Sylhet View 24 PRINT

‘মার্চ ২০২০’ কেমন ছিল একাত্তরের মার্চ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-২৯ ১৭:১০:১৬

সালাম মশরুর :: কেমন ছিল একাত্তরের মার্চ। প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও সাধারণ মানুষের আতংকিত জীবন চিত্র, সেদিন আর আজকের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। 

একাত্তরে গোটা জাতি লড়াই করেছে স্বাধীনতার জন্য। আর আজ লড়াই করছে ভাগ্যের সাথে জীবন বাঁচানোর জন্য। যারা একাত্তর সালের যুদ্ধাবস্থা নিজ চোখে দেখেননি, অর্থাৎ যাদের জন্ম হয়নি বা অবুঝ ছিলেন, তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বুঝে নিতে পারেন।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারনে দেশের  জীবন যাত্রায় সৃষ্ট পরিস্থিতির আদল অনেকটাই একাত্তুরের মতো। একাত্তুরের পর্ব শেষ হয়ে গেছে। যা হারাবার হারিয়েছি। একটি মানচিত্র একটি পতাকা নিয়ে একটি ইতিহাস তৈরী হয়ে গেছে। আজ ২০২০ সালের মার্চ মাসের এমন সময়ে আমরা যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছি, আমরা জানিনা, আমাদের আগামী দিন কতটা সহনীয় হবে। কতটা আমাদের হারাতে হবে।

বড় ধরনের রাষ্ট্রীয় সংকট, সামাজিক সংকট, জাতীয় জীবনে শত বছরেও সৃষ্টি হতে না পারে। আর খুব কম সময়ই দেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে একটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।  জাতীয়ভাবে যখনই কোন সংকটে মানুষ এক সারিতে দাঁড়ায় তখনই পথ চলতে সাহস তৈরী হয়। কতটুকু অর্জন হবে সেটা বড় কথা নয়, মানুষ তখন মনোবলে বলীয়ান হয়। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাতেই সফলতা আসে। বৃহত্তর জনগোষ্টির প্রার্থনাও সৃষ্টিকর্তার করুণা লাভ করতে পারে। দু;সময়ে সঠিক পথ ও সঠিক সিন্ধান্ত নেয়ারও প্রয়োজন রয়েছে।

এই মুহূর্তে আমরা মার্চ মাস অতিবাহিত করছি। ২০২০ সালের মার্চ মাস আমাদের জীবন পঞ্জিতে ভিন্নরূপে অবস্থান করছে। একাত্তরের মার্চ মাসে বাঙালী জাতির জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। ২৫ মার্চ সার্চ লাইট অপরেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে যায় বাঙালীদের হত্যাযজ্ঞ। ১৮ মার্চ সকালে ঢাকা সেনানিবাসের জিওসি কার্যালয়ে বসে জেনারেল রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি অপারেশনের পরিকল্পনা তৈরি করেন। পরিকল্পনাটি জেনারেল ফরমান নিজ হাতে হালকা নীল রঙের একটি অফিস প্যাডের ৫ পাতা জুড়ে লিড পেন্সিল দিয়ে লিখে নেন। জেনারেল ফরমান অপারেশনের সিদ্ধান্ত এবং সাফল্যের শর্ত ইত্যাদির সীমা তৈরি করেন এবং জেনারেল খাদিম সেনাদলের স্থান বিতরণ, বিভিন্ন ব্রিগেড ও ইউনিটের উপর সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন ইত্যাদি কাজ তদারকি করেন। এটা ধারণা করা হয় যে বাঙালি সেনারা অপারেশনের শুরুর সময় বিদ্রোহ করবে, তাই পরিকল্পনাকারীরা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে আলাপকালে বাঙালি সৈন্যদের অপারেশনের পূর্বেই নীরস্ত্র করার এবং বাঙালি রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতারের প্রস্তাব দেন। 'অপারেশনের সব কিছুই নির্ধারিত হল।' - হাতে লিখিত পরিকল্পনাটি ২০ মার্চে আবার জেনারেল হামিদ এবং লে জেনারেল টিক্কা পর্যালোচনা করেন। জেনারেল হামিদ তাৎক্ষনিকভাবে বাঙালি সেনা ইউনিটগুলোকে নীরস্ত্র করার সিদ্ধান্ত নিলেও শুধুমাত্র ই পি আর, আর্মড পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীদের নীরস্ত্র করার অনুমতি দেন। ইয়াহিয়া খান তার সাথে এক বৈঠকের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেফতারের পরিকল্পনাকে প্রত্যখ্যান করেন। পুণঃনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয় এবং বিভিন্ন এলাকার কমান্ডারদের কাছে বিতরন করে দেয়া হয়। অপারেশন শুরু হয় ঢাকায় ২৫ মার্চ রাতের শেষ প্রহরে এবং অন্যান্য গ্যারিসনকে ফোন কলের মাধ্যমে তাদের জিরো আওয়ারে তাদের কার্যক্রম শুরু করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়।  ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা, যা অব্যাহত থাকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ওই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। 

