Sylhet View 24 PRINT

ওসমানী কেনো খুনি মুশতাকের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হলেন?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৮-১৬ ০০:৩৮:৩৯

(ছবিতে বঙ্গবন্ধুকে হত‍্যার পর খুনিদের সাথে আলাপরত ওসমানী))

সুজাত মনসুর :: পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ব-পরিবারে হত্যাকান্ডটি বিভিন্ন কারনে আমাদের জাতীয় জীবনে মাইলফলক হয়ে আছে। যে মহান মানুষটি তাঁর মানুষের ভৌগোলিক স্বাধীনতা, ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির স্বাধীনতা, আত্মিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বাধীনতার জন্যে জীবনের অধিকাংশ সময় হয় রাস্তায়-নয়তো কারাগারে কাটিয়েছেন। দু-দু’বার ফাঁসির মুখোমুখি হয়েছেন। পারিবারিক জীবন বলতে যার কিছুই ছিল না। তাঁকেই কিনা জীবন দিতে হয়েছে রাতের আঁধারে কতিপয় খুনি-ডাকাত সেনা কর্মকর্তার হাতে, যাদেরকে তিনি ভালোবেসে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন পরিবার-পরিজনসহ। শুধু কি ওরা? না, ওরাই শুধু নয়, সেই হত্যাকান্ডের মূল হোতাদের মধ্যে ছিল মুশতাক, যে কিনা বৃটিশ শাসনামল থেকে শেখ মুজিবের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের প্রতিটি পর্যায়ে একাত্তর সাল পর্যন্ত। পুরষ্কার স্বরূপ পেয়েছে প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। কিন্তু সেই মুশতাক কোন এক রহস্যজনক কারনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই পরিণত হয় গাদ্দারে, সরে যেতে হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রলায় থেকে। অপরাধ? পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করার ষড়যন্ত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদে। তারপরও বঙ্গবন্ধু অতি পুরনো রাজনৈতিক সহকর্মীকে দূরে সরিয়ে দেননি, ঠাঁই দিয়েছেন তাঁর মন্ত্রীসভায় বানিজ্যমন্ত্রী বানিয়ে। কিন্তু গাদ্দার সব সময়ই গাদ্দার, তার প্রমাণ দিয়েছে খন্দকার মুশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রধান ক্রীড়নক হিসেবে।

আরেক গাদ্দার খুনি জিয়া। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই যার রহস্যময় আচরনের বহিঃপ্রকাশ। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে যাবার প্রাক্কালে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। সেই ঘোষনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের শব্দসৈনিকদের সহযোগিতায় ঘোষনাটি প্রচার করার চেষ্টা করেন। শব্দসৈনিকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বেলাল মোহাম্মদ আর আবুল কাশেম সন্দীপ। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রথমে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম আব্দুল হান্নান স্বাধীনতার ঘোষনাপত্রটি পাঠ করেন। অতঃপর তাঁরা যুদ্ধকালীন সময়ে মানুষের মনে সাহস ও গ্রহণযোগ্যতার জন্যে ঘোষনাপত্রটি পাঠ করার জন্যে একজন সেনা কর্মকর্তার প্রয়োজন অনুভব করেন এবং যোগযোগ করেন তৎকালীন মেজর রফিকুল ইসলামের সাথে(লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বইয়ের লেখক)। মেজর রফিক তাঁদের পরামর্শ দেন চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে নিয়োজিত মেজর জিয়ার সাথে যোগাযোগ করার জন্যে। মেজর জিয়া তখন চট্টগ্রাম বন্দরে বাঙালি নিধনের জন্যে পাকিস্তানীদের আনা অস্ত্র খালাসে ব্যস্ত ছিল। মেজর জিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমে রাজী নাহলেও, হিরো হবার বাসনা থেকেই সেদিন ঘোষনাপত্রটি পাঠ করতে রাজী হয় এবং বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনাপত্রটি পাঠ করে। অথচ বিএনপি ঐ ঘোষনাকে পুঁজি করেই খলনায়ক জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বানাতে চায়। কি হাস্যকর অপচেষ্ট?। গাদ্দারের পরিবার-পরিজন গাদ্দারই হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের নয়টি মাস পাকিস্তানী জেনারেলদের আশ্রয় থাকার কারনে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান যখন মাতা-পুত্রদের ঘরে তুলতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জিয়া বাধ্য হয় তাদেরকে আশ্রয় দিতে। সেই খালেদা জিয়া আজ কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে পনেরো আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালনের উৎসব করে। আর তার কুলাঙ্গার পুত্র তারেক লন্ডনে বসে বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করছে আর স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি করে বক্তব্য দিচ্ছে।

