হয়েছে, যার সাক্ষী ইতিহাস!

পরিশেষে এই প্রত্যশাই করি, শুধু বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে পৃথিবীর বিভিন্ন শহর খুঁজে প্রমথ নাথ দাস পরিবারের সদস্যদেরকে উপস্থিত করার   প্রতিযোগিতা না করে এবং ক্ষণিকের আত্মতৃপ্তির জন্য যে কোন ধরনের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজে নিন্দিত না হয়ে যাদের প্রতি সম্মান-কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে এ সমাজে নন্দিত হওয়া যায়, সেই সকল কীর্তিমান ও ত্যাগী মানুষদেরকে যথার্থ মূল্যায়ন করে সর্বমহলে সমাদৃত হয়ে বেঁচে থাকা অনেক শ্রেয় এবং আত্মতৃপ্তির।

লেখক: নুর উদ্দিন লোদী, মাথিউরা (বড়বাড়ী), বিয়ানীবাজার।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন