Sylhet View 24 PRINT

ছাতক-দোয়ারায় থামছে না বিএনপি নেতা কর্মীদের কান্না

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-১২-১১ ১৯:১৬:০৬

ছাতক প্রতিনিধি :: ছাতক-দোয়ারা বিএনপি’র কান্না যেন থামছে না। নেতা-কর্মীদের বাঁধভাঙ্গা কান্না দেখে কেঁদে ফেললেন নেতা কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনও। এ কান্নার শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

গত শুক্রবার থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের কান্নার রোল পড়েছে। শুক্রবার বিকেলে বিএনপি’র গুলশানের কার্যালয় থেকে বিএনপি’র প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা হয়। এতে বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি, সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন।

ঐ দিন বিকেল পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকায় তার নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঘোষণার আগ মুহুর্তে তার নাম বাদ দেয়া হয়। কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারা) আসনের প্রার্থী ছিলেন।

এ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে মিজানুর রহমান চৌধুরীকে। এ সংবাদটি ছাতক-দোয়ারায় ছড়িয়ে পড়লে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পৌর শহরে প্রার্থী বদলের দাবীতে তাৎক্ষনিক ঝাড়ু হাতে মিছিল করে যুবদল ও ছাত্রদল। পরবর্তী দিনের কর্মসূচীও ঘোষণা করে তারা। রাতে ছাতক শহরের বাসায় পৌছেন কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। এ সময় উপস্থিত হাজারো নেতা-কর্মীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নেতা-কর্মীদের সামাল দিতে না পেরে তিনি নিজেও কাঁদলেন।

হঠাৎ করে দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তন দেখে সবাই হতবাক। ছাতক-দোয়ারা নয়, সুনামগঞ্জ তথা সিলেট বিভাগের লোকজন হতবাক হয়েছেন। অনেকেই ধারণা করছেন কি ঘটতে যাচ্ছে। কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ছাতক-দোয়ারায় শুধু নয় সুনামগঞ্জ সহ সিলেট বিভাগে বিএনপি’র এই কঠিন সময়ে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। সিলেট বিভাগে বিএনপি’র একজন পরিচিত মুখ তিনি।

সবাই একজন রাজপথ কাপানো পরিশ্রমী নেতা হিসেবে তাকে চিনে। তার বেলায় দলের এমন আচরন সহ্য করতে পারেনি কর্মী- সমর্থক ও শুভাকাঙ্খীরা। এখানে বিএনপি থেকে গণপদত্যাগেরও হুমকি দেয়া হয়।

শনিবার প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে ছাতক-দোয়ারা বিএনপি। দুপুরে খন্ড-খন্ড মিছিলও হয়েছে শহরে। বিকেলে দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি ছাতক জালালিয়া মাদ্রাসার কাছে এসে পৌছালে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন মিছিল করতে বাঁধা দেন। এতে কাজ না হলে রাস্তায় শুয়ে পড়েন তিনি। তার এরূপ কান্ডে হতভম্ব হয়ে যায় মিছিলকারীরা। তারা মিছিল না করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভা করতে যায়। এক পর্যায়ে প্রতিবাদ সভায়ও উপস্থিত হন মিলন।

তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বক্তব্যে বলেন, দলের সিদ্ধান্ত শ্রদ্ধার সাথে মেনে নিলাম। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হবে। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতে তাকে সিলেট নগরীর আল হারামাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’দিন হাসপাতালে ছিলেন। নেতা-কর্মীদের প্রচন্ড ভীড় ও কান্নাকাটির কারণে ডাক্তাররা তাকে বাসায় থেকে বিশ্রাম নেয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়।

সিলেট সিটির মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বেলাল খান, মিজানুর রহমান চৌধুরী সহ শত-শত লোক তাকে হাসপাতালে দেখতে যান। তার অসুস্থতার খবরে আরো ভেঙ্গে পড়েন ছাতক-দোয়ারার বিএনপি, যুবদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবকল দল, কৃষক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

তিনি হাসপাতাল থেকে ফিরলে সিলেট শহরের হাওয়াপাড়া বাসায় গত কয়দিন ধরে চলছে নেতা-কর্মীদের উপচেপড়া ভীড় আর কান্নাকাটি। বাসায় তাকে দেখতে যান ছাতক-দোয়ারাবাজার বিএনপি ছাড়াও সিলেটের আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপা, জামাতের নেতৃবৃন্দ। কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন কে শান্তনা দিচ্ছেন নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার পর্যন্ত এ দৃশ্যই ছিল হাওয়াপাড়ার আর্ক হোমসে।

কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন কে মনোনয়ন বঞ্চিত করায় অনেকেই ফেইজবুক ষ্ট্যাটাসে আফসোস, বিক্ষোভ ও না বলা অনেক কথাই লিখছেন। অনেকেই মন্তব্য করছেন ত্যাগীদের দলে মূল্যায়ন নেই। ছাতক-দোয়ারায় ও ফেইসবুকে এ বিষয়ে ঝড় উঠেছে।

তবে এসব কান্না-কাটি, আলোচনা-সমালোচনার শেষ হবে কখন। এর কি কোন প্রভাব পড়বে কোথাও? এ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন ও জল্পনা কল্পনা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ ডিসেম্বর ২০১৮/এমএ/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.