জিয়াউর রহমান যে একজন বড় ধরনের গাদ্দার তার আরো প্রকাশ ঘটে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত থাকার ঘটনায়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই তাকে সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু ঐ যে এক নম্বর হবার আকাংখ্যা স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকে, তা বাস্তবে রূপ দেবার জন্যে মেতে উঠে ষড়যন্ত্রে। খুনিরা যখন তাঁর সাথে দেখা করে সহযোগিতা চায় তখন বলে, ‘তোমরা এগিয়ে যাও আমি তোমাদের সাথে আছি’। সে তার কথা রেখেছে খুনিদের শুধু রক্ষা করেনি বিদেশে বিভিন্ন দুতাবাসে চাকুরী দিয়ে পুনর্বাসিত করেছে। আর তার ধারাবহিকতা রক্ষা করেছে এরশাদ ও খালেদা। জিয়াউর রহমান আইন করে খুনিদের রেহাই দিয়ে আইন পাশ করে, এরশাদ-খালেদা তা বহাল রাখে। এমনকি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেও খালেদা জিয়া মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে, রায় কার্যকরের বিষয়টি তামাদি করে রেখেছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে শুধু ফারুক-রশীদ কিংবা মুশতাক-জিয়া জড়িত ছিল তা কিন্তু নয়। এর সাথে জড়িত ছিল দেশী-বিদেশী অনেক চক্র। এদের অনেকের মাঝেই বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী-বন্ধু যেমন ছিল তেমনি ছিল সরকারের বাইরের একটি শক্তিশালী অংশ। তারা অনেকেই সুশীল নামক নাগরিকও। আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমেরিকা-সৌদি আরব-পাকিস্তানের সম্পৃক্ততা তো প্রকাশিত সত্য। কিন্তু পনেরোই আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড আর রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর একজন মানুষের ভুমিকা অনেকের কাছেই অত্যস্ত রহস্যজনক বলেই মনে হয়। তিনি যে রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাস করতেন বলে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, তাতে করে একজন খুনি সরকারে সহযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়াকে কোন অবস্থায়ই মেনে নেয়া যায় না। তিনি হলেন মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী। যদিও মুশতাকের মন্ত্রীসভায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত বন্ধু সিলেটের দেওয়ান ফরিদ গাজীসহ বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীসভার অধিকাংশ সদস্যই যোগদান করেছিল। এমনকি তারা বঙ্গবন্ধুর দাফন-কাফনেরও ব্যবস্থাও করেনি। ইতিহাসের অমোঘ নিয়মে তারাও আজ ইতিহাসে হারিয়ে যাওয়া চরিত্র হয়ে গেছে কিংবা হয়ে যাবে। যদিও অনেকেই তাদের মুশতাকের মন্ত্রীসভায় যোগদোনের বিষয়টিকে যথার্থতা দেবার চেষ্টা করে কিংবা তাদের আওয়ামী লীগে ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে সাফাই স্বাক্ষী হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে। তাতে কিন্তু ইতিহাসের রকমফের হয় না। তাদের কুষ্টি থেকে এই কালো অধ্যায়টুকু মুছে যায় না। যেমন মুছে যায় না এক-এগারোর পরে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার ক্রীড়নক সংস্কারবাদীদের কথা।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ভুমিকা ও সততা আর সাধারণ জীবনযাপনের জন্যে জেনারেল ওসমানী সিলেটবাসীর অধিকাংশের কাছেই শ্রদ্ধা আর সম্মানের স্থানটি ধরে রাখতে সক্ষম হযেছেন। অনেকের মতো আমারও তাকে শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছে করে। আর এই শ্রদ্ধাবোধটুকুই বজায় ছিল পঁচাত্তরের পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা পর্যন্ত। এরপরই সেই শ্রদ্ধাবোধটুকু বিলীন হতে শুরু করে, এখন শুন্যের কোঠায়। প্রশ্ন হচ্ছে এতো গাদ্দারের ভীড়ে দেশপ্রেমিক ওসমানী নাম লেখাতে গেলেন কেনো? রহস্য কিংবা সত্যটা কি? সত্যটা হলো জেনারেল ওসমানী বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জেনেশুনে-স্বজ্ঞানে খুনী মুশতাকের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, বন্দুকের নলের ডগায় নয়। অন্ততঃ পঁচাত্তর পুর্ব নিকট ইতিহাস কিন্তু তাই স্বাক্ষ্য দেয়। যদিও তিনি দেশে যাতে আর কোন ধরনের রক্তপাত না হয় সেজন্যে মুশতাকেব সরকারে যোগদান করেছিলেন বলে পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন। এমনকি তিনি জিয়াউর রহমানের সময় জাতীয় জনতা পার্টি গঠন করে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি করেছিলেন। আর আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাকে শিখন্ডি দাঁড় করিয়ে দল গোছানো এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি নিয়ে জনতার কাছে আসার সুযোগ নিয়েছিল। ঐ সময়ে এটা ছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচক্ষনতার পরিচয়।