২৭ মার্চ সারা দেশে হরতাল আহ্বান করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে যেমন তাজউদ্দীন আহমদ, কামাল হোসেন ২৫ মার্চ সন্ধ্যারাতে বঙ্গবন্ধুকে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি তাঁদের পরামর্শ  গ্রহণ করেননি। তিনি তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনেই অবস্থান করেন। তাঁর আত্মগোপনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তটি ছিল তাঁর জীবনের উদাহরনসৃষ্টিকারী সিদ্ধান্ত। তিনি যে একজন গণতান্ত্রিক নেতা এবং সাহসের সঙ্গে সাংবিধানিক উপায়েই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চান, তা তাঁর গেফতারের ভেতর দিয়েই প্রমাণিত হয়।

নিজের রাজনীতির ধরণ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর বলেছিলেন: ‘আমি পালিয়ে থাকার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। কারণ, আমি গোপন রাজনীতি পছন্দ করি না, আর বিশ্বাসও করি না।

গ্রেফতার হলেন বঙ্গবন্ধু, অত্যাচার শুরু হলো বাঙালীদের উপর। বঙ্গবন্ধু আগেই বলে দিয়েছিলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম  আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। তিনি বলেছিলেন যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকবিলা করতে হবে। এই সাহসী উচ্চারনের ঢেউ ছাড়া সেদিন বাঙালীদের কাছে আর কিছুই ছিলনা। কোটি কোটি টাকা, গুদাম ভর্তি  অস্ত্র, কামান গোলা, জাহাজ, বিমান কিছুই ছিলনা।  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক নির্দেশেই বাঙালী ঝাপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধে। সেদিন পূর্ব পরিকল্পনার মাধ্যমেই পাকিস্তান শেখ মুজিব তথা বাঙালীদের উপর অক্রমন রচনা করেছিল, কিন্তু বাংলার নিরীহ মানুষ এনিয়ে  এতেটা প্রস্তুত ছিলনা।  শূন্য হাতে সেদিন জাতির কাছে যুদ্ধ জয়ের প্রধান শক্তি ছিল নিজেদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। লড়াই করে স্বাধীনতা আনতে হবে, এই একটি ইস্যুর উপর গোটা জাতি প্রাণ সপে দিয়েছিল। সেদিন মার্চ মাসের মধ্যভাগে দাড়িয়ে জাতি জানতোনা কেমন যুদ্ধ হবে, কতদিন যুদ্ধ হবে, কি দিয়ে যুদ্ধ হবে। ছিল দৃঢ় মনোবল আর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। যুদ্ধ শুরু হলো, পুরো বাংলা অচল। গ্রাম শহর, সর্বত্র একই চিত্র। যারা যুদ্ধে গেলো, তারা চলে গেলো আর