Sylhet View 24 PRINT

‘বাংলাদেশের জনগণ সম্পূর্ণভাবে বিএনপি-কে প্রত্যাখ্যান করেছে’

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-১৩ ০১:৪৭:১৫

অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশ :: আমি ব্যক্তিগত ভাবে ছাত্ররাজনীতির সম্পৃক্ত থাকলেও অনেক সাধারণ জনগনের সাথে অরাজনৈতিক মানুষ হিসেবেই পরিচয় হয়েছে। তাই এই ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাচ্ছি-বাংলাদেশের জনগণ সম্পূর্ণভাবে বিএনপি-কে প্রত্যাখ্যান করেছে।

কিন্তু আরেকটা কঠিন সত্য হল বর্তমান সময়ের সরকারি দলের অনেক বড় বড় নেতাদের উপর আস্থাও রাখতে পারছে না। কিন্তু বিপরীতে এটাও সত্য জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং ভরসা রয়েছে জনগনের।

ছোট থেকে বড় সবধরনের সমস্যা প্রধানমন্ত্রী নিজে শেষ করতে হচ্ছে। দলীয় বিশাল বিশাল পদ-পদবি নিয়ে বেশিরভাগ নেতারাই নিজের পকেট ভারি করছে। জনগনের সাথে সম্পৃক্ততা তো অনেক দূরের কথা নিজ দলেও দু তিন জন কর্মী সৃষ্টি করাও সেসব নেতাদের সম্ভব না। যে কয়জন সালাম আদাব দিয়ে থাকে,তাও পেয়ে থাকে তার পদের জন্য। রাজনীতি করার নামে উল্লেখিত কিছু দলীয় পোগ্রামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছেন সে সব নেতারা। জনগনের জন্য কল্যাণকর এমন কিছুতেই তাদের খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। দলীয় কার্যক্রম গুলো নিয়ম রক্ষার্থেই করা হচ্ছে। সকাল ১০টায় কর্মসূচি থাকলে কোনভাবে ১০:৩০ এর মধ্যেই তা সম্পন্ন হয়ে যায়। জনগনের জন্য কল্যাণকর যা হয় তার সবকিছুই হয় জননেত্রী শেখ হাসিনার নিজ উদ্যোগে। এসব নেতাদের দ্বারা সেসব উন্নয়ের সঠিকভাবে প্রচারও হচ্ছে না। যার ফলাফল আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি।

ফেসবুক আর নিউজফিডেই সীমাবদ্ধ আজকালের নেতাদের কর্মকাণ্ড। আমরা যারা তৃণমূলে বিচরণ করি, আমরা সবাই এই সত্য সবাই জানি কিন্তু সেই সত্যটা কেও গিয়েই নেতাদের সামনে বলি না। কারন যে বলবে বা প্রতিবাদের সাহস করবে তাকেই কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। বর্তমান সময়ের জনগন এখন আর সুন্দর কাপড়চোপড় পরা নেতাদের জ্বালাময়ী ভাষণে মন গলেনা। এখন বাস্তবে তার প্রতিফলন চায়। এমন অনেক বড় নেতাও রয়েছে যার নিজ সন্তান ছাড়া আর কোন কর্মীও নাই। ভাগ্যগুণে বড় পদ পেয়ে যাওয়া নেতারা স্বপ্ন দেখেন জনপ্রতিনিধি হওয়ার। সেসব স্বপ্ন দেখছেন তাদের কাছে সুযোগসুবিধা নেওয়া কিছু কতিপয় স্বার্থান্বেষী মানুষের প্ররোচনায়। কিন্তু জনগণ ঠিকই তাদের প্রত্যাখ্যান করছে। এইসব নেতাদের জন্য দলের ভাবমূর্তি অনেকাংশেই প্রশ্নবিদ্ধ। জনগণের সাথে সম্পৃক্ত নেতাদের সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল করে রাখা হচ্ছে। তৃনমূল থেকে যারা উঠে এসেছেন তাদেরকে বড় পদওয়ালা নেতারা একত্রে দাবিয়ে রাখছেন।
আজকাল শ্রমিক থেকে শুরু করে ছাত্র আন্দোলন এমন অনেক সমস্যার সমাধানের জন্য নেত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। সব সিদ্ধান্তই যদি নেত্রীর একার নিতে হয় তাহলে কোন কাজে নেতারা পদ দখল করে আছেন তা আমার বোধগম্য নয়। এমন অনেক নেতা আছেন যাদের নিজের আর নিজের পরিবারের বাইরে একটা ভোটও সংগ্রহ করার ক্ষমতা নেই। যাদের আছে তাদেরকে সে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না। অযোগ্য ব্যক্তিরা আজ সর্বত্র বড় বড় আসন দখল করে আছেন আর বিপরীতে যোগ্যদের প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করতে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে বড় নেতাদের ড্রাইভার, কাজের লোক হয়ে যাচ্ছে বড়বড় পদপদবীর মালিক, যেখানে অনেক ত্যাগী কর্মী বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে নিজের সব স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েও দলের প্রতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? সেসব জনবিচ্ছিন্ন নেতারা একদিন এই সম্পূর্ণ দলটাকে জনবিচ্ছিন্ন করে দিবে। সেই সময় টা আর বেশি দূরে নয়। আমার এই ছোট্ট রাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে অন্তত এটা আশংকা করছি। আর এতসব বলার পিছে আমার স্বার্থ তো আছেই।
কারণ যদি কোনদিন দল নেমে যায় তখন সেই বড় পদওয়ালা নেতাদের কিছুই হবেনা। কারন তারা কখনো দলের হয়ে বিরোধীদের মুখোমুখি হতে হয় নি। অনেকে তো ব্যবসাপাতিও করছে একত্রিত হয়ে। যা ক্ষতি হবার, হবে আমাদের। আমরা যারা তৃণমূলে রাজনীতি করি,হয়ত আমাদের জীবনটাও চলে যেতে পারে। নাহয় পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে। আমাদের অনেক মা বোনদের ধর্ষণের স্বীকার হতে হবে। যার কিছুটা প্রতিফলন আমরা ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত দেখেছি।

তাই এখনি শেষ সময়। তথাকথিত সেসব বড় বড় অথর্ব নেতাদের সরিয়ে তৃনমূলকে প্রাধান্য দেয়ার এখনি সময়। জনতার সাথে সম্পৃক্ত নেতাদেরকেই জনতার দায়িত্ব দিতে হবে। নাহয় অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে আমাদের।

লেখক: সাবেক সহ সভাপতি, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.