পঁচাত্তরে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি মুজিবকেই হত্যা করা হয়নি। সেদিন আমাদের পুরো মুক্তিযুদ্ধকেই হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপরই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের বজ্রনিনাদ জয় বাংলা ধ্বণিকে পরিবর্তন করে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ করা হয়। বাংলাদেশ বেতার হয়ে যায় রেডিও বাংলাদেশ। যে চীন বা সৌদি আরব এতদিন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি তারাই তড়িগড়ি করে পাকিস্তানের সাথে সুর মিলিয়ে মুশতাক সরকারের প্রতি স্বীকৃতি জানায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশকে ঠেলে দেয়া হয় পাকিস্তানি ভাবধারার দিকে, সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর পথে। সুতরাং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই ভুলুণ্ঠিত করা হয়, হত্যা করা হয়, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব ছিল খুনীদের সহযোগিতায় অবতীর্ণ না হয়ে প্রতিরোধের ডাক দেয়া। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সংগঠিত করা। কেননা, বঙ্গবন্ধু তাঁর সুদূঢ় প্রসারী পরিকল্পনা থেকেই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আতাউল গণি ওসমানীকে আওয়ামী লীগে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন ওসমানী মুক্তিযুদ্ধকালীন ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়েও একজন বিশ্বস্ত সেনাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারেন। কিন্তু ওসমানী মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সঠিক দায়িত্ব পালন করলেও পঁচাত্তর পরবর্তী ভুমিকা কিন্তু সঠিক ছিল না।

অনেকে হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন ওসমানী যেমন করেননি, তেমনি বঙ্গবন্ধুর আরো অনেক বিশ্বস্ত ও দীর্ঘদিনের আন্দোলনের সংগ্রামে সাথী-রাজনৈতিক সহকর্মীরাও তো প্রতিরাধ গড়ে তুলেননি বা চেষ্টা করেননি। উত্তর হলো, যারা গাদ্দার তারা মুশতাকের মন্ত্রী হয়েছে, আত্ম-স্বীকৃত খুনীদের সাথে বসবাস করেছে। আর যারা গাদ্দারি করেননি তাঁদেরকে জেলে যেতে হয়েছে, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে এবং শেষে জেলের অভ্যন্তরে একই খুনীদের হাতে জীবন দিতে হয়েছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইলের বাঘা কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের শত শত তরুণ নেতাকর্মী প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে যেমন সিলেটের সুলতান মনসুর, নারায়নগঞ্জের নাসিম ওসমানদের মতো(যিনি নববিবিাহিতা স্ত্রীকে ফেলে ভারতে গিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলে)। অনেকে জীবন দিয়েছে, ফাঁসির আসামী হয়ে বছরের পর বছর সেলে কাটিয়েছে কিন্তু আপোষ করেনি, যেমন বিশ্বজিত নন্দীরা।

দেশে আর যাতে রক্তপাত না হয় সে অজুহাতে জেনারেল ওসমানী মুশতাকের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব নিলেও তিনি কিন্তু রক্তপাত এড়াতে কিংবা বন্ধ করতে পারেননি। তিনি সেনাবাহিনীতে যে গোপন হত্যাকান্ড চালানো হয় তা বন্ধ করতে পারেননি। জেলখানায় জাতীয় চারনেতা হত্যা ঠেকাতে পারেননি। খালেদ মোশারফ বা মেজর হায়দার সহ মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের বাঁচাতে পারেন নি। অথচ পঁচাত্তরের তেসরা নভেম্বর বিদ্রোহী সেনাদের রোষানল থেকে খন্দকার মুশতাক আর জিয়াকে স্বপ্রনোদিত হয়ে রক্ষা করেছিলেন বলে কাহিনী প্রচলিত আছে। তাহলে তিনি কেন খুনীদের সহযোগিতায় এগিয়ে এলেন? বন্দুকের নলের ডগায়? আমার কাছে তা মনে হয় না। কেননা, ঐ সময় তিনি রাজনৈতিক মাঠ থেকে প্রায় নির্বাসিতই ছিলেন বলা যায় বাকশাল থেকে আদর্শিক প্রশ্নে পদত্যাগ করার কারনে। এছাড়া তিনি ভুতপুর্ব সেনা কর্মকর্তা ও মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি থাকলেও সর্বজনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ছিলেন না। সুতরাং তিনি যদি অস্বীকার করতেন খুনীদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে তাহলে হয়তো তাঁকে জেলে যেতে হতো এর বেশি কিছু নয়। আমার বিবেচনায় মুশতাকের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব তিনি গ্রহণ করেছিলেন আদর্শিক মেলবন্ধনের কারনে। কেননা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার সাঙ্গাতরা সহ মুশতাক গংরা যেমন বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসুচিকে মেনে নিতে পারেনি তেমনি তিনিও তা মানতে পারেননি বলে বাকশাল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।

লেখক: যুক্তরাজ্য প্রবাসী লেখক-সাংবাদিক

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.