আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং
একাদশ সংসদ নির্বাচন আসন্ন। রাজনীতির মেরুকরণ প্রতিনিয়ত ঘটছে। রাজনীতিতে শেষ কথা নেই, এই অপাংক্তেয় কথা দিয়ে আদর্শচ্যুত হচ্ছেন অনেক সেলিব্রেটি ব্যক্তিগন। যদিও ব্যক্তিগতভাবে সবাই স্বাধীন। এই তারকা রাজনীতিবিদ কি বুঝতে পারেন তাদের কিছু দায়বদ্ধতা আছে জনগনের কাছে? জনগন যে তাদের ভালবাসে সেটা কি অনুধাবন করেন?
রাজনীতি নিয়ে লেখার ইচ্ছে নয়। গতকাল থেকে যে খবর ভাইরাল হয়েছে ড. রেজা কিবরিয়াকে, তা নিয়ে কিছু লিখতে হচ্ছে বিবেকের তাড়নায়।
শহীদ শাহ এএমএস কিবরিয়া। আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের সফল অর্থমন্ত্রী। এই মহান গুণী ব্যক্তি আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু বেঁচে আছেন জনগনের হৃদয়ে। হবিগঞ্জের এই কৃতিসন্তান মাত্র পাঁচ বছরে অর্থমন্ত্রী হয়ে অনুন্নত জনপদ জেলার ৮টি উপজেলায় উন্নয়নের বিপ্লব ঘটিয়েছেন। হবিগঞ্জের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে তাঁর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য হবিগঞ্জের মানুষের, নিজের জন্মস্থানেই ২৭ জানুয়ারি ২০০৫ সালে মর্মান্তিক গ্রেনেড হামলায় তাঁকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়। যা আজও হবিগঞ্জ জেলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করে। ন্যায় বিচারের আশায় আছে সবাই।
এএমএস কিবরিয়ার সুযোগ্য পুত্র রেজা কিবরিয়া নির্বাচন করবেন এটা সবারই প্রত্যাশা। ২০০৭ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে। কিন্তু ১/১১ সবকিছু ওলট পালট করে দেয়। রেজা কিবরিয়া চলে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি নিরব থাকেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করবেন। কিন্তু বিধিবাম, তিনি ঘোষনা দিয়েছেন ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করবেন। যারা এএমএস কিবরিয়াকে ভালবাসেন তাদের জন্য বিনামেঘে বজ্রপাতের মত মনে হয়েছে।
২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত সারাদেশে গ্রেনেড বোমায় আক্রান্ত হয়েছে বিরোধীদল (আওয়ামীলীগ)। শেখ হাসিনাও রেহাই পাননি গ্রেনেড হামলা থেকে। এএমএস কিবরিয়া, আইভি রহমানসহ শত শত মানুষ জীবন দিয়েছেন গ্রেনেড হামলায়। আজ বিচার হচ্ছে। কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত বিএনপি শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিগন। আজ তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে রেজা কিবরিয়া নির্বাচন করতে চান। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ড. রেজা কিবরিয়ার এমপি হওয়া কি খুব প্রয়োজন? শাহ এএমএস কিবরিয়া হবিগঞ্জে যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রেখে গেছেন, হবিগঞ্জের ৪টি আসনের যে কোন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও হবিগঞ্জের মানুষ তাকে নিরাশ করবে না।
হবিগঞ্জে কিবরিয়া সাহেবের রক্তের দাগ এখনও শুকায় নাই। যে প্রতীকে লেগে আছে উনার রক্ত, সেই প্রতিক নিয়ে যদি উনার ছেলে নির্বাচন করেন, হয়তো তিনি এমপি হবেন, কিন্তু ইতিহাস থাকে ক্ষমা করবে না, ক্ষমা করবে না হবিগঞ্জবাসী।
আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ রেজা কিবরিয়া সাহেব সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন, এটাই প্রত্যাশা।
লেখক :: কামাল হোসেন খান রিপন