Sylhet View 24 PRINT

ছাতকে ভাবির সাথে দেবরের পরকিয়া, ভাতিজা খুন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৫-২৯ ১১:০৩:০২

ছাতক প্রতিনিধি:: অর্ধগলিত অবস্থায় ছাতকের দক্ষিণ বাগবাড়ী-লেবারপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা শিশু সাব্বির আহমদের (১৫) মূল হত্যাকারী অলিল মিয়া অলিকে (৩৫)। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় সিলেটের শাহপরান থানাধীন তেররতন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন ছাতক থানা পুলিশ। এরপর শুক্রবার তাকে আদালতে তুলা হলে গ্রেফতারকৃত অলি আদালতে দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

রিকশাচালক অলিল মিয়া অলি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার রবিরবাজার এলাকার মৃত বাদল মিয়ার পুত্র।

এরআগে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছাতকের লেবারপাড়া এলাকার বাসিন্দা তাজুল মিয়া খছরু (৫৫) এবং তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়। তাজুল ইসলাম খছরু দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর গ্রামের মৃত রশিদ আলীর পুত্র। তারা সকালেই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাব্বির আহমদের মা রাবিয়া খাতুনের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল তার দেবর অলিল মিয়া অলির। পরকীয়ার বিষয়টি ধরা পরলে সাব্বিরের বাবা বাবুল মিয়ার সাথে রাবিয়া খাতুনের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরে রাবিয়া খাতুন প্রেমিক অলিল মিয়াকে বিয়ে না করে সাব্বিরকে সাথে নিয়েই জুড়ি এলাকার আয়নুল হক মস্তান নামের অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করে। রাবিয়া খাতুনকে না পেয়ে আক্রোশে প্রতিশোধের নেশায় বিভোর হয়ে পড়ে অলিল মিয়া অলি। এক পর্যায়ে তার সন্তান সাব্বির আহমদকে হত্যা করে এর চরম প্রতিশোধ নেয় সে।

গত (২৮ ফেব্রুয়ারী) অলিল মিয়া অলি কৌশলে সৎ পিতার ঘর থেকে সাব্বির আহমদকে অপহরন করে ছাতক শহরের লেবারপাড়া এলাকার বাসিন্দা তার পরিচিত তাজুল ইসলাম খছরুর বাসায় নিয়ে আসে। এখানে চাচা অলিল মিয়া অলির সাথে একদিন অবস্থান করে সাব্বির আহমদ। তখনও শিশু সাব্বির বুঝতে পারেনি যে তাকে হত্যা করার জন্য এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। গত ১ মার্চ একই কক্ষে চাচার সাথে ঘুমিয়ে পড়ে সাব্বির। মধ্য রাতে যখন গভীর নিদ্রায় সাব্বির চাচার পাশে ঘুমাচ্ছিল। ওই সময়টাকেই খুনের জন্য উত্তম মনে করেই খুনী অলিল মিয়া অলি ঘুমন্ত সাব্বিরকে গলায় গামছা বেঁধে চেপে ধরে। শ্বাসরুদ্ধ করে রাখার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তার দেহটি প্রানহীন হয়ে পড়ে। চিরনিদ্রায় শায়িত হয় সাব্বির।

এরপর অলি তার সহযোগীদের নিয়ে এ লাশ কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে রেখে কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাতের আধারে পালিয়ে যায়। ওই কক্ষে সাব্বিরের লাশ তালাবব্ধ অবস্থায় থাকায় কক্ষ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। তখন ধরা পড়ার আশংকায় গত ৩ মার্চ তাজুল মিয়া খছরু ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম সহ সহযোগীরা রাসায়নিক তরল ব্যবহার করে লাশ ঝলসে দিয়ে বিকৃত অবস্থায় লাশ বসত ঘর সংলগ্ন কচু ক্ষেতে লুকিয়ে রাখে। কিন্তু লাশের পচা দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়লে অবশেষে গত ৪ মার্চ ভোরে অর্ধগলিত লাশ লেবারপাড়া এলাকার একটি জমিতে ফেলে দিয়ে আসে তারা। পরে ওই জমি থেকে অজ্ঞাতনামা অবস্থায় সাব্বির আহমেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছাতক থানার এসআই মাসুদ রানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৬) দায়ের করেন।

ছাতক থানার সেকেন্ড অফিসার হাবিবুর রহমান পিপিএমকে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করতে দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব নেয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ক্লুলেস মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাজিম উদ্দিন জানান, এটি একটি নির্মম হতক্যাকান্ড। আটক আসামীদের জেলহাজতে পাঠানা হয়েছে।


সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/মাহবুব/পিটি-৫





















সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.