আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

স্বপ্ন ছোঁয়ার যাত্রায় ইউরোপে বাংলাদেশ প্রতিদিন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১০-০৬ ০০:৪৩:৪৯

নঈম নিজাম :: প্রিয় পাঠক অভিনন্দন নিন। বাংলাদেশ প্রতিদিন আবারও নিয়েছে নতুন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ আকাশ ছোঁয়ার। এই স্বপ্ন বিশ্বজুড়ে একটি বাংলা মিডিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম, সে কখনো করে না বঞ্চনা।’ সাংবাদিকতার কাঠিন্য আর বিশ্ব বাস্তবতায় মিডিয়ার খারাপ সময়কে সামনে নিয়েই বাংলাদেশ প্রতিদিনের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালের ১৫ মার্চ। অতি অল্প সময়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এ অর্জন সম্ভব হয়েছে পাঠকদের অফুরন্ত ভালোবাসার কারণে। সরকারি, বেসরকারি সব হিসাবে বাংলাদেশে প্রচার সংখ্যার শীর্ষে এখন বাংলাদেশ প্রতিদিন। গত ছয় বছর তথ্যমন্ত্রী সংসদে দেওয়া সব প্রতিবেদনে বলেছেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। পত্রিকাটির প্রচার সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার পর বাংলাদেশ প্রতিদিন বিশ্বের দ্বিতীয় বাংলা দৈনিক হিসেবে প্রচার সংখ্যায় এই রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এই অসাধ্য সাধন হয়েছে গণমানুষের দৈনিক হিসেবে। আমাদের শক্তি, আমরা সাধারণ মানুষের কথা বলি। আমরা নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান থেকে সংবাদ পরিবেশন করি।

