Sylhet View 24 PRINT

শেখ হাসিনার তুলনা কেবলই শেখ হাসিনা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-১৩ ০০:৫৮:০৩

সুজাত মনসুর :: কি চমৎকার ভাবেই না তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এমনিতেই ছিল তবুও কেন জানি দলের ভিতরের বাহিরের রাজনৈতিক বিশ্লেষক, মাঠের কর্মীরা, মিডিয়া, সুশীল সমাজ, বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে কিঞ্চিত পরিমাণে হলেও একটা শংকা কাজ শেষ পর্যন্ত নির্বাচনকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকবে তো? নাকি আবারও ২০১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার সোনার ছেলেরা পেট্রোল বোমায় ঝলসে দেবে কোন কিশোরীর মুখ অথবা মাতৃজঠরে মৃত্যু হবে কোন অনাগত শিশুর?
কেউ কেউ আবার পুলকও অনুভব করছিলেন আর মুচকি মুচকি হাসছিলেন, যাদের অধিকাংশই সুশীল নামক বিশেষ প্রজাতির মানব। সারা বছরই স্বপ্ন দেখে হঠাৎ অন্ধকার থেকে বের হয়ে এসে ক্ষমতা দখল করে নেবে, বসিয়ে দেবে মসনদে। উড়বে গাড়িতে লাল সবুজের পতাকা।
কেননা, গণতান্ত্রিক শাসন ব‍্যবস্থায় তো এদের জামানত নিয়েই ঘরে ফেরার সুযোগ নেই। পতাকা উড়াবে কি এমপিই হতে পারে না। তাদের পুলকিত হবার মূল কারণ, আমাদের সংবিধানের তথাকথিত জনক বিশালাকৃতির নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি সহ কতিপয় মাথা সর্বস্ব বিরাটাকৃতির দলের সমন্বয়ে বিশাল ঐক‍্য। নামের বাহারও বেশ, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সাথে জামায়াতের জঙ্গি বাহিনী ‌সুতরাং এবার শেখের বেটির দাবি মেনে নিয়ে নির্বাচন না দিয়ে উপায় নেই। হয় দাবি মানতে হবে নতুবা পাততাড়ি গোটাতে হবে।

প্রনীত হলো সাত দফা দাবি। এমন সব দাবি যা মানলে শেখ হাসিনার নির্বাচনের আগেই হার স্বীকার করে নিতে হবে। সুশীলরা সাফারি অথবা নতুন পাজামা পাঞ্জাবী পরে শপথ নেবে মন্ত্রীর মর্যাদায় উপদেষ্টার। কারাগার থেকে ফুরফুরে মেজাজে বের হয়ে আসবে খালেদা জিয়া। বিলেত থেকে উড়ে আসবে প্রিন্স তারেক রহমান।

প্রথমেই তারা দাবি নিয়ে সংলাপে বসতে চান। চিঠি লেখা হলো শেখ হাসিনা বরাবর। তারা শতভাগ নিশ্চিত শেখ হাসিনা সংলাপে রাজি হবেন না। কিন্তু ২৪ ঘন্টাও পার হয়নি, শেখ হাসিনা জানিয়ে দিলেন তিনি সকল রাজনৈতিক দল ও জোটের সাথে সংলাপে বসতে রাজি। তবে সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোন দাবি মানা হবে না। তারা বললেন, সংবিধানের মধ্যেই সমাধান রয়েছে। রীতিমত হোমওয়ার্ক করেই সংবিধান বিশেষজ্ঞদের বিশাল বহর নিয়ে হাজির হলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার যুক্তির কাছে হেরে গিয়ে চেহারা বাংলা পাঁচ-এর মত করে বিদায় হলেন। বললেন, আবার সীমিত পরিসরে বসতে চান। শেখ হাসিনা এবারও সময় দিলেন। কামাল হোসেন লিখিত সমাধান নিয়ে আসলেন। কি সমাধান? নতুন বোতলে পুরনো মাল। আদালত কর্তৃক বাতিলকৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। শেখ হাসিনা জানতে চান কিভাবে সম্ভব? কামাল হোসেন সহ সবাই নিরুত্তর। তারা সংলাপ থেকে বের হয়ে আসলেন। বললেন রাজপথের আন্দোলনেই দাবি আদায় হবে। মাথা সর্বস্ব দলের নেতাদের আস্ফালন বেশি।

কেননা, সংসদে যেতে হলে বিএনপির সমর্থন ছাড়া সম্ভব না। সুতরাং যতবেশি পারা যায় ম‍্যাডাম বন্দনা কর। ব্রীজোত্তম কাদের সিদ্দিকী তো বলেই ফেলল, খালেদা জিয়া মানেই বাংলাদেশ। মান্না বলে বুকের রক্ত দিয়ে হলেও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। কামাল হোসেন বলেন খালেদা জিয়াকে বেআইনী আটক রাখা হয়েছে। তারা বলে তফসিল ঘোষণা হলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা হবে। এমনকি স্বশরীরে হাজির হয়ে নির্বাচন কমিশনারদের হুমকি ধামকিও দিয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা বারবারই অত‍্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছেন, সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন উৎসবমুখর হবে।

ঐক‍্যফ্রন্টের হুমকির মুখেই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে। সাথে সাথেই পাল্টে যায় চিত্র। তিনদিন না যেতেই সুর নরম করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা আসে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলামের মুখে। পাশেই ছিলেন নতমুখে ছোটদলের বিশাল বিশাল নেতারা।

এই যে মাত্র তিন দিনের মাথায় বোল পাল্টে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা, তা আগামী নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে উৎসবমুখর নির্বাচনে পরিণত করবে। এবং এই কৃতিত্ব এককভাবেই শেখ হাসিনার। তিনি যদি ১৪ সালের নির্বাচন প্রতিহতের বিএনপি-জামাতের স্বশস্ত্র চেষ্টা শক্ত হাতে দমন করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন ও পাঁচটি বছর সরকার পরিচালনা করে তাঁর বিচক্ষণতা, সাহস, সততা ও মানুষের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে না পারতেন তাহলে দেশের মানুষ ও বিশ্ব সম্প্রদায় আস্থা রাখতে পারতো না। শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের আস্থা এবং বলিষ্ঠতর নেতৃত্বের নিকট স্বীকার করতে হয়েছে বলেই সকল দলের অংশগ্রহণে একটি উৎসবমুখর নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। যা বিশ্ব রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আরো অনন‍্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় হয়তো শতভাগ করা সম্ভব নয়, তবে যদি আশিভাগও করা সম্ভব হয় তাহলে দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ অনেকটাই সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে শুধু যে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও সরকারি দলের দায়িত্ব রয়েছে তা কিন্তু নয়। বিরোধী দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

শেষ কথা হলো শেখ হাসিনার তুলনা কেবলই শেখ হাসিনা।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.