Sylhet View 24 PRINT

মন্ত্রী ইমরান সাহেবের অতি কথন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১২-০১ ১৫:০৩:১০

সুজাত মনসুর :: সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, নেত্রী যদি তাঁকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে দেন তাহলে তিনি সিলেটে গ্রুপিং রাজনীতির অবসান ঘটাবেন। তাঁর মতে গ্রুপ থাকবে একটি, তাহলো শেখ হাসিনার গ্রুপ। কথাটি অবশ্যই তাৎপর্যপুর্ন ও আবেগি। তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমান রাজনীতিবিদ। ভালো মানুষ হিসেবে একটা ভাবমূর্তি আছে এবং তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত ও বিশ্বস্ত। বুদ্ধিমান বলেই বাঙালি না হয়েও পঁচাত্তরের পর থেকে গায়ে রাজনীতির কাদা না লাগিয়েও, এবার নিয়ে সম্ভবত পাঁচবার সাংসদ ও প্রথমবারের জন্য
হয়েছেন পূর্ণমন্ত্রী।

তিনি জনগণ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনের ভাষা বুঝতে পারেন বলেই গ্রুপিং বিহীন রাজনীতির কথা বলে নির্বাচনের মতো জেলার রাজনীতিতে বাজিমাত করতে চেয়েছেন ও প্রাথমিকভাবে সফলও হয়েছেন। ইতোমধ্যেই সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থীদের হৃদকম্পন শুরু হয়েছে বলে আমার ধারণা। এবং তাঁকে ঘিরে কিছু মানুষ স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে। বলা যায় না অতি শীঘ্রই তাঁর সমর্থনে ফেইসবুকে ক্যাম্পেইন গঠিত হয়ে যেতে। এই যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের হৃদকম্পন ও কিছু মানুষের স্বপ্ন বোনা তারও মূল কারণ তিনটি। এক/ নেত্রীর বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ, দুই/ অপেক্ষাকৃত ক্লীন ইমেজ এবং তিন/ বহুবিধ গ্রুপিংয়ের কারনে নেতাকর্মীরা অতিষ্ঠ।

গ্রুপিং বিষয়ে তাঁর বক্তব্য অতিকথন বলেই মনে হয়েছে। কেননা, রাজনীতির গ্রামার সম্পর্কে সামান্যতম ধারণা যাদের আছে তাঁদেরকে এটা স্বীকার করতেই হবে রাজনীতিতে গ্রুপিং থাকবেই। গ্রুপিংয়েরও রকমফের আছে। কোন গ্রুপিং যদি সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক হয় তাতে দলের শক্তিবৃদ্ধি হয়, দল লাভবান হয়। আবার অসুস্থ ও হিংসাত্মক প্রতিযোগিতায় সংখ্যাগত দিক থেকে দলকে নাদুসনুদুস মনে হলেও ভেতরে ভেতরে রোগাক্রান্ত হয়ে পরে। বর্তমান গ্রুপিং হলো অসুস্থ ও হিংসাত্মক প্রতিযোগিতা। খুব বেশি অতীতে না গিয়ে যদি বঙ্গবন্ধুর আমলটা দেখি, সেসময়ও কেন্দ্রীয়ভাবে দুটি গ্রুপ সক্রিয় ছিল। তাজউদ্দিন আহমেদ গ্রুপ ও মুশতাক আহমেদ গ্রুপ। এবং এর বিস্তৃতি ছিল গোটা দেশব্যাপী। বৃহত্তর সিলেটও এর বাইরে ছিল না। সিলেটে গ্রুপিং ছিল আব্দুস সামাদ আজাদ ও দেওয়ান ফরিদ গাজী কেন্দ্রিক। আর বঙ্গবন্ধু ছিলেন সবকিছুর উর্ধে। যেমন বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনা সবকিছুর উর্ধে আর বাকিরা ব্যস্ত গ্রুপিং রাজনীতিতে।

গ্রুপিং রাজনীতি অবসানের মতো জনপ্রিয় কথা বলে ইমরান সাহেব হয়তো জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে যেতে পারেন কিন্তু কখনোই গ্রুপিং রাজনীতির অবসান ঘটাতে পারবেন না। কেননা রাজনীতির গ্রামার তা এলাউ করে না। আর রাজনীতির গ্রামার এলাউ করে না বলেই তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার কোথাও গ্রুপিং রাজনীতির অবসান ঘটাতে পারেননি। ইউনিয়ন/ গ্রাম পর্যন্ত গ্রুপিং আছে। যিনি নিজ এলাকায় গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটাতে পারেননি, তিনি কি করে জেলার রাজনীতির গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটাবেন? নেতাকর্মীদের অলীক স্বপ্ন দেখানোও মারাত্মক অপরাধ। তাই ইমরান সাহেবের প্রতি অনুরোধ ক্ষমতার জন্য যা পারবেন না, তা বলে নেতাকর্মীদের ধোঁকা না দিলেই ভালো হয়।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.