Sylhet View 24 PRINT

এবার মরলে গাছ হবো : ডন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১১-২৯ ১০:০৫:৫৩

আজিজুস সামাদ আজাদ ডন :: বহুল ব্যবহারে প্রায় নষ্ট বাক্য আরেকবার উচ্চারণ করেই ফেলি, ফেসবুক আমার লেখার রাফ খাতা। আমি কাউকে ফলো করিনা, শুধু নিজের পোস্ট দিয়ে যাই। যে কারনে ফেসবুক ঘিড়ে যে ভয়াবহ প্রচারনা চলে সে সম্পর্কে আমি অবগত নই। কিছুদিন আগে কিছু প্রোফাইলে ঢুকে সবকিছু দেখে আমি হতভম্ব। রাজনীতিতে আমার এতো দেনা পাওনা জমে গিয়েছে সেটা আমার জানা ছিল না। আমার ব্যক্তি চরিত্রহননের প্রচেষ্টা, রাজনৈতিক চরিত্রহননের প্রচেষ্টা, আমার পারিবারের উপর অসংলগ্ন ভাষা প্রয়োগ ইত্যাদি অরাজনৈতিক আক্রমণে আমি স্তম্ভিত।

আমার রাজনৈতিক অঙ্গনে পদচারনা শুধুই বাবার মানুষ বলে পরিচিত অথচ যারা মূলত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সৈনিক, যারা এলাকায় রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ণের অবসান চায়, তাদের প্রতি অন্য পক্ষের আক্রোশের যে বহিঃপ্রকাশ আমি দেখেছি, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি সহযোগিতায় সেটার প্রতিকারের চেষ্টা করার জন্য। জননেত্রী শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, ততদিন ওনার সহযোগিতায় ইনশাআল্লাহ তাদের পাশেই থাকবো। জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণের ইচ্ছের কারন একটাই, আমার একটা ধারনা হয়েছিল, হাজারো কর্মী সমর্থকদের কাছে আমার নৌকা নিয়ে নির্বাচন করাটা শুধু তাদের আশা নয়, এটা তাদের অস্তিত্বের জানান দেয়ার বিষয়।

সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক ইতিহাসে এপর্যন্ত মাত্র দুইজন ব্যক্তি হ্যাট্রিক সাংসদ হয়ে নিজেদের নাম সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক ইতিহাসের পাতায় লিখিয়েছেন, একজন আব্দুস সামাদ আজাদ এবং অন্যজন বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। এবারের নির্বাচনে আরও তিনজনের সেই ইতিহাসে ভাগ বসাবার সম্ভবনা আছে। তিনজনের প্রতিই রইলো আমার আন্তরিক শুভকামনা।

কিছুদিন আগে মারা গেলেন আমার খুব ঘনিষ্ঠ এক মানুষ, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সরোওয়ার হুসেন, এয়ার ফোর্স এর মুক্তিযোদ্ধা। আমার খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন, সদালাপী, সদাহাস্যময় মুখখানি তার বারে বারে মনে পরে। মনে কোন দুঃখ নিয়ে চলে গেলেন কিনা সেটা নিজের মুখে তো বলেনই নাই এমনকি তার মৃত্যুর আগে তার চেহারাতেও কোন ছাপ পরেনি কারো প্রতি কোন অভিযোগের। কিন্ত মারা গিয়েছেন অন্তঃ রক্ত ক্ষরণ জনিত কারনে।

আমারও কারো প্রতি কোন অভিযোগ আপাত দৃষ্টিতে না থাকলেও কিছু বিষয়ে কিছু ক্ষোভ তো আছেই। আমার ক্ষোভের বিস্ফারণ দিয়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও, যদি নিজের অন্তরে আঘাতজনিত কারনে অন্তঃ রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়, তখন সেটা বন্ধ করবো কি করে!! অন্তরের রক্ত ক্ষরণ তো আর বন্ধ হবার নয়। কথায় বলে, সময় খারাপ হলে নাকি সাদা কাপড় থেকেও রং ওঠে!

আমার পিতাকে আমি বহু রাজনৈতিক ঝড় ঝঞ্জার মুখোমুখি হতে দেখেছি সাহসের সাথে, কখনো হতাশাগ্রস্থ হতে দেখিনি। তবে খুব বেশী মাত্রায় যখন বিপদ আসতো তখন তাঁকে দেখতাম একটি ঘরে ঢুকে নামাজ, তেলওয়াত আর ভাবনায় ডুবে থাকতেন টানা দুই তিন দিন। আমি ওনার অনেক কিছুই আজকাল অনুসরণের চেষ্টা করি। তবে ওনার মত বিজ্ঞ তো আমি আর নই। তাই অনেক সময় দুই তিন সপ্তাহ বা আরও বেশী সময়ের জন্য আমি নিভৃতচারী হয়ে যাই। ধর্ম-কর্ম ছাড়াও বই পড়ার একটা অভ্যাস যেহেতু আমার আছে, সেটা নিয়ে থাকি। এখন মনে হয় কিছুটা সময় পাবো কিছু সময়ের জন্য নিভৃতচারী হবার। এটা কোন হতাশার কথা নয়, আমি আমার পিতার পথে চলার চেষ্টা করছি মাত্র।
 
সকলে ভাল থাকবেন।

অনুপম রায়ের গানের লাইন শুনিয়ে যাই।
"চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি
হিংসা রঙের সকাল।
মানুষ বুদ্ধি, মানুষ সেরা।
বোকার হদ্দ হলাম
সারাজীবন মানুষ সেজে।
এবার মরলে গাছ হবো আমি......"।

ওহ, একথা তো আমি বলতে পারিনা। আমি তো পরজনমে বিশ্বাসী নই। তাহলে সেই গণসংগীতের দু'টা লাইন দিয়েই শেষ করি।
"আমারই রক্ত ঝরে
দেশে দেশে বন্দরে
শত মরু কন্দরে
গৌরী শিখায়
মিলনের তীর্থের সন্ধানে।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক : রাজনীতিবিদ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৯ নভেম্বর ২০১৮/ প্রেবি/আআ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.