আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

নিরাপদ সড়ক আইন পাশ, কতটুকু পূরণ হল শিক্ষার্থীদের দাবি?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-০৮ ২২:০৭:০৯

২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষিতে দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে জোর দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এই দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর খসড়ায় সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা অনুমোদনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন হয়েছে। ইচ্ছেকৃত দুর্ঘটনায় চালক বা সংশ্লিষ্টদের যে শাস্তির দাবি শিক্ষার্থীরা করে আসছে তার সবটাই এ আইনে রয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মৃত্যু হলে এবং তা যদি প্রমাণ হয় ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। সুতরাং এই আইনে তাদের ইচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন হয়েছে।

ড্রাইভারকে মোট ১২ পয়েন্ট দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে। একটা অপরাধে এক পয়েন্ট কাটা যাবে চালকের। এভাবে ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে তাকে আর ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা আগে আমাদের দেশে ছিল না। এবার এ আইনে এটা যুক্ত করা হয়েছে। এ আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়ে এবং মোটরযানের রেজিষ্ট্রেশনসহ যানবাহন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর শাস্তি ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। বর্তমানে এ অপরাধের শাস্তি চার মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড। নিবন্ধনহীন যান চালনার শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড। ফিটনেসবিহীন গাড়ির ক্ষেত্রে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড প্রস্তাব করা হয়েছে। চালকদের লাইসেন্স নিতে ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স হতে হবে। আর পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে বয়স হতে হবে ২১ বছর। এছাড়া কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাস না হলে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

আইনে মটোরযান নির্মাণ, যন্ত্রপাতি বিন্যাস, ওজনসীমা নির্ধারণ এবং পরিবেশ দুষণসহ বেশকিছু ইস্যুতে এখানে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও বীমা ব্যবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রাখা হয়েছে এ আইনে। চালক সমিতি, মালিক ও সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করার নির্দেশনা রয়েছে এ আইনে। এ ট্রাস্টি বোর্ডের কাজ হবে তহবিল তৈরি করা। দুর্ঘটনা ঘটলে ইন্সুরেন্সের সমস্যা সমাধানে যে সময় লাগে সেই সময়ে উক্ত তহবিল থেকে দ্রুত সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফার সব গুলো মেনে নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস নির্মাণে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজকে ৫টি বাস দিয়েছেন। বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও তার সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চালককে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নৌপরিবহনমন্ত্রী ক্ষমাও চেয়েছেন।

এই আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর দাবি পূরণ হয়েছে বলে আশা করা যায়

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন