আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

সেই তো নথ খসালি তবে কেন লোক হাসালি!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-২৩ ০১:২৫:৩১

শামসুল ইসলাম শামীম :: দিন মাত্র ‘তিনখান’! এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার; এরই মধ্যে পরিস্থিতির সাথে নিজেদের বেশ মানিয়ে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসগঠনের নেতারা। শুক্রবার যে কারনে ব্যপক সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়েছিলো এই নেতাকর্মীদের, মঙলবার তারা ’নিন্দুক’র মুখে ছাই দিয়ে নিজেকে বেশ পরিপাটি করে গুছিয়ে নিয়েছেন। এজন্য হাস্যরস নয়, সংগঠনের নেতাকর্মীদের আমি সাধুবাদ জানাই। প্রাণের প্রণতিটুকু তাদের সবার কাছে পৌছে দিতে চাই। শিক্ষক যেমন একদিনের হলেও সারাজীবনের জন্য শিক্ষক, নেতাও তেমনি। তাকে কোনভাবেই হেলাফেলা করা ঠিক নয়।

শুক্রবার দুপুরে ওসমানী আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে আমরা যে শুণ্যতায় দেখেছি, আগামীতে আর কোন নেতাকেই কোনদিনও এমন করে দেখতে চাইনা। অতিথি আপ্যায়ণে সিলেটের যেমন রয়েছে দেশজুড়া খ্যাতি তেমনি আছে রাজনৈতিক সম্প্রীতির নিঁখাদ সুনাম। আমরা কোন ভাবেই, কোন কারনেই এই খ্যাতি, এই সুনাম নষ্ঠ হতে দিতে পারিনা।

শুক্রবার আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সিলেট ফিরেছিলেন নিজের কর্মচারীদের হাত ধরে। সেখানে ছিলোনা নেতাকর্মীদের ভিড়, ছিলোনা ঠেলাঠেলি, হড়োহুড়ি, ধাক্ষাধাক্ষি। ছিলোনা শ্লোগান, মিছিলে মিছিলে প্রকম্পতি হয়নি বিমানবন্দর এলাকা। ছিলোনা মুহিত বন্ধনা! মুহিতে সেই চিরচেনা ’কাছের মানুষ’দের টিকিটিও দেখা যায়নি পুরো বিমানবন্দরের কোথাও! ’সাবেক’ হওয়া মানেই কি সব হারিয়ে ফেলা? মুহিত সাহেবের মতো প্রাজ্ঞজনরে এখনো সেই ক্ষমতা আছে, তিনি চাইলে এখনো ক্ষমতার কাছাকাছি যেতে পারেন। কিন্তু এই বয়সে তার আর ভালো লাগছিলো না বলেই নিজেই রাজনীতি থেকে সরে এসেছেন, অবসরের ঘোষণা দিয়ে এসেছেন। তাই বলে তার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি, তিনি অচ্যুৎ হয়ে যাননি। এটুকু বুঝতে আমাদের সময় নিতে হবে কেন!

মঙ্গলবার বিমান যোগে সিলেট ফিরলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। তাকে অবশ্য বিমানবন্দরের খাঁখাঁ শুণ্যতা বিষন্ন পায়ে পাড়িয়ে আসতে হয়নি। কর্মচারীদের হাত ধরে তাকে নিজঘরে ফিরতে হয়নি। তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে ছিলেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা, ছিলেন সাবকে এই মন্ত্রীর নিজ এলাকা বিয়ানীবাজারের তৃণমূল জনপ্রতিনিধিরা। বিমানবন্দরে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় সাবেক এই মন্ত্রীকে। এই অভ্যর্থনা, এই অভিবাদন যেমন সাবেক এই মন্ত্রীকে আগামী দিনের জন্য প্রাণিত-শাণিত করবে, তেমনি অভ্যর্থনাকারীদেরও সম্মাণিত করবে। কেবলই পাওয়ার আশা না করে একবার দিয়েই দেখুন না, নি:স্বার্থ দানে কতোটা আনন্দ!

মন্ত্রীসভার সদস্য নন, তারপরও আজ নাহিদ যে সম্মাণে সম্মানীত হলেন আগামী দিনেও সবাই যেনো সেই সম্মাণে সম্মানীত হন। সম্মাণ পেতে হলে আগে সম্মান দিতে হয়ে; এই অমিয়বাণীটুকু যেনো আমরা ভুলে না যাই।

‘শিক্ষা হোক’, আত্মসমালোচনা হোক কিংবা অনুশোচনাই হোক; যে ক্ষেত্র থেকেই আওয়ামী নেতাদের এই বোধদয় হোক! আমি তাদের এই বোধদয়কে প্রণতি জানাই, শ্রদ্ধা জানাই। আজ অথবা আগামীকাল; নেতা যেদিনেই হোন- তিনি যেনো এই মাটিতে আমাদের সকলের সম্মাণের মধ্যমণি হন।

লেখক: শামসুল ইসলাম শামীম, সিলেট ব্যুরো প্রধান, বাংলাভিশন।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন