Sylhet View 24 PRINT

সুনামগঞ্জে মৌসুম শুরুর আগেই ক্ষেতভরা পাকা তরমুজ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-১৮ ১৬:৫২:৪৪

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের ছাতকের পল্লীতে আগাম জাতের তরমুজ চাষ করে মৌসুমের চার মাস ফলন উঠিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন এক কলেজ ছাত্র। ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের বাগইন গ্রামের হাদিউর রহমান পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৫ বিঘা জমিতে মাচান পদ্ধতি (মালচিং সিস্টেম) চাষ করেছেন ‘সুইস ব্লাক-২’ ও ‘ব্লাক বক্স’ জাতের তরমুজ।
আরো ১০ বিঘা জমিতে দেশীয় পদ্ধতিতে তরমুজের চারা লাগানোর কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছেন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর জমিতে চারা রোপণ করার দুই মাসের মাথায় খাওয়ার উপযোগী তরমুজ বিক্রি করতে শুরু করেছেন তিনি। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সবগুলো তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়ে যাবে। তরমুজ বিক্রি করে ভালো লাভের আশা করছেন তরমুজ চাষী হাদিউর রহমান।

কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি হাদিউরের এই ব্যতিক্রমী চাষাবাদের উদ্যোগ অনুপ্রাণিত করছে এলাকার মানুষকে। তার তরমুজ ক্ষেত দেখতে  প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন তারা।

হাদিউর জানান, তিনি সিলেট এমসি কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের মাস্টার্সের পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামের বাড়িতে কৃষিকাজের সাথে যুক্ত থাকেন। ছোট সময় থেকে কৃষিকাজের নেশা পেয়ে বসে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় বাগাইন গ্রামের বটেরখাল নদীর পূর্বপাড়ে পৈতৃক ৫ বিঘা জমিতে মাচান পদ্ধতিতে (মালচিং সিস্টেম) আগাম তরমুজ চাষের উদ্যোগ নেন। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বিশেষ পদ্ধতিতে জমি তৈরি করে কুষ্টিয়া থেকে বীজ সংগ্রহ করে রোপণ করেন। তার চাষ করা তরমুজ হচ্ছে ‘সুইস ব্লাক-২’ ও ‘ব্লাক বক্স’ জাতের। বিঘাপ্রতি এক হাজার ২০০টি করে গাছ রোপণের পর ৫ বিঘাতে ৬ হাজার চারা গজায়। এই চারাগুলো বাঁশ ও জাল দিয়ে তৈরি নৌকার ছৈয়াকৃতির মাচানের বিস্তার করেত শুরু করে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গাছে দুটি করে তরমুজ রেখে বাকিগুলো কেটে ফেলার পর তার জমিতে ১২ হাজার তরমুজের ফলন হয়। সুমিষ্ট এই তরমুজগুলো এখন খাওয়ার উপযোগী হতে শুরু করেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সবগুলোই বিক্রি করে দিতে পারবেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে ধানক্ষেতের মাঝখানে কয়েক খন্ড জমিতে লাউয়ের ক্ষেতের মতো করে মাচান তৈরি করা। মাচানোর উপরে আকাবাঁকা তরমুজের লতায় ছেয়ে গেছে। মাচানের নিচে ঝুলছে ছোটবড় অসংখ্য তরমুজ। তারমুজগুলোকে কীটপতঙ্গের হাত থেকে বাঁচাতে নেটের ব্যাগের ভেতর ভরে রাখা হয়েছে। ক্ষেতের পরিচর্যা করতে ৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন হাদিউরের তরমুজ ক্ষেতে।

হাদিউর আরো জানান, মৌসুম শুরুর ৪ মাস পূর্বে খাওয়ার উপযোগী হওয়ায় তরমুজের দামও ভাল পাচ্ছেন হাদিউর। বিঘাপ্রতি তার খরচ হয় ৪০ হাজার টাকা। দুই থেকে তিন কেজি ওজনের এক একটি তরমুজ কেজি প্রতি ৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রত্যাশার চেয়েও ভাল লাভের আশা করছেন।

তিনি আরো জানান, আগাম জাতের তরমুজ ক্ষেতের পাশে আরো ১০ বিঘা জমিতে দেশীয় পদ্ধতিতে ‘ক্যামেলিয়া’ ও ‘বিগ ফ্যামেলি’ জাতের তরমুজের চারা রোপণ করেছেন। দুই মাস পর সেখান থেকেও ফলন উঠতে শুরু করবে।

ছাতক উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, হাদিউরের আগাম জাতের তরমুজ ফলানোর ক্ষেত্রে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সবধরণের সহযোগিতা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সুসময় মাত্রায় সার প্রয়োগের পাশাপাশি সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। ফুল থেকে ফল উৎপাদনের জন্য সেক্স ফেনোমেনো ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে ক্ষেতে।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ নভম্বর ২০১৯/এসএনএ/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.