প্রিয় পাঠক, প্রিন্ট মিডিয়া বর্তমানে কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, কী কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা আপনারা জানেন। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ জয় করে আগামীর পথে এগিয়ে চলছি। বাংলাদেশের বিশাল সাফল্যের ধারাবাহিকতায় উত্তর আমেরিকার পাঠকদের জন্য সপ্তাহে একদিন বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন প্রকাশিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে। প্রত্যাশার আলোকরশ্মির ধারাবাহিকতায় উত্তর আমেরিকার ধারাবাহিকতা আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই বিশ্বের বাংলাভাষী সব মানুষের কাছে। এ যেন আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে জয় করে এগিয়ে যেতে চাই আমরা। এর মাঝে উত্তর আমেরিকার পাঠকরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে গ্রহণ করেছেন। সেই ভালোবাসা ও চ্যালেঞ্জের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রকাশিত হবে লন্ডন থেকে। লন্ডনের সর্বস্তরের পাঠকদের অভিবাদন। আপনাদের ভালোবাসা নিয়ে সপ্তাহে একদিন আমরা তুলে ধরতে চাই সিলেট ও বাংলাদেশের খবর। গুরুত্ব পাবে ব্রিটেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের বাঙালি কমিউনিটির সব খবর। বাংলাদেশ প্রতিদিন শুধু ব্রিটেনের জন্য নয়, পুরো ইউরোপের কাগজ হিসেবে প্রকাশিত হবে। যাত্রার শুরুতে প্রকাশিত হবে সপ্তাহে একদিন। শুধু ইউরোপ নয়, আমাদের আগামীর স্বপ্ন মধ্যপ্রাচ্য। আরব আমিরাত থেকেও আমরা কাগজ বের করব। আমাদের লক্ষ্য একটি বাংলা পত্রিকাকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়া। আপনারা জানেন, বিশ্বজুড়ে প্রিন্ট মিডিয়া চ্যালেঞ্জের মুখে। বিভিন্ন দেশে প্রিন্ট মিডিয়ার সংস্করণ বন্ধ হয়ে অনেকে অনলাইনে যাচ্ছে। অনেকে আবার পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে আনছে। ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকটি বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশকে তুলে ধরার পরিকল্পনা কঠিন চ্যালেঞ্জের বিষয়। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ জয় করতে চাই। আমাদের প্রেরণার উৎস ১৯৭১। বাংলাদেশ প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পত্রিকা। আমরা সেই চেতনাকে ধরে রাখব। আমরা চাই উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে। বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে জানাতে। আমরা মানুষের কথা বলতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে চাই। আমাদের সাহস বুকে লালন করা বিবেক। নিজস্ব দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার বিকাশে সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে আমরা দ্বিধাহীন। মিডিয়ার দায়িত্ববোধ আছে। এই দায়িত্ব সমাজের অন্যায় ও অসঙ্গতি তুলে ধরার। চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিবেকের দায় থেকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজের অনাচার বৈষম্য উদ্ঘাটন আর সত্য-সুন্দরকে বাংলাদেশ প্রতিদিন তুলে ধরছে, তুলে ধরবে। অন্যায়ের কাছে আমরা মাথানত করিনি। করব না। আমরা সাধারণ মানুষের কথা বলছি। সমাজের অবহেলিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। মানুষ যেখানে কথা বলতে পারে না সেখানেই বাংলাদেশ প্রতিদিন। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের গতি থেমে থাকার জন্য নয়, আমাদের সাধনা একটি সুন্দর আগামীর জন্য। এ লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনও এগিয়ে চলছে। প্রিয় পাঠক, একটা সময় লন্ডন অনেক আসতাম। আমিনুল হক বাদশা আর মিয়া আখতার হোসেন ছানু মিয়ার সঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম এই শহরে। আড্ডা দিতাম বাংলা পত্রিকা অফিসগুলোতে। এখানকার সব সাংবাদিক বন্ধুর সঙ্গে রয়েছে আমার বন্ধুত্বের নিবিড় বন্ধন। ছানু মিয়া ও বাদশা ভাই আজ নেই। কিন্তু আছেন আমাদের অন্যসব ভাই-বন্ধু, যারা ঐতিহ্যময় এই শহরে বাংলা মিডিয়াকে এগিয়ে নিয়েছেন, ধরে রেখেছেন। আপনাদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। আপনাদের সঙ্গেই আমরা নবীন সদস্য হিসেবে চলতে চাই। আমরা তুলে ধরতে চাই, আমাদের পূর্বসূরিদের কথা, এখানকার ঐতিহ্যের কথা। তাদের শ্রম-মেধায় গড়া আজকের ব্রিটেনের বাঙালিদের সাফল্যের গল্পগুলো। আমাদের পূর্বপুরুষরা অনেক সংগ্রাম করে এখানে জায়গা তৈরি করেছেন। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই মানুষগুলোকে।

প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে যিনি সাহসী বিনিয়োগ ও নির্দেশনা দিয়ে আমাদের পথচলাকে মসৃণ করেছেন তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। মানুষ বলেন, তিনি ছাই ধরলে সোনা হয়ে যায়। গত ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় আমারও তাই মনে হয়েছে। আমি দেখেছি, দেশ ও মানুষের কল্যাণেই তাঁর প্রতিটি কাজ। বাংলাদেশ প্রতিদিন লন্ডনে প্রকাশ সম্ভব হয়েছে শুধু আহমেদ আকবর সোবহানের দিকনির্দেশনার কারণেই। একই সঙ্গে বলছি, আরেকজন মানুষের কথা, তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। হিমালয় হৃদয়ের এ মানুষটি ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রাণ। সংবাদকর্মীদের ভালোবাসার ঋণ সৃষ্টি করেন তারা। বসুন্ধরা গ্রুপের স্লোগান, দেশ ও মানুষের কল্যাণে। সেই কল্যাণেই বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মিডিয়া গ্রুপ সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে দুটি বাংলা দৈনিক, একটি ইংরেজি দৈনিক, একটি টেলিভিশন, রেডিও এবং অনলাইন পোর্টাল রয়েছে আমাদের। আরও মিডিয়ার স্বপ্ন আমাদের রয়েছে। বাংলাদেশের মিডিয়াবান্ধব এ গ্রুপটি লড়ছে মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্য। কথা দিচ্ছি, আমরা সত্য ও সুন্দরের জন্যই কাজ করে যাব। বাংলাদেশ প্রতিদিন হবে আপনাদের পত্রিকা।

লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন