সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১২-১৫ ১৯:২৬:৪০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট বলেছেন, একটি মহল রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে আমি ও আমার পরিবারকে হেয়প্রতিপন্ন করার অসৎ উদ্দেশ্যে আমার প্রয়াত পিতাকে স্বাধীনতার বিরোধী হিসেবে অপপ্রচার করে আসছে। স্বাধীনতার পূর্ব থেকে আমার বাবা ন্যাপের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পরপর ভুল বোঝাবুঝি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারের বিষয়টি জানার পর মুক্তিযোদ্ধারাই আমার বাবাকে থানা হাজত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিলেন।
ঐ মহল আরো অপপ্রচার করে যে, বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর বাবা নাকি মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। আমি তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই মিষ্টি বিতরণ কিংবা স্বাধীনতার বিরোধিতার স্বপক্ষে তারা যদি একটি প্রমাণও দেখাতে পারেন, তবে আমি সারা জীবনের জন্য রাজনীতি ছেড়ে দেব।
মুকুট আরো বলেন, ছাত্র জীবনে আমি ছাত্র ইউনিয়ন করতাম। স্বাধীনতার পর সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস নির্বাচিত হয়েছিলাম। পরবর্তিতে ১৯৮৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করি। আমাদের অবস্থান স্বাধীনতা বিপক্ষে থাকলে সামাদ আজাদের মতো একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আমাকে আওয়ামী লীগে নিয়ে আসতেন না।
রবিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরান হোসেনে সঞ্চালনায় বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজদ, শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, যোগেস্বর দাস প্রমুখ।
সভায় মুকুট আরো বলেন, দলে আসার পর টানা ১৭ বছর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষরে আমাকে সেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তখন কেউ প্রশ্ন তুলেনি। এখন যারা প্রশ্ন তুলছে, তারা আমাকে বির্তকিত করে জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ হাসিল করতে চায়। তাদের সেই আশা পূর্ণ হবে না।
তিনি বলেন, আমি যখন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম তখন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুজ জহুর সভাপতি ছিলেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার সম্পর্কে জানেন। যেকারণে আমাকে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকে এখন পর্যন্ত প্রগতিশীল আন্দোলনের রাজনীতি করে আসছি। কাজেই ফায়দা হাসিলের জন্য আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কালিমা লেপার অপচেষ্টাকারীরা ব্যর্থ হবেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মুকুট বলেন, এই জেলায় জন্ম নেয়া অনেকে আজ দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সুনামগঞ্জের সু-সন্তান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম মান্নান উন্নয়নের মাধ্যমে জেলার দৃশ্যপট পরিবর্তন করে যাচ্ছেন। তার প্রচেষ্টায় জেলায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হচ্ছে। উড়াল সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করে প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলকে সড়ক যোগাযোগের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। জেলা সদরের সাথে রেল সংযোগ স্থাপানের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। সজ্জন ব্যক্তি মান্নানের মতো হতে তোমাদেরও স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজেকে তৈরি করতে হবে।
এ সময় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১'শ শিক্ষার্থীকে ৩ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ ডিসেম্বর ২০১৯/শহীদ/জুনেদ