যারা দেশে রইলো, তারা এখানে ওখানে মৃত্যুভীতি দুরে ঠেলে সুযোগের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে থাকে। রাস্তাঘাট ফাঁকা, দোকনপাট হাটবাজার, মিল কারখানা বন্ধ। সেদিন এই দু;সময় যুদ্ধ পরিস্থিতির খবর জানারও উপায় ছিলনা তেমন। কোথাও একটি রেডিও থাকলে এটাই এক মাত্র অবলম্বন। কানের কাছে নিয়ে শুনতে হতো, কখন কোথায়, মুক্তিবাহিনী, হানাদারদের উপর আক্রমন করেছে, কোথায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমনে কতজন হানাদার মারা গেছে। কোথায় কেমন যুদ্ধ চলছে। বাইরের দেশগুলো কে কি করছে। রাত দিন একই ভাবে শহর শহরতলী ও গ্রামে লুকিয়ে থাকা বাঙালীদের নির্ঘুম সময় কেটেছে। সেদিন আমরা অসহায় ছিলাম, কিন্তু আমাদের দেশপ্রেম, আমাদের মনোবল, একে অপরের প্রতি ভালোবাসা, সহমর্মীতা, মমত্ববোধ ছিল অসীম অটুট। যা ছিল তাই ভাগাভাগি করে খেয়েছি, কষ্ট দু;খ ভাগাভাগি করে নিয়েছি। দু;সময়ে কেই কাউকে ফেলে যায়নি। মানুষের মানবতাবোধের কঠিন পরীক্ষা উদাহরন হয়ে থাকে।  একাত্তুরের সেই দিন গুলো জ্বল মল করে  চোখে ভাসছে। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেছে।  সেদিন কিশোর ছিলাম, আমি আমার মতো করেই দেখেছি প্রিয় স্বাধীনতার  লাল সূর্যটি কিভাবে পুব আকাশে উঁকি দিয়েছিল। ৭কোটি লোকের সেদিনের বাংলাদেশ।  আর আমার প্রিয় শহর সিলেটের হাতেগোনা লোক।

একাত্তরের ২৫ মার্চ আর ২০২০ সালের ২৫ মাচর্, ৪৯ বছরের ব্যবধান। প্রেক্ষাপট ভিন্ন কিন্তু চিত্র এক।  শহরে শুনশান নিরবতা। ২০২০ সালের ২৭ মার্চ শুক্রবার শহরে একই নিরবতা। পরদিন ২৮ মার্চ একই অবস্থা। ২৯ মার্চ গ্রাম ও শহরতলীতে একই পরিস্থিতি, শুধু শহরের এখানে ওখানে কিছুটা যানবাহন ও ঘর থেকে জরুরী প্রয়োজনে বেরিয়ে আসা কিছু সংখ্যক মানুষের চলফেরা চোখে পড়ে।
 সেদিনের থেকে আজকের যোগযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত। প্রযুক্তির উন্নয়নে পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। সেদিন রেডিওতে কান পেতে শুনেছি পাকবাহিনীবাহিনী কোথায় কিভাবে পরাস্থ হচ্ছে। আর একই ভাবে আজ টেলিভিশন, অনলাইন, ফেসবুক,  মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সার্চ করে প্রতি মুহুর্তে খবর সংগ্রহ চলছে বাংলাদেশে নতুন আক্রান্ত আছে কিনা। কোয়ারেন্টিনে কত জন আছেন। উদ্বেগ, উৎকন্ঠায় সময় যাচ্ছে। বিশ্বের কোন দেশের পরিস্থিতি কি।

