Sylhet View 24 PRINT

গোয়াইনঘাটে খুন হওয়া রাসেল মিয়ার দাফন সম্পন্ন, ৪ আসামী রিমান্ডে

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১০-১৮ ১৭:২৮:১৮

তাহিরপুর প্রতিনিধি :: সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং এলাকায় খুন হওয়া শ্রমিক রাসেল মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার রাত ১১টার দিকে তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বেতাগড়া জামে মসসিজদের প্রাঙ্গনে জানাযা নাযের শেষে মনতলা কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ধান ক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়না তদন্ত করান। ময়না তদন্ত শেষে শনিবার সন্ধায় রাসেল মিয়ার লাশ নিহতর পিতার কাছে হস্তান্তর করেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।

শনিবার রাত ১০টার দিকে এ্যাম্ভুলেন্স যোগে লাশ নিয়ে নিহতর বাড়িতে আসলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য সৃষ্টি হয়। নিহতর মা বাবা লাশ দেখে বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং ভাই বোন,আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে রাসেল মিয়া সহ ১০ জন শ্রমিক বালু কাজের জন্য গোয়নাইঘাট থানার জাফলং এ যায়। বুধবার রাতে রাসেল নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের দুইদিন পর শুক্রবার সকালে গোয়াইনঘাট থানার জাফলং এলাকা থেকে রাসেল মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শ্রমিক রাসেল মিয়া সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বেতাগড়া গ্রামের সবুর মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ৫ জনকে গ্রেফতার করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের তরং গ্রামের মৃত শানুর মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), আব্দুস ছালামের ছেলে নজির হোসেন (২৮), মৃত জামাল মিয়ার ছেলে শাহিদুল ইসলাম (২৬) এবং একই ইউনিয়নের বেতাগড়া গ্রামের আব্দুল কালামের ছেলে ইব্রাহিম মিয়া (৩০), মো. রইচ উদ্দিনের ছেলে সুলেমান মিয়া (৩৫)। এ ঘটনায় নিহতর পিতা গ্রেফতারকৃত ৫জনকে আসামী করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

এইদিকে শনিবার সিলেটের একটি আদালতে রাসেল মিয়ার হত্যার দায় স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর জবানবন্দি দিয়েছে মেহেদি হাসান নামের এক আসামী। সে আদালতকে জানিয়েছে, সহকর্মী রাসেল মিয়াকে (২০) খুন ও লাশ গুমের পর নিখোঁজের খবর প্রচার করে তারাই।

জবানবন্দিতে সে আরো জানায়, গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য পাওনা ৫শ\' টাকা চেয়েছিল রাসেল মিয়া। এছাড়া অন্য সহকর্মীদের সাথেও প্রায় ৩ হাজার টাকার লেনদেন ছিল তার। এসব নিয়ে তার সঙ্গে মনোমলিন্য তৈরি হলে সহকর্মীদের নিয়ে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে রাসেলকে হত্যা করা হয়। এরপর খুন ও লাশ গুমের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাসেল মিয়ার সহকর্মী সুলেমান মিয়া নিখোঁজের বিষয়টি ফেসবুক প্রচার করে এবং নিহতর পিতাকে জানায় রাসেল মিয়া দুইদিন ধরে নিখোঁজ। পরে গালে ও গলায় আঁচড় দেখে এবং আচরণে সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্য মতে গ্রেফতার করা হয় আরো ৪ জনকে।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) সিলেটের আমল গ্রহণকারী আদালতের বিচারক হারুনুর রশীদ এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং একই মামলায় আরো চার আসামির ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডের আসামিরা হলো, ইব্রাহিম মিয়া, সুলেমান মিয়া, নজির হোসেন এবং শাহিদুল ইসলাম।

গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, শ্রমিক রাসেল মিয়ার খুনের দায় আসামি মেহেদি হাসান জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে। আসামীদের ফোনেই নিহতর বাবা সবুর মিয়া নিখোঁজের দুইদিন পর গোয়াইনঘাট থানায় এসে একটি নিখোঁজ জিডি করেন। আর এর সূত্র ধরেই এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয় এবং লাশ উদ্ধার করা হয় ।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ অক্টোবর ২০২০/এমএআর/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.