Sylhet View 24 PRINT

স্কুল ছাত্র শাহীনুরের পরিবারে শোকের মাতম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-২৩ ১১:৩৬:৪৮

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাগলায় সংঘর্ষে নিহত স্কুল ছাত্র শাহীনুরের পরিবারে চলছে শোকের মাতম । আশা আকাঙ্খা আর ভরসার স্থল পরিবারের অন্যতম সদস্যকে হারিয়ে শোকে কাতর মা বেগম। গত দুই দিন ধরে অজরে ঝড়ছে চোখের পানি। শাহীনুরের বয়সী ছেলেদের দেখলেই হাউমাউ করে মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছেন তিনি। দিনে একাধিকবার হুশ হারাচ্ছেন শাহীনুরের মা। খাওয়াদাওয়া ছাড়া রয়েছেন গত দুই দিন ধরে।

মায়ের এমন অবস্থা দেখে শান্ত থাকতে পারছেন না পরিবারের বাকি সদস্যরাও। একে অন্যকে জড়িয়ে চিৎকার দিয়ে মাতম করতে দেখা যায় তাদের। এ দৃশ্য দেখে চোখে জল ধরে রাখতে পারছেন না প্রতিবেশিসহ রায়পুর গ্রামের আবালবৃদ্ধ বনিতারাও। চারদিকেই শুনসান নিরবতা। পরিবারসহ রায়পুর গ্রামের সকলের চোখেমুখে একটাই আকুতি নিহত শাহীনুরের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ৭বছর আগে শাহীনুরের বাবা মারা যান। মানুষের সাহায্য সহযোগিতা , দানের টাকা আর ছোট মুদির দোকানের আয় দিয়ে বিধবা বেগম ৭ সন্তানকে নিয়ে কোনোভাবে দিনাতিপাত করে আসছিলেন। শাহীনুর পরিবারের ভাইবোনদের মধ্যে যষ্ঠ। পাগলা সরকারি হাইস্কুল এন্ড কলেজে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল সে। মা বেগমের স্বপ্ন ছিল শাহীনুরকে পুলিশ বাহিনীতে দেয়ার। ধারদেনা আর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ছেলের পড়াশুনা চালিয়ে আসছিলেন বিধবা মা বেগম। সব আশায় বালি পড়লো। দুই গ্রামের সংঘর্ষে হারাতে হল নিরিহ ছেলেকে। এ কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মা।

 নিহত শাহীনুরের মা বেগম কান্না করে বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে খুব কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের মানুষ করেছি। মানুষের বাড়িতে কাজ করেছি। সাহায্য সহযোগিতা, দান খয়রাত কম পুঁজির দোকানের আয় দিয়ে পরিবারের খরচ চালিয়েছি। ছেলেটার পড়া লেখার খরচ খুব কষ্ট করে চালিয়েছি। আশা ছিল মেট্রিকের পরে ছেলেটা পুলিশ দিবো। আমার সকল স্বপ্ন চিনিয়ে নিল পাষন্ডরা। আমার দুধের বাচ্চা না খেয়ে স্কুলে গেল। আর বাড়িতে ফিরলো লাশ হয়ে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। আর যেনো কোনো মা তাদের সন্তান না হারায়।

উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার দ্পুুরে পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গাড়ি পার্কিং নিয়ে কান্দি গাঁও ও রায়পুর গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সংঘর্ষের কবলে পড়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয় শাহীনুর। এই সময় উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। এই ঘটনায় দুই পক্ষের ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংঘর্ষ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশের নজরদারীর মধ্যে রয়েছে কান্দিগাঁও ও রায়পুর গ্রাম।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সংঘর্ষে জড়িত  সন্দেহে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৩ জুন ২০১৯/এসএনএ/ডিজেএস

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.