২৮ মার্চ, রাস্তায় বেরিয়ে দেখলাম সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। মাইকিং করে তারা জনসাধারনকে অযথা ঘোরফিরা না করে বাসা বাড়ীতে অবস্থান করার পরামর্শ দিচ্ছে।  দূর থেকে সেনবাহিনীর গাড়ী আসতে দেখে আড্ডারত দু-চার যুবক রাস্তা থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে বার বার ফিরে যাচ্ছিলাম আমার সেই কিশোর মনের বাক্স বন্দি উপলব্ধির কাছে। সেদিন এমনি ভাবে রাস্তায় পাক  সেনাবাহিনীর টহল ছিল, কোথাও রাস্তায় মানুষ দেখলে ধরে নিয়ে গেছে নয়তোবা গুলি করেছে। আতংক নিয়ে কোন কারনে পথ চলতে গিয়ে এমনি নানান বিপদে পড়তে হয়েছে মানুষকে। আজ ভিন্ন পরিস্থিতি। আমাদের সেনাবাহিনী জনসেবায় মাঠে নেমেছে। জীবন বাচাতে মানুষকে সাহায্য করছে। কিন্তু সেদিনের সেই চিত্রটি যেন বার বার চোখে ভাসতে থাকে।  যুদ্ধ যুদ্ধ পরিষিÍতি, মানুষের মাঝে আতংক, শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র একই অবস্থা। ৭১ সালের নগরীর চিত্র যারা দেখেননি, তারা ভাবতে পারেন, সেদিনটার চিত্র অনেকটা আজকের মতই ছিল। জানিনা আমরা এই মরনাপন্ন পরিস্থিতি থেকে  কবে পরিত্রান পাবো। গোটা বিশ্ব আজ মরনব্যাধি করনার কাছে অসহায় গেছে। বিশ্বের সেরা শক্তিধর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চীনের প্রধান মন্ত্রীর সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার কথা বলেছেন।

দেশে আজ জীবন যুদ্ধ চলছে। একাত্তর সালে এদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে একবার এক ছায়াতলে দাঁড়িয়েছিল।  অর্জন করেছিল বিজয়। সেটা দিয়েছিলেন মহান আল্লহতায়ালা। আর আজ আবার মানুষ এক হয়েছে, ঘরবন্দী জীবন কাটাচ্ছে। জীবন বাঁচানোর জন্য। মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবন বাচানোর প্রার্থনা করলে নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মানুষকে সাহায্য করবেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন তার কাছে চাইতে লজ্জ্বা কিসের? এই ক্রান্তিকালে একে অন্যের প্রতি সহানুভুতির হাত প্রসারিত করা প্রয়োজন। শুধু নিজের সুবিধা ও জীবন নিয়ে ভাবলে হবেনা। আপনার ঘরে খাবার মজুদ, পাশের ঘরে কেউ উপোস কিনা দেখা প্রয়োজন। আপনার ঘরে প্রচুর খাবার সত্তে¡ও যদি আপনার কাছের কেউ না খেয়ে কষ্ট করে তাহলে আপনি নিজেকে কিভাবে ক্ষমা করবেন। যে খাবার আপনি মজুদ করেছেন, সেটা  পুরোটা আপনি  খেতে পারবেন এরই-বা নিশ্চয়তা কোথায়।

বিপদের দিনে ধৈয্য ধারণ ও সত্যের পথে অবস্থান নিতে হবে। মহামারি করোনা নিয়ে আজ এই সময়ে এক শ্রেনির মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। সত্য মিথ্যা কাহিনী তৈরী করে পোষ্ট দিচ্ছে। ব্রটেনে অবস্থানরত সাংবাদিক তাইছির মাহমুদ তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন “বিদেশীদের দেখলে গুলি করে মেরে ফেলা দরকার, নিজে বাঁচলে বাপের নাম“ বাংলাদেশী কারো একজনের দেয়া এমন একটি পোষ্ট দেখে তিনি দু;খ পেয়েছেন। এমন বক্তব্যে শুধু তিনি কেন গোটা মানবজাতি দু:খ পাবে। মনে রাখতে হবে আমি একা কেউ নই, আরেকজন আছে বলেই আমার বেঁচে থাকার আনন্দ, বেচে থাকার স্বার্থকতা। আসুন এই সময়ে আমরা এক অপরের পাশে দাঁড়াই। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।


লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.